এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > জ্যোতিপ্রিয় ক্ষেপলে বিপদ, বালুকে মন্ত্রী রাখবেন মমতাই? শুভেন্দুর কথায় ভয়াবহ ইঙ্গিত!

জ্যোতিপ্রিয় ক্ষেপলে বিপদ, বালুকে মন্ত্রী রাখবেন মমতাই? শুভেন্দুর কথায় ভয়াবহ ইঙ্গিত!


প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-রেশন বন্টন দুর্নীতি মামলায় জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক গ্রেপ্তার হওয়ার পর তার হাতে থাকা বন দপ্তর কি হবে, তা নিয়ে নানা মহলে উঠছে প্রশ্ন। অনেকে বলছেন, দ্রুত এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। তবে এসবের মাঝেই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা যে কথা বললেন, তা চমকে দেওয়ার মত। অনেকেই হয়তো চিৎকার চেঁচামেচি করছেন যে, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে মন্ত্রী থেকে সরিয়ে দেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী সেই পথে হাঁটবেন না। শুভেন্দুবাবু তা স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিলেন। কিন্তু কেন বিরোধী দলনেতা এ কথা বলছেন? পর্যবেক্ষকদের মতে, শুভেন্দু অধিকারী খুব ভালো মতো জানেন, তৃণমূলে কারা কারা দুর্নীতি করেছে! কাদের কাছে এই রেশন দুর্নীতির টাকা পৌঁছেছে! তাই জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক যদি ইডি হেফাজতে থাকার সময় কোনো বড় তথ্য ফাঁস করে দেন, তাহলে আখেরে বিপদ বাড়বে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এবং তার গোটা দলের। তাই জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে না ক্ষেপিয়ে তাকে মন্ত্রী রেখে দিতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্যের রেশ ধরে তেমনটাই বলছেন একাংশ।

প্রসঙ্গত, এদিন মন্ত্রিসভার বৈঠকে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে নিয়ে সিদ্ধান্ত হতে পারে, এমন একটি প্রশ্ন শুভেন্দুবাবুকে করা হয়। আর সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা বলেন, “না, না। অনুব্রত মণ্ডলকে যেমন বীরভূমের দায়িত্বে রেখে দেওয়া হয়েছে, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককেও তেমন মন্ত্রী রেখে দেওয়া হবে।” তবে পার্থ চট্টোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রীর এত ঘনিষ্ঠ হওয়ার পরেও তিনি জেলে যাওয়ার পর তো তাকে মন্ত্রী তো বটেই, এমনকি দলের পদ থেকেও সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের ক্ষেত্রে যদি সেই রকম কোনো পদক্ষেপ মুখ্যমন্ত্রী না নেন, তাহলে তো তৃণমূল দলের দ্বিচারিতা নিয়ে পার্থবাবুর মনেও প্রশ্ন উঠবে। অনেকে বলছেন, রেশনে যে দুর্নীতি হয়েছে, তাতে জ্যোতিপ্রিয়বাবু হয়ত সেই টাকার ভাগ অনেককে দিয়েছেন। তাই তাকে যদি মন্ত্রী থেকে সরিয়ে দেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, তাহলে অনেক বড় পর্দা ফাঁস হয়ে যাবে, তাই এখনই মন্ত্রিসভার রদবদল করা বা বনদপ্তর নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার মত সাহস নেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বলেই মত বিশেষজ্ঞদের।

বিজেপির দাবি, বালু সবাইকে টাকার ভাগ দেবে, আর তিনি একা জেলে থাকবেন, এটা তিনি মানতে পারছেন না। সেই কারণে আজকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম নিতেই তিনি এক অন্যরকম কথা বলেছেন। যা নিয়ে এমনিতেই তৃণমূল ভয়ে রয়েছে। তাই মুখ্যমন্ত্রীর অত বড় সাহস নেই, এখনই জ্যোতগপ্রিয় মল্লিককে মন্ত্রী থেকে সরিয়ে দেওয়ার। সেক্ষেত্রে শুভেন্দু অধিকারী ঠিক কথাই বলেছেন। আসলে নিজেদের মধ্যে আন্ডারস্ট্যান্ডিং রেখে টাকার ভাগ যারা নিয়েছেন, তাদের মনে এখন ভয় শুরু হয়েছে। তাই বালুবাবুকে অন্তত ক্ষ্যাপানো যাবে না। তাকে যদি মন্ত্রী থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়, তাহলে তিনিও অনেক বড় কিছু করে ফেলতে পারেন। আর তাতে ঠগ বাজতে গা উজার হয়ে যাবে। তাই সবদিক বজায় রেখে বনদপ্তর নিয়ে এখনই কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার মত সৎ সাহস অন্তত মুখ্যমন্ত্রীর নেই বলেই কটাক্ষ গেরুয়া শিবিরের।

পর্যবেক্ষকদের মতে, অনুব্রত মণ্ডল দীর্ঘদিন ধরে জেলে রয়েছেন। কিন্তু তার বিরুদ্ধে তাকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার মতো কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা হয়নি মুখ্যমন্ত্রীর। কারন তিনি জানেন যে, অনুব্রত মণ্ডলকে সরিয়ে দিলে তার বিপদ হতে পারে, তার দলের বিপদ হতে পারে। তিনি জেল থেকেই এমন কোনো তথ্য ফাঁস করে দিতে পারেন, যাতে তৃণমূল চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের ক্ষেত্রেও হয়ত সেই ভয় মুখ্যমন্ত্রীর রয়েছে। আর এটা শুভেন্দু অধিকারী খুব ভালো মত জানেন। যার কারণেই তিনি নির্দ্বিধায় বলে দিলেন যে, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে অন্তত মন্ত্রিসভা থেকে সরানো হবে না। কিন্তু কিসের এত বালুপ্রীতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের? যদি শুভেন্দুবাবুর দাবিকে সত্যি করে বনদপ্তর নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় না নিতে পারেন, তাহলে তার নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন উঠবে। দলের মধ্যেই একটা বিষয় মাথাচাড়া দেবে যে, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ক্ষেত্রে এক নিয়ম, আর অনুব্রত মণ্ডল, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের ক্ষেত্রে আর এক নিয়ম কেন? দলের মধ্যেই তৈরি হওয়া সেই প্রশ্নের জবাব দেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে সততার প্রতীকের মুখোশ পড়া রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে। শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্যের পর তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!