কাঁচরাপাড়া পৌরসভা নিয়ে মুখ খুললেন মুকুল পুত্র, চাইলেন ক্ষমা,জেনে নিন কলকাতা নদীয়া-২৪ পরগনা রাজ্য July 10, 2019 লোকসভা ভোটে এবার রাজ্যে বিজেপির অভূতপূর্ব শক্তি বৃদ্ধি ঘটেছে। আর গেরুয়া শিবির বাংলায় শক্তিশালী হওয়ার পরেই উত্তর 24 পরগনার একাধিক পৌরসভার কাউন্সিলরদের তৃণমূল থেকে এনে বিজেপিতে যোগদান করান ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহ এবং বিজেপির হেভিওয়েট নেতা মুকুল রায়। একদা তৃণমূলের শক্তিশালী সংগঠন থাকা এই জেলায় কাঁচরাপাড়া, হালিশহরের মত পুরসভাগুলিতে গেরুয়া রঙের ছোঁয়া লাগে। যাতে কিছুটা হলেও মুষড়ে পড়ে শাসক দল। আর এই পরিস্থিতিতে গেরুয়া শিবিরের পক্ষে বেশ ভালই চলছিল সব কিছু। কিন্তু গতকাল থেকেই তাল কাটতে শুরু করে। হালিশহর পৌরসভার তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগদান করা কাউন্সিলররা ফের তৃণমূলে ফিরে আসলে প্রবল চাপে পড়ে গেরুয়া শিবির। যার ফলে হালিশহরের পৌরপ্রধানকে বিজেপিকে আনা ভুল ছিল বলে মন্তব্য করতে দেখা যায় বিজেপি নেতা মুকুল রায়কে। অর্জুন সিংহের সুরে সুর মিলিয়ে এই বিজেপি নেতা বলেন, “অর্জুন আমাকে বলেছিল যে ও বিশ্বস্ত নয়। কিন্তু চেয়ারম্যান আমাকে এমনভাবে এসে বলেছিল, আসলে বয়স হয়েছে তো। তাই এখন কেউ কিছু বললেই বিশ্বাস করে ফেলি।” আর বাবা মুকুল রায়ের হালিশহর পৌরসভা নিয়ে এহেন খেদ প্রকাশের পরই এবার সেই একই পথে হাঁটতে দেখা গেল তারই ছেলে তথা বীজপুরের বিজেপি বিধায়ক শুভ্রাংশু রায়কে। বস্তুত, গতকাল হালিশহরের পর আজ কাঁচড়াপারা পৌরসভাও বিজেপির হাত থেকে তৃণমূলের দখলে চলে আসার খবর পাওয়া যায়। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - জানা যায়, 24 আসন বিশিষ্ট এই কাঁচরাপাড়া পৌরসভায় 22 টিতে তৃণমূল, একটিতে সিপিএম এবং একটিতে নির্দল কাউন্সিলর জয়লাভ করেছিলেন। কিন্তু লোকসভা ভোটের ফলাফল প্রকাশের পর সেই 22 জন তৃণমূল সদস্যের মধ্যে প্রায় 17 জন তৃণমূল কাউন্সিলর দিল্লিতে গিয়ে শুভ্রাংশু রায়ের সাথে বিজেপিতে যোগদান করেন। আর এরপরই এই কাঁচরাপাড়া পৌরসভা গেরুয়া শিবিরের দখলে চলে আসে। কিন্তু গতকাল হালিশহরের পর আজ এই কাঁচরাপাড়া পৌরসভার বিজেপিতে যোগ দেওয়ার 17 জনের মধ্যে 12 জন কাউন্সিলর ফের তৃণমূলে ফিরে আসছেন বলে দাবি করে শাসক দল। আর এতেই ঘোরালো হয়ে ওঠে পরিস্থিতি।অনেকে বলতে শুরু করেন, সাময়িকভাবে তৃণমূল কাউন্সিলরদের বিজেপিতে নিয়ে গেলেও বিজেপি স্থায়ীভাবে এই পৌরসভাগুলো নিজেদের দখলে রাখতে পারল না। আর এই ঘটনা নিয়ে যখন রাজ্য রাজনীতি তোলপাড় হতে শুরু করেছে, ঠিক তখনই বাবা মুকুল রায়ের পথে হেঁটেই ভুল হয়েছে বলে স্বীকার করে নিতে দেখা গেল সেই মুকুল পুত্র বীজপুরের বিজেপি বিধায়ক শুভ্রাংশু রায়কে। সূত্রের খবর, এদিন কাঁচরাপাড়া পৌরসভার এই ঘটনা নিয়ে শুভ্রাংশু রায় বলেন, “আসলে অর্জুনদা বারণ করেছিল, আমি শুনিনি। যাকগে। পৌরসভা ভোট আর কয়েক মাস পরে। মানুষ সব দেখছে। মানুষ যাদের বিরুদ্ধে ভোট করেছে, আজ তারা পাল্টি খাচ্ছেন। যারা গিয়েছেন সেই 5 জন যোগাযোগ রাখছেন। আমরা সার্কাস দেখছি। আমি সব কল লিস্ট দেখাতে পারি।” আর বাবার পর ছেলের মুখেও “অর্জুন সিংহ বারন করা সত্বেও তারা ভুল করেছেন” বলে স্বীকার করে নেওয়ায় রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে চাঞ্চল্য। বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, লোকসভা ভোটের পর যেভাবে একের পর এক পৌরসভা নিজেদের দখলে এনে তৃণমূলকে শায়েস্তা করার পথে হেঁটেছিলেন বিজেপি নেতা মুকুল রায়, তাতে সময়ের প্রত্যাবর্তনে সেই বিজেপির দখল করা পৌরসভার কাউন্সিলররা তৃণমূলে যেতে শুরু করেছে। আর এতেই তৃণমূলের কাছে রীতিমতো নাক কাটা যাওয়ার যোগাড় বিজেপি নেতা মুকুল রায় ও গেরুয়া শিবিরের। ফলে সেদিক থেকে মুকুলবাবু এবং তার পুত্র দলেরই হেভিওয়েট সাংসদের বারন থাকা সত্ত্বেও তারা এই সমস্ত কাউন্সিলরদের কাউকে কাউকে নিয়ে ভুল করেছেন বলে জানিয়ে দিলেন। যা রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকেরা। আপনার মতামত জানান -