প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে তৃণমূল ও বিজেপির লড়াই যে ক্রমেই জমে উঠছে সে ব্যাপারে একমত বিশেষজ্ঞরা। দীর্ঘদিন ধরেই তৃণমূলকে চাপে ফেলার জন্য বিজেপি শিবির কোমর বেঁধে নবান্ন অভিযানের তৈয়ারী করছিল। কিন্তু বিজেপির সেই অভিযান শুরু হওয়ার আগেই প্রশ্নের মুখে পড়ল। কারণ বিজেপি আগামীকাল সকালের নবান্ন অভিযানের পরিকল্পনা যখন আরেকবার ঝালিয়ে নিচ্ছে, ঠিক তখন অর্থাৎ তার আগের দিন বিকেলবেলা নবান্ন থেকে ঘোষণা করা হলো স্যানিটাইজেশন এর জন্য আগামী দুদিন অর্থাৎ বৃহস্পতি এবং শুক্রবার নবান্ন বন্ধ থাকবে।

ইতিমধ্যে রাজনৈতিক মহলে অনেকাংশেই মনে করছেন, বিজেপির নবান্ন অভিযান ব্যর্থ করতেই রাজ্য প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত। অন্যদিকে গেরুয়া শিবির থেকেও রাজ্য প্রশাসনকে পাল্টা কটাক্ষ করা হয়েছে। এদিন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ দাবি করেন, আগামী বছর নবান্ন বন্ধ হয়ে যাবে। তার আগেই মুখ্যমন্ত্রী পালিয়ে গেলেন। প্রসঙ্গত, করোনা পরিস্থিতিতে নিয়মিত নবান্ন স্যানিটাইজেশন করা হয়। প্রতি সপ্তাহের শনিবার রুটিনমাফিক জীবাণুমুক্ত করা হয় নবান্ন এবং রাইটার্স।

কিন্তু বুধবার বিকেলে জানানো হয়, চলতি সপ্তাহে বৃহস্পতিবার এবং শুক্রবার নবান্ন জীবাণুমুক্ত করা হবে। তাই এই দুদিন নবান্ন বন্ধ থাকবে। এমনকি কোন কর্মীরাও উপস্থিত থাকবেন না বলে জানা গেছে। অন্যদিকে বৃহস্পতিবার সকাল এগারোটা থেকে নবান্ন অভিযানের সূচনা হওয়ার কথা। বিজেপির পক্ষ থেকে এই মিছিল বিজেপি রাজ্য দপ্তর থেকে দিলীপ ঘোষের নেতৃত্বে যেমন শুরু হবে, তেমনি কৈলাস বিজয়বর্গীয়, মুকুল রায়ের নেতৃত্বে হেস্টিংস ফ্লাইওভারের নিচ থেকে শুরু হবে।

আর একটি মিছিলের নেতৃত্বে থাকবেন যুব মোর্চার সর্বভারতীয় সভাপতি তেজস্বী সূর্য যেটি হাওড়া ময়দান থেকে শুরু হবে এবং অন্য আরেকটি মিছিল যেটি সাঁতরাগাছি থেকে শুরু হবে, তার নেতৃত্বে থাকবেন রাজ্য বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসু। তবে সমস্ত মিছিলের অভিমুখ যে নবান্নের দিকে থাকবে তা এতদিনে বিজেপির পক্ষ থেকে বারেবারে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। মূলত রাজ্য প্রশাসনের ওপর চাপ বাড়াতে বিজেপির এই মিছিল। প্রশাসনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রতিবাদ জানাতে এই মিছিলের সূত্রপাত বলে দাবি করেছে গেরুয়া শিবির।

তবে মহলে প্রশ্ন উঠেছে, বিজেপির নবান্ন অভিযান শুরুর আগেই কি বিজেপিকে মাত দিলেন তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? নবান্ন অভিযান সফল করতে ইতিমধ্যেই গেরুয়া শিবির বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে এই মিছিলে উপস্থিত হওয়ার জন্য কর্মীরা গাড়ি ভাড়া করে আসবেন বলে জানা গেছে। কিন্তু নবান্ন যদি বন্ধই থাকে, তাহলে কোথায় গিয়ে বিজেপি মিছিল প্রতিবাদ করবে? এই রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে তীব্র গুঞ্জন। আপাতত দেখার বিজেপির এই মিছিল নবান্ন বন্ধ থাকলেও সফল হয় কিনা!