এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > লকেটেই আস্থা হুগলীর, খেলা বড়ই কঠিন! বিধানসভায় গোপন বৈঠক রচনার!

লকেটেই আস্থা হুগলীর, খেলা বড়ই কঠিন! বিধানসভায় গোপন বৈঠক রচনার!


প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখনই বুঝতে পারেন যে, মানুষ আর তার পাশে নেই, তখনই তিনি ভোটে জেতার জন্য সেই নির্দিষ্ট কেন্দ্রগুলিতে চমক দেওয়ার চেষ্টা করেন। এমন কাউকে পার্থী করেন, যারা সেলিব্রিটি বলে পরিচিত। হুগলি লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলকে বারবার বেগ দিয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি। এখানকার সাংসদ হিসেবে লকেট চট্টোপাধ্যায় তৃণমূলের চোখে চোখ রেখে লড়াই করে বুঝিয়ে দিয়েছেন যে, এই রাজ্যের শাসক দলকে এক ফোটাও জায়গা ছাড়া হবে না। তাই এবার সেই লকেট চট্টোপাধ্যায়কে চাপে ফেলতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই হুগলিতে প্রার্থী হিসেবে বিশিষ্ট অভিনেত্রী রচনা ব্যানার্জীর নাম ঘোষণা করেছেন। তৃণমূল কর্মীরা এতে যথেষ্ট উজ্জীবিত। তবে প্রার্থী হিসেবে তার নাম ঘোষণা হওয়ার পর যত সময় যাচ্ছে, ততই রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় কিন্তু বুঝতে শুরু করেছেন যে, খেলা বড়ই কঠিন। তাই বিন্দুমাত্র সময় নষ্ট না করে আজ একেবারে বিধানসভায় গিয়ে তিনি যে লোকসভায় প্রার্থী হয়েছেন, তার অন্তর্গত সমস্ত বিধানসভার বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠক করতে দেখা গেল রচনা ব্যানার্জিকে। আর তার ফলেই একাংশ বলছেন যে, সেলিব্রিটি মুখ দিয়ে আর এবার জিততে পারবেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

প্রসঙ্গত, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিদি নম্বর ওয়ানের শোতে যাওয়ার পর থেকেই একটা জল্পনা তৈরি হয়েছিল যে, রচনা ব্যানার্জিকে এবার তৃণমূল প্রার্থী করতে পারে। অবশেষে তাতেই সীলমোহর করেছে। তৃণমূলের ব্রিগেড সমাবেশ থেকে হুগলি লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী হিসেবে বিশিষ্ট অভিনেত্রী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম ঘোষণা করা হয়। এমনকি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে রাম্প শো করেছিলেন, সেখানে তারপরেই ছিলেন রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্বাভাবিক ভাবেই তৃণমূল কংগ্রেস এবং তাদের শীর্ষ নেতৃত্ব যে রচনা ব্যানার্জিকে নিয়ে যথেষ্ট সিরিয়াস এবং তার জয়ের ব্যাপারে যে প্রবল গুরুত্ব দিচ্ছে, তা বোঝাই যাচ্ছে। কেননা লকেট চট্টোপাধ্যায় এই তৃণমূলকে যেভাবে চাপে রেখেছেন, তাতে তৃণমূল তাকে আর সহ্য করতে পারছে না। তবে প্রার্থী হিসেবে তার নাম ঘোষণা হওয়ার পর রচনা ব্যানার্জি খুব ভালোমতোই বুঝছেন যে এবার খুব কঠিন খেলা হতে চলেছে। কোনোভাবেই তৃণমূলের এখানে অত সহজে জয়লাভ করা সম্ভব হবে না। তাই আজ বিধানসভায় গিয়ে সমস্ত বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠক করে কি করে জেতা যায়, কিভাবে মিটিং মিছিল করা যায়, কিভাবে মানুষের কাছে পৌঁছানো যায়, সেই বিষয়েই হয়ত আলোচনা করেছেন রচনা ব্যানার্জি। তবে এটা নির্বাচনের একটি পার্ট বলাই যায়। এটা নিয়ে কারওর কিছু বলার নেই। কিন্তু রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই তৎপরতা থেকে বোঝাই যাচ্ছে যে, হুগলি লোকসভা কেন্দ্রে জেতার জন্য এবং বিজেপিকে পরাজিত করার জন্য কতটা তৎপর তৃণমূল নেতৃত্ব।

পর্যবেক্ষকদের মতে, হুগলি লোকসভা কেন্দ্রে লকেট চট্টোপাধ্যায়কে পরাস্ত করা এবার তৃণমূলের কাছে বড় টার্গেট। কিন্তু যত বড়ই সেলিব্রিটি মুখ আসুক না কেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি ভাবেন যে, রচনা ব্যানার্জিকে দিয়ে লকেট চ্যাটার্জি দিয়ে পরাস্ত করবেন, কাঁটা দিয়ে কাটা তুলবেন, তাহলে তিনি ভুল করছেন। বিজেপির সঙ্গে মানুষ রয়েছে। তৃণমূলের যে দুর্নীতি, যে অত্যাচার, তার বিরুদ্ধে মানুষ গর্জে উঠছে। তাই লকেট চট্টোপাধ্যায় যেমন রাজনীতিতে পরীক্ষিত, তেমনই দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি করার সুবাদে এলাকার মানুষজনের সঙ্গে তার ভালোই পরিচয় রয়েছে। তিনি হুগলি লোকসভা কেন্দ্রের মানুষের কাছে সাংসদ হিসেবে যতটা পারেন, পৌঁছে যাওয়ার চেষ্টা করেন। সেখানে তৃণমূলের অনেক চক্রান্ত থাকে। কিন্তু সবকিছুকে উপেক্ষা করে তিনি এই শাসকদলের বিরুদ্ধে লড়াই যেমন করছেন, ঠিক তেমনই মানুষের সুবিধে, অসুবিধেতে তাদের পাশে থাকতেন।

স্বাভাবিকভাবেই বিরোধী দলে থেকে লড়াই করা যতটা কঠিন, শাসক দলে থেকে লড়াই করা ঠিক ততটাই সহজ। তাই এতদিন মানুষের পাশে না থেকে হঠাৎ করেই লকেট চট্টোপাধ্যায়কে পরাজিত করার জন্য রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়কে যদি হুগলিতে প্রার্থী করে ভোটে জেতার স্বপ্ন দেখেন, তাহলে সেই স্বপ্ন কোনোদিন বাস্তব হবে না। কারণ রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ও হুগলী লোকসভা কেন্দ্রে প্রার্থী হওয়ার পর বুঝতে পেরেছেন যে, লকেট চট্টোপাধ্যায়কে হারানো কতটা কঠিন। দিনের শেষে তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!