এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > কংগ্রেস > লড়াই তো মমতার বিরুদ্ধে, তাহলে কি দলবদলের চিন্তায় অধীর? চর্চা শুরু!

লড়াই তো মমতার বিরুদ্ধে, তাহলে কি দলবদলের চিন্তায় অধীর? চর্চা শুরু!


 

প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- এক সময় কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে গিয়েই সেই কংগ্রেসকে কার্যত ভেঙে তৃণমূল কংগ্রেস গঠন করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকি বাংলায় 2011 সালে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে ক্ষমতায় এলেও, পরবর্তীতে সেই কংগ্রেসকে অপমান করেছিলেন তিনি। তবে এতদিন পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের বিরুদ্ধে নানা কথা বললেও, এবার ব্যাপক চাপে পড়ে গিয়েছেন কট্টর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরোধী প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী। কারণ বাংলায় তিনি তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই আন্দোলন এবং মিছিল করলেও, সর্বভারতীয় স্তরে এক অন্য চিত্র সামনে এসেছে। যেখানে বিজেপিকে সরাতে তৈরি হয়েছে বিরোধী জোট। আর সেই জোটে রয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

কার্যত এক টেবিলে বসেই আলোচনা করতে হচ্ছে কংগ্রেস এবং তৃণমূলকে। ফলে রীতিমতো বিড়ম্বনায় অধীর চৌধুরী। তিনি তো এতদিন বুঝিয়েছেন যে, তিনি নাকি প্রবল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরোধী! ফলে এখন নিজেদের কর্মীদের যন্ত্রণা সহ্য করে তিনি কি সর্বভারতীয় রাজনীতিতে তৃণমূলের সঙ্গে এক টেবিলে বসবেন? নাকি সম্পূর্ণরূপে কংগ্রেস ত্যাগ করে যোগ দেবেন অন্য শিবিরে! তা নিয়ে তৈরি হয়েছে চর্চা। ইতিমধ্যেই সেই নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করে অধীর চৌধুরীকে চাপের মুখে ফেলে দিয়েছেন বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য।

প্রসঙ্গত, এদিন বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্যকে একটি প্রশ্ন করা হয়। আর সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে তিনি বলেন, “অধীর চৌধুরী কংগ্রেসের থেকে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারবেন না। এখানে তিনি স্কুল দুর্নীতি নিয়ে অভিযোগ করবেন, তৃণমূলের বিরুদ্ধে আন্দোলন করবেন, আর দিল্লিতে গিয়ে সেই তৃণমূলের সঙ্গেই একসঙ্গে পদযাত্রায় হাঁটবেন, দুটো একসঙ্গে চলতে পারে না।” বলা বাহুল্য, সর্বভারতীয় স্তরে তৃণমূলের সঙ্গে এক টেবিলে বসা নিয়ে ইতিমধ্যেই বাংলার কংগ্রেস কর্মীরা বিদ্রোহ করতে শুরু করেছেন। অনেকেই বিকল্প প্ল্যাটফর্মের খোঁজ করছেন। অনেকে আবার সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, বিজেপির সঙ্গে যুক্ত হবেন। সেদিক থেকে কংগ্রেসের বাংলার নেতৃত্বরা প্রচণ্ড চাপে রয়েছে। অধিক চৌধুরীকে শ্যাম এবং কূল দুই রক্ষা করতে হবে। তাহলে তিনি কি তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করবেন! নাকি বিজেপির বিপক্ষে?

বিশেষজ্ঞদের মতে, অধীর চৌধুরী বাংলার সন্তান। বাংলায় রাজনীতি করেই তিনি আজ সর্বভারতীয় স্তরে উঠে এসেছেন। তাই নিজের গড় শক্তিশালী রাখতে এতদিন তিনি তৃণমূল বিরোধীতার কথা বলেছেন। কিন্তু এবার যদি সেই তৃণমূলের সঙ্গেই এক মঞ্চে থাকেন, তাহলে তার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। পরবর্তীতে বঙ্গ কংগ্রেসের এমন দশা হবে যে, তাদের আতশ কাঁচ দিয়ে খুঁজে পাওয়া যাবে না। তাই সর্বভারতীয় নেতৃত্বের কাছে নতিস্বীকার করে তৃণমূলের সঙ্গেই আন্ডারস্ট্যান্ডিংয়ের রাজনীতি করেই চুপচাপ সবকিছু সহ্য করতে হবে অধীরবাবুকে। আর তা যদি তিনি না করতে পারেন, তাহলে তাকে সাহসী পদক্ষেপ নিতেই হবে। যার ইঙ্গিত শমীক ভট্টাচার্যের মুখ থেকে শোনা গেল।

পর্যবেক্ষকদের মতে, অধীর চৌধুরী যদি কংগ্রেস ত্যাগ করেন, তাহলে তার কাছে বেশ কিছু দরজা খোলা থাকবে। কিন্তু তিনি যদি কংগ্রেসের মধ্যে থেকেই রাজনীতি করার সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে আগামী দিনে তাকে আরও ফাপড়ে পড়তে হবে। না তিনি তৃণমূলকে সহ্য করতে পারবেন, না তিনি তৃণমূলের বিরুদ্ধে কথা বলতে পারবেন। দলের কথাই তার কাছে শেষ কথা হয়ে হবে। আর যদি তিনি তৃণমূলের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে কংগ্রেসের এই আন্ডার স্ট্যান্ডিংয়ের নীতি মেনে না নিয়ে বাইরে বেরিয়ে আসেন, তাহলে তার অনেক লাভ।

সেদিক থেকে তিনি বিকল্প প্ল্যাটফর্মে গিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াইটাকে আরও জোরদার করে কংগ্রেস কর্মীদের একত্রিত করে নিজের ফ্যান, ফলোয়ারকেও বৃদ্ধি করতে সচেষ্ট হবেন। তাই অধীর চৌধুরী কি করবেন, সেটা তার ব্যাপার। কিন্তু শমীক ভট্টাচার্যের যে মন্তব্য তা আগামী দিনে অধীর চৌধুরী ভাবতে শুরু করলে রাজ্য রাজনীতিতে কংগ্রেসের অন্দরে বড় কিছু হওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা। দিনের শেষে তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!