এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > লোভনীয় অফার দিতে গিয়ে বড় বিপদে মমতা, ত‌্যাগের শিক্ষা গরিবের বন্ধু শুভেন্দুর!

লোভনীয় অফার দিতে গিয়ে বড় বিপদে মমতা, ত‌্যাগের শিক্ষা গরিবের বন্ধু শুভেন্দুর!


প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-রাজ্য বিধানসভায় বাংলা দিবসের প্রস্তাব পাস হওয়ার পরেই মন্ত্রী, বিধায়কদের জন্য একটি ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানিয়ে দেন, মন্ত্রী, বিধায়ক এবং প্রতিমন্ত্রীদের বেতন 40 হাজার টাকা বৃদ্ধি করা হলো। আর মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণায় রীতিমতো ট্রেজারি বেঞ্চ বাজিয়ে সমর্থন করতে থাকেন তৃণমূল বিধায়করা। অর্থাৎ তারা যে বেতন বৃদ্ধিতে খুশি, তা স্পষ্ট। তবে সবাই এক হয় না। যখন রাজ্যে বেকাররা কাঁদছে, যখন কনট্রাকচুয়াল কর্মচারীরা বেতন বৃদ্ধির আশায় সরকারের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন, তখন মন্ত্রীদের, বিধায়কদের বেতন বৃদ্ধিকে যে তিনি খুব একটা ভালো চোখে নিচ্ছেন না, তা বুঝিয়ে দিলেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনিও রাজ্যের বিধায়ক। শুধু তাই নয়, মন্ত্রী সমতুল্য তার পদমর্যাদা। কিন্তু তারপরেও শুভেন্দু অধিকারী স্পষ্ট করলেন, তাদের বেতন বৃদ্ধি নয়, বরঞ্চ যাদের বেতন বৃদ্ধি করার কথা, সেই সিভিক ভলেন্টিয়ার থেকে শুরু করে আশা কর্মীদের বেতন বাড়ানোর দিকে নজর দিক রাজ্য সরকার। আর তাহলেই তিনি খুশি হবেন। অর্থাৎ কতখানি ত্যাগ এবং বড় হৃদয় রয়েছে রাজ্যের বিরোধী দলনেতার, তা তার একটি বাক্য প্রয়োগের মধ্যে দিয়েই স্পষ্ট হয়ে গেল।

প্রসঙ্গত, এদিন মুখ্যমন্ত্রীর এই বেতন বৃদ্ধির ঘোষণা নিয়ে শুভেন্দু অধিকারীকে প্রশ্ন করা হয়। যে প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা বলেন, “রাজ্যের আশা কর্মীরা, সিভিক ভলেন্টিয়ার, ভিলেজ রিসোর্স পার্সন, কনট্রাকচুয়াল কর্মী, আইসিডিএস কর্মীদের দিকে আগে মনোযোগ দিক রাজ্য সরকার। তাদের বেতন বাড়ানো হোক। আমাদের ভাতা বৃদ্ধি করার প্রয়োজন নেই।” একাংশ বলছেন, মানবিকতার চরম নমুনা এবং নিদর্শন দেখালেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি যে ভেতর থেকেই এই সমস্ত কর্মচারীদের জন্য অত্যন্ত ব্যথিত, তা তার বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে উঠে এলো।

বিরোধীরা বলছেন, শুভেন্দু অধিকারী যদি চাইতেন, নিজের স্বার্থ চরিতার্থ করতে, তাহলে তিনি মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্য নিয়ে একটি বাক্যও ব্যবহার করতেন না। কিন্তু সাংবাদিকরা প্রশ্ন করতেই শুভেন্দুবাবু সটান জবাব দিয়ে বুঝিয়ে দিলেন, বিধায়ক দের এবং জনপ্রতিনিধিদের ভাতা বৃদ্ধির কোনো প্রয়োজন নেই। বরঞ্চ সেই অর্থ দিয়ে যে সমস্ত কর্মচারীরা স্বল্প বেতন পেয়ে পরিবার চালাতে পারছেন না, তাদের অর্থনৈতিক ভান্ডারকে সম্পূর্ণ করুক রাজ্য সরকার। তাহলেই বিরোধী দলনেতা হিসেবে তিনি খুশি হবেন। কিন্তু কে শোনে কার কথা! একুশে আইনের রাজ্যে নিজের মতো করেই আইন পরিচালনা করবেন মুখ্যমন্ত্রী। তাই বিরোধী দলনেতা হয়তো এই বেতন বৃদ্ধির ঘটনায় ব্যথিত হবেন, প্রতিবাদ জানাবেন! কিন্তু সিদ্ধান্ত নেওয়ার মালিক তো রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। তাই তিনি যা করবেন, তা ব্যথিত হৃদয়ে হাজার আপত্তি থাকা সত্ত্বেও মেনে নিতে হবে রাজ্যের বিরোধী দলকে।

পর্যবেক্ষকদের মতে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হয়তো ভেবে নিয়েছিলেন যে, তার এই বেতন বৃদ্ধির ঘোষণায় বিরোধী দল ডগমগ হয়ে খুশিতে নাচতে শুরু করবে। কিন্তু তিনি ভুলে গিয়েছেন, এই বিরোধী দলনেতা অন্যরকম। তার নাম শুভেন্দু অধিকারী। তিনি ত্যাগ করতে জানেন। তার কোনো পিছুটান নেই। তাই রাজ্যের মানুষের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণা যে কোনো কাজেই দেবে না, বরঞ্চ গরিবকে যে আরও গরীবের মুখে ঠেলে দেবে, তা বুঝতে পেরেছেন শুভেন্দু অধিকারী। তাই মুখ্যমন্ত্রী হয়ত লোভনীয় অফার দিয়ে বিরোধী দলকে নিজের দিকে টানবেন বলে মনস্থির করেছেন ঠিকই। তবে তা কাজে দিল না। বরঞ্চ মেরুদন্ডের পরিচয় দিয়ে কম বেতনের কর্মচারীদের দিকে সরকার নজর দিলে তিনি খুশি হবেন বলে জানিয়ে দিলেন বিরোধী নেতা। অন্তত তেমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!