এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > মমতা বিরোধী লড়াইয়ে নওশাদের পাশে শুভেন্দু? নয়া জল্পনায় রাজ্য রাজনীতি !

মমতা বিরোধী লড়াইয়ে নওশাদের পাশে শুভেন্দু? নয়া জল্পনায় রাজ্য রাজনীতি !


 

প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- বিজেপিকে আটকাতে সর্বভারতীয় স্তরে কংগ্রেস, তৃণমূল, সিপিএম সব এক টেবিলে বসে মিটিং করে। কিন্তু বাংলায় আবার সেই তৃণমূলের বিরুদ্ধেই চেঁচামেচি করতে দেখা যায় বাম এবং কংগ্রেসকে। তবে বাংলায় সেই বাম এবং কংগ্রেসের সঙ্গে জোটে থাকা আইএসএফের একমাত্র বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী অবশ্য অন্যরকম। তিনি তৃণমূলের সঙ্গে কোনো রকম কোথাও সেটিংয়ের বার্তা না দিয়ে একতরফা লড়াইয়ে বিশ্বাসী। তাই কোথাও যেন তৃণমূল বিরোধী লড়াইয়ে নওশাদ সিদ্দিকীর পাশেই দাঁড়াতে দেখা গেল রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে। অনেকেই এর ফলে “আইএসএফের সঙ্গে বিজেপির একটা সমঝোতা রয়েছে” বলে মন্তব্য করতেই পারেন। কিন্তু দুই দলের রাজনৈতিক মতাদর্শের যথেষ্ট অভাব থাকলেও, তৃণমূল বিরোধী লড়াইতে যেভাবে নওশাদ সিদ্দিকী লড়ছেন, এবার তাকেই সমর্থন করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। যার ফলে আগামী দিনে নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ তৈরি হতে পারে বলেও জল্পনা তৈরি হয়েছে রাজ্যজুড়ে।

প্রসঙ্গত, এদিন নওশাদ সিদ্দিকী স্পষ্ট ভাষায় বার্তা দিয়েছেন যে, তৃণমূলের সঙ্গে যদি কেউ চলে, তাহলে তার সঙ্গে তারা থাকতে পারবেন না। অর্থাৎ বামেদের উদ্দেশ্যেই এই বার্তা দিয়েছেন আইএসএফ বিধায়ক। আর তাকেই সমর্থন করে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “আমি নওশাদ সিদ্দিকীকে দেখেছি তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করতে। আমি মনে করি যে, বাম এবং কংগ্রেস যে সেটিং করে, সেটা নওশাদ ভাই করে না। তবে তার সঙ্গে এবং তার দলের সঙ্গে আমাদের মতাদর্শগত কোনো মিল নেই।” একাংশের মতে, কথায় আছে, শত্রুর শত্রু আমার বন্ধু। শুভেন্দু অধিকারীর ক্ষেত্রেও সেই বক্তব্যই খাটে। তিনি এক চোখা লড়াই করছেন তৃণমূলের বিরুদ্ধে। আর তার সেই লড়াইয়ের যারা সাথী হবেন, তাদেরকেই তিনি পছন্দ করবেন। এক্ষেত্রে কৌস্তুভ বাগচীকেও শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে তৃণমূল বিরোধী এক মঞ্চে দেখা গিয়েছে। আর এবার নওশাদ সিদ্দিকীর বক্তব্যেও সহমত পোষণ করে শুভেন্দুবাবু যা বললেন, তাতে একটা বিষয় স্পষ্ট যে, তৃণমূল বিরোধী লড়াইয়ের যারা মূল স্তম্ভ, যারা সেটিং করেন না, তারা ক্রমশ কাছাকাছি আসতে শুরু করেছেন।

বিজেপির দাবি, বাম এবং কংগ্রেস মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে একটি মিলে বসে দিল্লিতে সেটিং করে। দিল্লিতে দোস্তি করে, বাংলায় তারা কুস্তির রাজনীতি করে। তাই তাদের এই সুবিধাবাদী রাজনীতি পশ্চিমবঙ্গের মানুষ ধরে ফেলেছেন। তবে শুভেন্দু অধিকারী বিরোধী দলনেতা হওয়ার পর থেকে তিনি কোনো সেটিং না করে তৃণমূলের সঙ্গে চোখে চোখ রেখে লড়াই করছেন। একটু আধটু হলেও তৃণমূল বিরোধী লড়াইয়ে তার শক্তি বিধানসভার ভেতরেও প্রত্যক্ষ করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। নওশাদ সিদ্দিকীর মধ্যেও লক্ষ্য করা গিয়েছে যে, তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রবল লড়াইয়ের মানসিকতা নিয়েই ময়দানে নেমেছেন। এমনকি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধেও তিনি লড়াই করে তাকে হারানোর কথা বলেছেন। তাই তিনি সেটিং না করে যদি লড়াই করতে পারেন, তাহলে তা অবশ্যই সাধুবাদ জানানোর মতই। মতাদর্শগত লড়াই হয়ত আইএসএফের সঙ্গে থাকবে। কিন্তু তৃণমূল বিরোধী লড়াইয়ে সবার এক ছাতার তলায় আসা উচিত বলেই দাবি গেরুয়া শিবিরের।

পর্যবেক্ষকদের মতে, পশ্চিমবঙ্গে এই দিনটা আসা খুব দরকার। যারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পছন্দ করেন না, যারা এই ভদ্রমহিলার রাজত্বতে বীতশ্রদ্ধ তারা সব এক ছাতার তলায় আসুক। তারা সব একত্রিত হন। আর সমস্ত বিরোধী ভোটব্যাঙ্ক একদিকে আসলেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিদায় আসন্ন। সেদিক থেকে আইএসএফকে সমর্থন না করলেও শুভেন্দু অধিকারী বুঝিয়ে দিলেন যে, নওশাদ সিদ্দিকীর তৃণমূল বিরোধী এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে যে লড়াইয়ের মানসিকতা, তাকে তিনি সম্মান জানান। আর এতেই সেটিংয়ের রাজনীতি করা বাম-কংগ্রেসের দ্বিচারিতার মুখোশ আরও বেশি করে প্রকাশ্যে চলে এলো। ফলে যত সময় যাচ্ছে, ততই তৃণমূল বিরোধী ভোটব্যাঙ্ক শক্তিশালী হচ্ছে। নওশাদ সিদ্দিকীর বক্তব্য নিয়ে শুভেন্দু অধিকারীর প্রতিক্রিয়ার পর তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!