এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > মমতার নির্দেশেই “কে অভিষেক” নাটক জ্যোতিপ্রিয়র? বিপদে পিসি-ভাইপো, কটাক্ষ বিজেপির!

মমতার নির্দেশেই “কে অভিষেক” নাটক জ্যোতিপ্রিয়র? বিপদে পিসি-ভাইপো, কটাক্ষ বিজেপির!


 

প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- রেশন বন্টন দুর্নীতি মামলায় ইডি হেফাজতে রয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূল কংগ্রেস দল তার পাশেই দাঁড়িয়েছে। তবে এদিন আবার হঠাৎ করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে প্রশ্ন করতেই জ্যোতিপ্রিয়বাবু বলে বসেন, “কোন বন্দোপাধ্যায়, জানি না। কে অভিষেক? আমার লিডার!” আর তার এই ধরনের মন্তব্য শুনে অনেকেই বিভ্রান্ত হতে শুরু করেছিলেন। অনেকেই বলছেন যে, জ্যোতিপ্রিয়বাবু হয়তো ভাইপোর উপর রাগ করেছেন। তিনি হয়তো বুঝতে পেরেছেন যে, ভাইপোর কারণেই আজকে তিনি গ্রেপ্তার হয়েছেন। তাই এই ধরনের কথা বলছেন। তবে আসল গল্প অন্যখানে। যে গল্প ফাঁস করে দিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক কেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম বলছেন না, তাকে একটা না চেনার ভান করছেন, তার পেছনে রয়েছে অন্য এক ধরনের চিত্রনাট্য।

আর এই চিত্রনাট্য সাজিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার ভাইপো। বিরোধী দলনেতা নিজের বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে তেমনটাই বোঝাতে চাইলেন। আর শুভেন্দু অধিকারীর এই বক্তব্যের পর রীতিমত সরগরম রাজ্য রাজনীতি।প্রসঙ্গত, এদিন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের এই মন্তব্য নিয়ে শুভেন্দু অধিকারীকে প্রশ্ন করা হয়। আর সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে তিনি বলেন, “এসব ট্রেনিং দেওয়া হয়েছে। বাড়ির খাবার দিতে যায়, সেই সময় মমতা ব্যানার্জি আর তার ভাইপোর ট্রেনিং দেওয়া হয়েছে। বলে দেওয়া হয়েছে যে, মরে গেলেও আমাদের নাম বলবি না। চিনি না বলবি। কয়েকটা দিন রিমান্ডে থাক, তারপর পিজিতে ভর্তি হয়ে যাবি। সেই কারণেই এই সমস্ত কথা বলেছে।”

একাংশের মতে, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক যে দুর্নীতির জন্য গ্রেপ্তার হয়েছেন, তার পেছনে তৃণমূলের অনেক বড় বড় মাথা রয়েছে। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ এই বালুবাবু যদি ইডির কাছে তথ্য ফাঁস করে দেন, তাহলে অনেকেই ফেঁসে যাবেন। ফলে সেদিক থেকে প্রচন্ড ভয় রয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীও। তাই তিনি সবসময় জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। আর এই পরিস্থিতিতে শুভেন্দু অধিকারী যা বললেন, তা যদি সত্যি হয়, তাহলে তো এটা অত্যন্ত মারাত্মক বিষয়। ভাইপোকে বাঁচাতে, পিসিকে বাঁচাতে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে দিয়ে এই সমস্ত কথা বলানো হচ্ছে। আর তিনিও তা বলে দিচ্ছেন, যাতে তার পাশে দল থাকে। তাই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে এটা বলে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক তাকে এড়িয়ে যাচ্ছেন যদি ভাবা হয়, তাহলে ভুল ভাবা হবে। বরঞ্চ পিসি ভাইপোকে রক্ষা করতেই এবং এই ধরনের কথা বলতেই তাকে ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে বলেই দাবি একাংশের।

বিজেপির দাবি, নিজেকে এবং নিজের ভাইপোকে রক্ষা করতে সব কাজ করতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়‌। তাই হয়তো জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের কাছেও তিনি এই খবর পৌঁছে দিচ্ছেন, যাতে পিসি এবং ভাইপোর নাম না বলা হয়। আর সেই মতই কাজ করছেন গ্রেফতার হওয়া রাজ্যের এই মন্ত্রী। তাই এটা যে চূড়ান্ত নাটক, সেটা শুভেন্দুবাবুও স্পষ্ট করে দিলেন। তবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাও খুব ভালো করে জানে, পেটের কথা কি করে বের করতে হয়। তাই আজ না হোক কাল, যে দুর্নীতি হয়েছে, তার মাথা কারা, কাদের কাছে সেই টাকার ভাগ গিয়েছে, তা বলতেই হবে জ্যোতিপ্রিয়বাবুকে। আর তখন মূল রাঘববোয়াল শাস্তির মুখে পড়বেন বলেই দাবি গেরুয়া শিবিরের।

পর্যবেক্ষকদের মতে, শুভেন্দুবাবু তৃণমূলের ভেতরের খবর খুব ভালো মত জানেন। তাই তিনি যা যা বলছেন, তা পরবর্তীতে হুবহু মিলে যাচ্ছে। তিনি এটাও বলেছেন যে, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে মন্ত্রী পদ থেকে এখনই সরানো হবে না‌। আর সেটাও মিলে গিয়েছে। তাই এক্ষেত্রেও জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক অভিষেকবাবুকে নিয়ে যাই বলুন না কেন, ভেতরে ভেতরে যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশের কারণেই তিনি এই কথা বলছেন, তা স্পষ্ট করে দিলেন শুভেন্দু অধিকারী। আর বিরোধী দলনেতার এই বক্তব্যকে উড়িয়ে দিতে পারছেন না বিশেষজ্ঞরাও। তারা বলছেন, ভয়ে রয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই তাদের নাম যাতে বালুবাবু না বলে দেন, তার জন্যই হয়তো ওপরতলা থেকে মন্ত্রীর কাছে নির্দেশ গিয়েছে। তাই “কে অভিষেক ব্যানার্জি?” এই সমস্ত কথা বলে একটা ভাসা ভাসা বিষয় সামনে আনছেন। তবে এসব করে তিনি যদি পিসি-ভাইপোকে রক্ষা করতে চান, তাহলে তা সম্ভব হবে না। দুর্নীতি যদি হয়ে থাকে এবং সেই ঘটনায় যদি জড়িয়ে থাকেন সততার প্রতীকের মুখোশ পরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীও, তাহলে তিনিও রেহাই পাবেন না। শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্যের পর তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!