মমতাকে ওপেন চ্যালেঞ্জ, হিম্মত আছে তো? কড়া ডোজ দিলেন শুভেন্দু! তৃণমূল বিজেপি রাজনীতি রাজ্য February 8, 2024 প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- 20-22 টা সংসদ নিয়ে তিনি নাকি দেশ চালাবেন! সত্যিই এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কথা শুনলে মাঝেমধ্যেই বিরোধীরা হাসবে নাকি কাঁদবে, ভেবে পায় না। আজকেও রাজ্য বাজেট হওয়ার সময় হঠাৎ করেই বিরোধীদের উদ্দেশ্যে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। বিরোধীরা যখন সেই রাজ্য বাজেটে কিছু রাজনৈতিক কথা নিয়ে আপত্তি তুলেছেন, তখন এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হঠাৎ করেই বলে ফেলেছেন, আপনারা যদি এখানে বাধা দেন, তাহলে আমিও লোকসভায় বাধা দেব। অর্থাৎ তিনি বোঝানোর চেষ্টা করেছেন যে, বিরোধী দল বিজেপি এখানে বাধা দিলে লোকসভার কাজে বাধা দেবে তৃণমূল কংগ্রেস। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের এই গুটি কয়েক সাংসদ বাধা দিলে কি যায় আসে! আর যদি সত্যিই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এত হিম্মত থাকে, তাহলে তিনি তা করে দেখান। লোকসভার অধিবেশন তো এখনও পর্যন্ত চলবে কয়েক দিন। তাহলে এর মধ্যেই তিনি তার কথা অনুযায়ী পদক্ষেপ নিয়ে প্রমাণ করে দিন যে, তিনি দেশের অন্যতম বড় নেত্রী। কিন্তু তা করার মত হিম্মত এই রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের রয়েছে তো? শুধু মুখে বললেই হয় না। কাজের কাজটা করে দেখাতে হয়। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই বক্তব্যকেই হাতিয়ার করে এবার তার উদ্দেশ্যে ওপেন চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন এই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। যার ফলে এমন হুঁশিয়ারি মূলক বক্তব্য রেখেও রীতিমতো বেকায়দায় পড়ে গিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেই মনে করছেন একাংশ। প্রসঙ্গত, এদিন এই ব্যাপারে রাজ্যের বিরোধী দলনেতাকে একটি প্রশ্ন করা হয়। আর সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে তিনি একেবারে চাঁচাছোলা ভাষায় জবাব দেন। এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তো অনেক বড় নেত্রী। তাহলে তিনি তার 20-22 টা সাংসদকে নিয়ে লোকসভার কাজ আটকে দেখান। যদি হিম্মত থাকে, তিনি এই কাজ করে দেখান। তারপর বুঝব, তিনি বড় মাপের নেত্রী। আমি বিজেপির পক্ষ থেকে ওনাকে এই ওপেন চ্যালেঞ্জটা দিয়ে রাখলাম।” অনেকে বলছেন, মুখে অনেক বড় বড় কথা এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বলে থাকেন। কিন্তু তার সব কথাকে গুরুত্ব দিতে নেই। তবে কোনো একটা জায়গায় তার হিম্মতরা দেখার প্রয়োজন রয়েছে। তাই শুভেন্দু অধিকারী এদিন মুখ্যমন্ত্রীর সেই বক্তব্যকে হাতিয়ার করেই তার উদ্দেশ্যে একটা চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে বুঝিয়ে দিলেন, যদি সত্যিই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দম থাকে, তাহলে সামান্য কয়েকজন সাংসদ নিয়ে তিনি লোকসভার কাজে বাধাদান করে দেখান। আর হত, যদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইন্ডি জোটে থাকতেন। কিন্তু সেই জোট ভেঙ্গে যাওয়ার মুখে। তাই সেই জোটে যুক্ত হয়েও যদি তিনি লোকসভার কাজ আটকে দিতে চান, তাহলেও যে সংখ্যাগরিষ্ঠতা বিজেপির আছে, তাতে বিরোধীরা সমবেত হয়েও যদি আপত্তি জানায়, তাতে লাভের লাভ কিছু হবে না এবং শেষ পর্যন্ত এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বড় বড় ডায়লগ বাজি নিয়েই প্রশ্ন উঠবে বলেই মনে করছেন একাংশ। ইতিমধ্যেই গোটা বিষয়ে কটাক্ষ করতে শুরু করেছে বিজেপি। তাদের দাবি, লজ্জা করে না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এসব কথা বলতে! দেশে গণতন্ত্র রয়েছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে যেভাবে গণতন্ত্রকে তিনি এবং তার সরকার প্রতিমুহূর্তে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে, তারপরেও তার মুখে এত বড় বড় কথা মানায় না। প্রত্যেকদিন লোকসভার অধিবেশন দেখতে পায় দেশের মানুষ। কিন্তু বিধানসভায় লাইভ সম্প্রচার হয় না। যার ফলে বিধানসভার ভেতরে কিভাবে প্রতিমুহূর্তে বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করা হয়, সেটা বাংলার মানুষ জানতে পারে না। তবে তারা এই রাজ্যের পরিস্থিতি দেখে বুঝতে পারছে যে, এই তৃণমূল কংগ্রেস কতটা ফ্যাসিস্ট। স্বাভাবিক ভাবেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লোকসভার কাজ আটকে দেবেন বলে বড় বড় কথা বললেও, তার এই বক্তব্যের কোনো গুরুত্ব নেই বলেই দাবি গেরুয়া শিবিরের। পর্যবেক্ষকদের মতে, সংবাদমাধ্যমের দৃষ্টি আকর্ষণ করতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিধানসভার অধিবেশনে এত বড় বড় কথা বলেছেন। কিন্তু লোকসভার কাজ আটকে দেওয়া তো দূরের কথা, লোকসভায় চেঁচামেচি করলে এবং বিশৃঙ্খলা করলে তার ফল কি হয়, তা খুব ভালো করেই জানে তৃণমূল কংগ্রেস। দেশের শাসক দল বিজেপি অনেক ধৈর্যশীল বলেই এত হম্বিতম্বি করতে পারে বিরোধীরা। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় সামান্য প্রতিবাদ জানানোর সুযোগটুকু নেই বিরোধী দল বিজেপির। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজকে রাজ্য বিধানসভায় লোকসভার কাজ আটকে দেবেন বলে যে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, তা গণতন্ত্রকে চ্যালেঞ্জ জানানোরই সামিল। তবে যদি হিম্মত থাকে, তাহলে এই কাজ করে দেখান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুভেন্দু অধিকারীর করা চ্যালেঞ্জের পর এখন রীতিমত খাবি খাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস। দিনের শেষে তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা। আপনার মতামত জানান -