এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > বিধানসভার আগে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ‘অশান্তি’ এড়াতেই কি গ্রেপ্তার শাসকদলের দুই প্রভাবশালী নেতা?

বিধানসভার আগে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ‘অশান্তি’ এড়াতেই কি গ্রেপ্তার শাসকদলের দুই প্রভাবশালী নেতা?


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –  বীরভূম জেলার খয়রাশোল গ্রামের দুই শিক্ষক নেতাকে পুলিশ গ্রেফতার করল গতকাল শিক্ষক দিবসের দিনেই। তারপর সিউড়ি আদালতে নিয়ে যাওয়া হলো তাদের। আদালতের নির্দেশে তাদের রাখা হলো পুলিশের হেফাজতে। ধৃত দুজন শিক্ষক নেতাই কিন্তু শাসক দল তৃণমূল এর দুই প্রভাবশালী নেতা। যাদের মধ্যে একজন গ্রেফতার হয়েছেন আগ্নেয়াস্ত্র সঙ্গে রাখার অভিযোগে, অন্য জন গ্রেপ্তার হয়েছেন মাদক কারবারির সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে। শাসক দলের এই দুজন শিক্ষক নেতা হলেন আব্দুর রহমান ও উজ্জল হক কাদেরী। তাঁরা একই রাজনৈতিক দলের নেতা হলেও দুজনের মধ্যে সাপে-নেউলে সম্পর্ক। গতকাল আব্দুর রহমানের সঙ্গে তাঁর অনুগামী শেখ পলাশ ওরফে আমিনুলকেও পুলিশ গ্রেফতার করেছে।

বহুকাল ধরেই খয়রাশোল গ্রামে শাসক দলের মধ্যে মতভেদ, গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চলছে। সম্প্রতি সেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এতটাই ভয়াবহ রূপ নিয়েছে যে, গত লোকসভা নির্বাচনে এই অঞ্চলে শাসক দল বিরোধীদলের থেকে অনেকটাই পিছিয়ে পড়ে। স্থানীয় গ্রামবাসীরা এ প্রসঙ্গে জানিয়েছেন যে, দুই নেতার এই বিবাদ – বিসম্বাদে শাসক দল তৃণমূল দুটি সমান্তরাল শিবিরের মধ্যে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। যাদের মধ্যে সংঘর্ষ, গন্ডগোল এখন নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে উঠেছে।

স্থানীয় সুত্র থেকে জানা গেছে কয়লার কালোবাজারি, বেআইনিভাবে কয়লা উত্তোলন, কয়লার পাচার, কয়লা খনির নিয়ন্ত্রণ এই সমস্ত ব্যাপার নিয়ে দুই তরফের সর্বদা সংঘর্ষ চলে। এর উপরে সম্প্রতি বালির কারবার, পঞ্চায়েত সমিতির মধ্যে সরকারি প্রকল্পের অর্থের ভাগাভাগি নিয়ে তাদের মধ্যে লড়াই আরও ব্যাপক ধারণ করেছে। উভয়ের মধ্যে সংঘর্ষের মাত্রা এতটাই বেড়েছে যে বোমাবাজি, হত্যা এসব রোজকার ব্যাপার হয়ে পড়েছে। গত ৮ বছরে এই স্থানে অন্তত ১০ জন খুন হয়েছেন। যাদের মধ্যে তিনজন ব্লক সভাপতি পর্যন্ত আছেন। এর সঙ্গেই গত কয়েক বছরে এই খয়রাশোল অঞ্চলে ৭ বার বোমাবাজির ঘটনা ঘটেছে।শাসক দল তৃণমূল বহু চেষ্টা করেও তাদের দলের এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রোধ করতে পারছে না।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে গত যে, গত ২০১২ সালের তৃণমূল নেতা আব্দুর রহমানের দাদা আনিসুর রহমান ও উজ্জ্বল হক কাদেরির ভাই শেখ বুড়ো একই দিনে খুন হন। এই ঘটনার পর থেকে উভয় নেতার মধ্যে পারস্পরিক বিদ্বেষ চরম আকার ধারণ করে। বারবার হত্যা, বোমাবাজি, সশস্ত্র আক্রমণ ঘটতে থাকে। স্থানীয় বিরোধী পক্ষ এই দুই যুযুধান তৃণমূল নেতার সংঘর্ষের জন্য পুলিশের নিষ্ক্রিয়তাকে দায়ী করেছেন। বিরোধীপক্ষের অভিযোগ, তাঁরা শাসকদলের নেতা হওয়ার কারণেই পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনি।

এই পরিস্থিতিতে, গত শুক্রবার বাবুইজোর পঞ্চায়েত এলাকার দখল নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে আবার ব্যাপক সংঘাত তৈরি হয়। এই ঘটনায় চলে ব্যাপক বোমা,গুলি, ভাঙচুর দু’পক্ষের তরফ থেকেই। স্থানীয় বাসিন্দারা মনে করছেন, গত শুক্রবার পরস্পর বিবদমান দুই তৃণমূল নেতার বিরোধ এতটাই ব্যাপক আকার ধারণ করে যে তার খবর শাসক দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে চলে যায়। তাঁদের ধারণা, শাসকদলের নির্দেশই পুলিশ এই দুই নেতাকে গ্রেফতার করেছে। তবে, স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, পুলিশ আইন মেনেই তাদের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। গ্রেফতারির সঙ্গে শাসকদলের কোন সম্পর্ক নেই।

তবে, রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন পরস্পর বিবদমান এই দুই নেতাকে গ্রেফতার করে শাসক দলের শীর্ষ নেতৃত্ব বুঝিয়ে দিতে চাইছেন যে, আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে নিজেদের মধ্যে পারস্পরিক বিভেদ, অন্তর্দ্বন্দ্ব তারা কিছুতেই মেনে নেবে না। তবে অভিযুক্ত আব্দুর রহমান ও উজ্জল হক কাদেরী অবশ্য দাবি করেছেন যে, মিথ্যা মামলায় তাদেরকে ফাঁসানো হয়েছে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!