এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > মমতাকেই মানেন না বিধায়ক, দলীয় পদ থেকে সরানোর হুঁশিয়ারি! কটাক্ষ বিরোধীদের!

মমতাকেই মানেন না বিধায়ক, দলীয় পদ থেকে সরানোর হুঁশিয়ারি! কটাক্ষ বিরোধীদের!

 

প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- মাঝেমধ্যে সত্যিই মনে হয় যে, তৃণমূল কি সত্যিই একটা দল! নাকি এটা একটা কোম্পানি; মানে বিরোধীরা যে প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি বলে তৃণমূলকে আক্রমণ করে, মাঝেমধ্যে মনে হয়, হয়ত তারা সেটা ঠিকই বলে। কারণ যে দলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শেষ কথা, যে দলে একজন নেত্রীর উর্ধ্বে কেউ কথা বলতে পারে না, সেই দল যে প্রাইভেট কায়দাতেই চলে, এটা তো স্পষ্ট। তবে এখন আবার যত সময় যাচ্ছে, ততই দলের নেতা কর্মীরা সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উর্দ্ধে কথা বলতে শুরু করেছেন। ভোটে জেতার জন্য দলের নীচুতলার নেতাকর্মীদের আবার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারি পর্যন্ত দিয়ে দিচ্ছেন কেউ কেউ।

স্বাভাবিক ভাবেই প্রকাশ্য সভা থেকে একের পর এক নেতা নেত্রীদের এবং জনপ্রতিনিধিদের এই ধরনের হুঁশিয়ারি মূলক বক্তব্য প্রশ্ন ছুঁড়ে দিচ্ছে সেই তৃণমূলের নীতি নৈতিকতা নিয়ে‌। যদিও বা বিরোধিদের কটাক্ষ তৃণমূল তো কোনো রাজনৈতিক দল নয়। ফলে তাদের দলের মধ্যে এই ধরনের কোনো নীতি থাকবে না, এটাই তো স্বাভাবিক। তাই এই সমস্ত বিষয় নিয়ে বিরোধীরা অন্তত মাথা ঘামাচ্ছে না। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওপরে গিয়ে নেতা কর্মীদের পদ থেকে ছাটাই করে দেওয়ার যে কথা এবার আরও এক তৃণমূল বিধায়ক বলে ফেললেন, তাতে মনে করা হচ্ছে যে, তৃণমূল কংগ্রেসে এবার হয়ত যত সময় আসছে, ততই দিকে দিকে ভাঙ্গন দেখা দিতে শুরু করেছে। কিন্তু দলের ওপরে উঠে কে আবার নেতাকর্মীদের ওপর ছড়ি ঘোরাতে শুরু করলেন! কোন বিধায়ক বললেন এমন কথা?

প্রসঙ্গত, এদিন প্রকাশ্য কর্মী সভায় সোনারপুর দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক লাভলী মৈত্রের একটি বক্তব্যের ভিডিও ভাইরাল হয়। যেখানে তাকে বলতে শোনা যায়, মানুষ ভোট দিচ্ছে, কিন্তু আপনারা দায়িত্ব পালন করছেন না। সামনেই লোকসভা ভোট। যে বুথের ফল খারাপ হবে, লিড পাবো না, সেই বুথ থেকে সভাপতি সহ সদস্য সবাইকে ইস্তফা দিতে হবে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, তৃণমূলের বিধায়ক, তৃণমূলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে এমন কথা বলতেই পারেন। কিন্তু যেই দলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শেষ কথা, সেখানে তার ওপরে উঠে লাভলী মৈত্র এসব কথা বলার সাহস পান কোথা থেকে? তাকে কে এই অধিকার দিয়েছে নেতাকর্মীদের ওপর হুঁশিয়ারি দেওয়ার?

অনেকে তো এটাও বলছেন যে, দুদিন হল দলে এসে বিধায়ক হয়ে এখন নেতা কর্মীদের অপমান করছেন এই লাভলী মৈত্র। যিনি রাজনীতির র টুকুও বোঝেন না, তার কাছ থেকে এই ধরনের কথা দীর্ঘদিন তৃণমূল করে আসা নেতাকর্মীরা মেনে নেবে না। যার ফলে আগামী দিনে এমন গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব তৈরি হবে যে, বিরোধীদেরকে কিছু করতে হবে না। এভাবে নেতারা কর্মীদের ওপর ছড়ি ঘোরাতে শুরু করলে এমনিতেই তৃণমূলের প্রার্থী হেরে বাড়ি ফিরে যাবেন বলেই দাবি একাংশের।

বিজেপির দাবি, তৃণমূলে গঠনতন্ত্র বলে কিছু নেই। এতদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শেষ কথা ছিলেন। কিন্তু এখন বিধায়করাও নিজের এলাকায় শেষ কথা বলতে শুরু করেছেন। তারা নিজেদের ইচ্ছামত দল পরিচালনা করছেন। যা হয়তো দলের অনেক পুরোনো নেতা কর্মীরা মেনে নিতে পারছেন না। দুদিন হল দলে এসে ছড়ি ঘোরানো বিধায়ককে তারা বরদাস্ত করবেন না। স্বভাবতই একটা কোম্পানিতে পরিণত হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। নিজেদের ভুলেই এরা পতনের মুখে এগিয়ে যাচ্ছে। আগামী দিনে তৃণমূলের কর্মীরাই নেতাদের উপযুক্ত জবাব দেবে বলেই দাবি গেরুয়া শিবিরের।

পর্যবেক্ষকদের মতে, লাভলি মৈত্র তো অতীতে কোনোদিন তৃণমূল করেননি। তাহলে দলের ওপরতলা থেকে ঠিক করে দেওয়া কোনো বুথ সভাপতিকে তিনি সরাবেন কি করে? কে তাকে এই অধিকার দিয়েছে! মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি তার কানে কানে বলে দিয়েছেন যে, “লাভলী, তুমি এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকারী”! নিশ্চয়ই তিনি এ কথা বলেননি। তারপরেও কি করে দুদিন হলো তৃণমূলের যোগদান করে এই বিধায়ক এত বড় কথা বলতে পারেন! তা নিয়ে দলের মধ্যেই উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন। আর যত বেশি লোকসভা নির্বাচন এগিয়ে আসবে, ততই তৃণমূলের মধ্যে এই সমস্যা বাড়তে শুরু করবে। কারণ এই দলে নীতি, নৈতিকতা বলে কিছু নেই। একনায়ক তন্ত্রে পরিপূর্ণ এই দলের ভবিষ্যৎ ধীরে ধীরে পতনের মুখে এগিয়ে যাচ্ছে। দিনের শেষে তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!