এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > মমতার ফ্যাসিস্ট নীতি, পপুলার হচ্ছে বিজেপি ! সাসপেন্ড হয়ে গর্বিত শুভেন্দু !

মমতার ফ্যাসিস্ট নীতি, পপুলার হচ্ছে বিজেপি ! সাসপেন্ড হয়ে গর্বিত শুভেন্দু !


 

প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী খুব ভালো মতো বুঝতে পেরেছেন যে, আর তার সরকার বেশিদিন থাকবে না। সন্দেশখালির জনজাগরণ তার রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে বলেই দাবি করছে বিরোধীরা। আর সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে বিরোধী দল বিজেপি যখন বিধানসভার ভেতরে তাদের প্রতিবাদ জানাচ্ছে, তখন সেখানেও তাদের কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা হলো। আজকে বিধানসভার অধ্যক্ষ শুভেন্দু অধিকারী সহ ছয় জন বিজেপি বিধায়ককে সাসপেন্ড করলেন। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এই সাসপেন্ড করে কার ক্ষতি হলো? রাজ্যের শাসক দলের! নাকি শুভেন্দু অধিকারী বা বিরোধী দলের? এর আগেও তো শুভেন্দু অধিকারী যখনই মানুষের হয়ে বিধানসভায় কথা বলতে গিয়েছেন, তখনই তাকে সাসপেন্ড করা হয়েছে, যাতে তিনি বিধানসভায় অধিবেশনে অংশ নিতে না পারেন।

এবারও সন্দেশখালির মত জ্বলন্ত ইস্যুতে বিরোধীরা প্রতিবাদ করবে, কিন্তু সেই প্রতিবাদকে আটকে দিয়ে এই রাজ্যের শাসক দল কি নিজেদের ব্যর্থতাকেই সামনে এনে দিল না? বিধানসভার অধ্যক্ষকে পেছন থেকে এই নির্দেশ দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি নিজের পায়ে নিজেই কুড়ালটা মারলেন না? এই প্রশ্ন কিন্তু উঠতে শুরু করেছে। আর এসবের মাঝেই শুভেন্দু অধিকারী এবং বিজেপি এই সাসপেন্ডের ঘটনায় প্রবল ভাবে গর্বিত। তারা মা-বোনেদের অসহায় বিষয় নিয়ে এই রাজ্য বিধানসভায় আওয়াজ তুলতে চেয়েছিলেন। তাই সন্দেশখালির সেই সমস্ত মা-বোনেরা দেখছে যে, এই সরকার তাদের নিরাপত্তা দিতে পারবে না। সেই কারণে তাদের হাহাকারের কথা যখন বিধানসভায় তুলে ধরতে যাওয়া হলো, তখন শুভেন্দু অধিকারী সহ বিজেপি বিধায়কদের সাসপেন্ড করা হলো। ফলে সাধারণ মানুষের কাছে একটা জিনিস দিনের আলোর মত পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে যে, এই সরকার মানুষের অভাব, অভিযোগ শুনতে চায় না। আর কেউ প্রতিবাদ করলেই তাদের এভাবেই কণ্ঠরোধ করা হয়।

প্রসঙ্গত, এদিন বিধানসভায় সাসপেন্ড হতেই বাইরে বেরিয়ে এসে গর্জে ওঠেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, “আমরা গর্বিত। এর আগে বগটুইয়ের সময় যখন আগুন ধরিয়েছিল ঘরগুলোতে, যখন মুসলিম মহিলাদের পুড়িয়ে মারা হয়েছিল, তখন আমাদের সাসপেন্ড করা হয়েছিল। আর আজকে সন্দেশখালির মা-বোনেদের আর্তনাদের কথা বিধানসভায় তুলতে গিয়ে আমাদের সাসপেন্ড করা হয়েছে। আমরা গর্বিত, নারী শক্তির জন্য আমরা আওয়াজ তুলেছি। কিন্তু আমাদের এভাবে সাসপেন্ড করা হলো। এতে আমাদের কোনো দুঃখ নেই। বরঞ্চ আমরা গর্বিত।” একবার ভেবে দেখুন তো? এর ফলে কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার প্রশাসন প্রশ্নের মুখে পড়ে গেল না?

রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সাধারণ মানুষের যে সিমপ্যাথিটা পেয়ে গেলেন, সেটাতে তো এই শাসক দলের জনপ্রিয়তা আরও কমতে শুরু করল। মানুষের কাছে শুভেন্দু অধিকারী এই বার্তা পৌঁছে দিতে সক্ষম হলেন যে, এই রাজ্যের শাসক দল মহিলাদের সম্ভ্রম নষ্ট হলেও বিন্দুমাত্র বিচলিত নয়। সেই কারণে যারা প্রতিবাদ করছে, তাদের আটকে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই নারীশক্তি, মাতৃ শক্তিরা কিন্তু যতই লক্ষ্মীর ভান্ডার পাক না কেন, তাদের মান সম্মানের জন্য এই সরকারের ফ্যাসিস্ট আচরণের বিরুদ্ধে ধীরে ধীরে বিরোধীদের সমর্থন জানাতে শুরু করেছেন। তাদের কাছে বিশ্বাসযোগ্য নেতা এবং তাদের ঘরের দাদার মতই ভরসার কেন্দ্র হয়ে দাঁড়িয়েছেন এই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা বলেই মনে করছেন একাংশ।

ইতিমধ্যেই গোটা বিষয়ে কটাক্ষ করতে শুরু করেছে বিজেপি। তাদের দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই এমন কিছু ভুল করছেন, যার ফলে জনপ্রিয়তা পেয়ে যাচ্ছে বিরোধীরা। তিনি ভেবেছিলেন, মা-বোনেরা তার সাথে থাকবে। কারণ সবাইকে 500, 1000 টাকা করে দিচ্ছেন। কিন্তু আত্মসম্মান সবার আগে। তাই যেভাবে নারীদের অমর্যাদা করেছেন সন্দেশখালি তৃণমূল নেতারা, তাতে সাধারণ মানুষ আর এই সরকারের ওপর ভরসা রাখতে পারছে না। একজনকে গ্রেফতার করে মুখ্যমন্ত্রী এখন নাটক করার চেষ্টা করছেন। বোঝানোর চেষ্টা করছেন, তিনি রাজধর্ম পালন করেছেন। কিন্তু বিধানসভার ভেতরে যে ঘটনা ঘটে গেল, যেভাবে শুভেন্দু অধিকারীকে এই মাতৃশক্তিদের নিরাপত্তা নিয়ে কথা বলার জন্য সাসপেন্ড করে দেওয়া হলো, তাতে কিন্তু নারী সমাজ জেগে উঠতে শুরু করেছে। তাদের প্রতিবাদ আরও এই সরকারের বিরুদ্ধে যাবে বলেই দাবি গেরুয়া শিবিরের।

পর্যবেক্ষকদের মতে, একজন মহিলা হয়ে, তারপর তিনি আবার মুখ্যমন্ত্রী হয়ে এত রুচিশীল কাজ করছেন কি করে? কি করে ছেড়ে রাখছেন নিজের দলের অপকর্ম করা কেষ্ট বিষ্টুদের? সামান্য প্রতিবাদ শোনার মত ক্ষমতা তার হচ্ছে না! যে কারণে বিধানসভার অধ্যক্ষকে দিয়ে সাসপেন্ড করিয়ে দিতে হলো? কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একবারের জন্যও বুঝলেন না যে, এই সাসপেনশন তার গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়াবে! বিধানসভার ভেতরে হয়ত কথা বলা বন্ধ হয়ে গেল শুভেন্দু অধিকারীর। তাকে হয়ত এই অধিবেশনে আর প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। কিন্তু এর ফলে মানুষের কাছে একটা বার্তা চলে গেল যে, এই সরকার সন্দেশখালি নিয়ে বিন্দুমাত্র চিন্তিত নয়। বরঞ্চ তারা অপরাধীদের বিরুদ্ধে, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বললেই তার এভাবেই কণ্ঠরোধ করতে চায়। ফলে সাধারণ মানুষের ভেতরে যে ক্ষোভ ছিল, সেটা আগামী দিনে এই সরকারের বিরুদ্ধে আরও বেশি করে সঙ্ঘবদ্ধ হবে এবং তা আছড়ে পড়বে ভোটবাক্সে। দিনের শেষে তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!