প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-শেষ পর্যন্ত বহু নাটকের পর অবশেষে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার ডাকে জেরায় উপস্থিত হয়েছেন তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে তাও আবার রক্ষাকবচ নিয়ে। তৃণমূলের পক্ষ থেকে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি নাকি রাজনৈতিক প্রতিহিংসা পরায়ণ আচরণ করছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি। আর পেছন থেকে এই কাজ নাকি বিজেপি সরকার করাচ্ছে। কিন্তু যদি তাই হত, তাহলে শুধু অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কেন? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিবারে তার তো আরও অনেক ভাইপো, ভাইজি রয়েছে! কেন তাদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না ইডি এবং সিবিআই? কেন শুধুমাত্র অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেই বারবার ডাকা হচ্ছে! যুবরাজকে যখন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা জেরা করছে, ঠিক তখনই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিবার নিয়ে এইরকমই বিস্ফোরক প্রশ্ন তুলে দিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, নিয়োগ দুর্নীতি থেকে শুরু করে একাধিক বিষয়ে ইডির পক্ষ থেকে এর আগেও একাধিক বার জেরা করা হয়েছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। আজ আবার তাকে জেরা করা হচ্ছে। কিন্তু তৃণমূলের সোশ্যাল মিডিয়ার নেতারা আবার সেই নাটক শুরু করে দিয়েছেন। যুবরাজকে মাথায় তুলে বিজেপির বিরুদ্ধে কতই না অভিযোগ করছেন। কিন্তু এই সমস্ত অভিযোগ শেষ পর্যন্ত ধোপে টিকলো না। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দাবি করলেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেই কেন শুধুমাত্র তদন্তকারী সংস্থা ডাকছে? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিবার তো তার অনেক ভাইপো রয়েছে। কেন তাদেরকে ডাকছে না? তাহলে তো নিশ্চয়ই এর পেছনে কোনো কারণ রয়েছে।

এখন তৃণমূলের পক্ষ থেকে পাল্টা প্রশ্ন করা হতেই পারে যে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপো হিসেবে সক্রিয় রাজনীতিতে রয়েছেন‌‌। সব সময় বিরোধীদের কুপোকাত করে দিচ্ছেন। তাই তাকে জব্দ করতে এই ধরনের কেন্দ্রীয় এজেন্সি দিয়ে হয়রান করা হচ্ছে। তবে তৃণমূল নিজেই নিজেদের কাছে গোল খেয়ে যাচ্ছে। কারণ যদি কারও বিরুদ্ধে কোনো নির্দিষ্ট অভিযোগ নাই থাকবে, তাহলে তাকে এইভাবে কোনো কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ডাকতে পারে না। কেন্দ্রীয় সংস্থার কাছে নিশ্চয়ই কোনো না কোনো তথ্য রয়েছে। যার কারণে বারবার জেরার মুখে পড়তে হচ্ছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তাই এই ধরনের বড় বড় কথা বলে তৃণমূলের নেতারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ভালো হতে পারেন। কিন্তু বাস্তবের মাটিতে তাদের কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই। অন্তত তেমনটাই দাবি বিরোধীদের।

পর্যবেক্ষকদের দাবি, বারবার বিভিন্ন সভা সমিতিতে বক্তব্য রাখতে গিয়ে শুভেন্দু অধিকারী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার ভাইপোকে কার্যত ধুয়ে দিচ্ছেন। দুর্নীতিতে যে আপাদমস্ত তৃণমূল দলটা ডুবে রয়েছে, তা নিয়ে একের পর এক প্রশ্নবানে বিদ্ধ করছেন তিনি। আর তাকেও ভয় পেতে শুরু করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। তা না হলে শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে এত মামলা মোকঝদ্দমা হয় না। তবে এসব পরের বিষয়। এবার শুভেন্দুবাবু কিন্তু অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে যখন জেরা করা হচ্ছে, তখনই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিবারকে নিয়ে চরম ধাক্কা দিলেন। বুঝিয়ে দিলেন, যুবরাজকে নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার দল যে ধরনের সেফসাইড গেম খেলার চেষ্টা করছে, তা তিনিও বোঝেন। তাই পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে ব্যানার্জি পরিবারের বাকি সদস্যদের কেন কেন্দ্রীয় সংস্থা ডাকছে না, কেন শুধুমাত্র অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেই ডাকছে! সেই রহস্য বাড়িয়ে দিলেন বিরোধী দলনেতা। আর শুভেন্দুবাবুর এই বক্তব্যে তৃণমূলও যে সঠিক উত্তর দিতে পারবে না, শুধু মুখের বড় বড় কথাই সার, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত ওয়াকিবহাল মহল।