মারাত্মক পরিস্থিতি, লজ্জায় সন্দেশখালি যাচ্ছেন না মমতা! বিস্ফোরক সুকান্ত! তৃণমূল বিজেপি রাজনীতি রাজ্য February 26, 2024 প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- ক্ষমতায় আসার পরেই কেন এত আমূল পরিবর্তন হলো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের? বিরোধী নেত্রী থাকার সময় একটা সামান্য ইদুর মারা গেলেও তিনি তো ঘটনাস্থলে পৌঁছে যেতেন। কিন্তু আজকে ক্ষমতায় বসে সন্দেশখালিতে মা-বোনেরা যখন আর্তনাদ করছেন, যখন সেখানে তাদের সম্ভ্রম কেড়ে নেওয়ার মত মারাত্মক অভিযোগ উঠেছে, তখন মহিলা মুখ্যমন্ত্রী হয়েও কেন চুপ এই রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান? তিনি সব জায়গায় যেতে পারছেন। কিন্তু সন্দেশখালিতে গিয়ে কেন অভিযোগের নিষ্পত্তি ঘটাতে পারছেন না? কেন গ্রেফতার করার নির্দেশ দিতে পারছেন না শেখ শাহজাহানকে! এইসব প্রশ্ন যখন উঠছে, ঠিক তখনই মুখ্যমন্ত্রীকে চরম বিড়ম্বনার মুখে ফেলে দিলেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। অনেকে বলছেন, মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যে পাপবোধ কাজ করছে। তিনি নিজেও জানেন যে, সন্দেশখালিতে কি পরিমাণ অপরাধ হয়েছে! তাই ক্ষমতা ভোগ করা এই রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান মানুষের চোখে চোখ রেখে কথা বলতে পারবেন না জেনেই সন্দেশখালিকে প্রতিমুহূর্তে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। যতটুকু বার্তা দিতে হয়, সেটা বলেই তিনি সেই সন্দেশখালিকে সাইডে রাখছেন। তবে এসব করে মানুষের রাগ, তাদের পুঞ্জিভূত ক্ষোভকে আরও বাড়িয়ে দিচ্ছেন এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। তাই সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি যে কথা বললেন, তাতে আরও অস্বস্তিতে পড়ে গেল এই রাজ্যের সরকার এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রসঙ্গত, সন্দেশখালিতে মুখ্যমন্ত্রী কেন যাচ্ছেন না, সেই বিষয় নিয়েই আজ সুকান্তবাবুকে প্রশ্ন করা হয়। আর সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলেন, “সন্দেশখালি এখন চোরাবালি হয়ে গিয়েছে। টিএমসি সেখানে ডুবে যাবে। সেই কারণে মুখ্যমন্ত্রী যেতে পারছেন না। উনি সব জায়গায় যাচ্ছেন, কিন্তু সন্দেশখালিতে যাচ্ছেন না। কারণ সেখানে যে সমস্ত মহিলাদের ওপর অত্যাচার হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর ভাই শেখ শাহাজাহান যে অত্যাচার করেছে, তাতে সেখানকার মা-বোনেদের চোখে চোখ রেখে কথা বলতে পারবেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই কারণেই তিনি সেখানে যাচ্ছেন না।” অনেকে বলছেন, প্রতিমুহূর্তে এই শেখ শাহজাহান তৃণমূলের ভোট লুটের অন্যতম কারিগর হিসেবে সন্দেশখালিতে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে। তাই তার ওপর আচড় আসুক, এটা তৃণমূলের ওপরতলাই চাইছে না। তাছাড়া এতদিনে শাহজাহান গ্রেফতার হয়ে যেত। পুলিশের আশ্রয়েই তাকে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ বিরোধীদের। সেদিক থেকে মুখ্যমন্ত্রী সব কিছু জানা সত্ত্বেও অপরাধকে যে প্রশ্রয় দিচ্ছেন, এটা সকলের কাছে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। তাই সন্দেশখালিকে তিনি আড়াল করে রাখতে চাইছেন। মানুষের চোখে চোখ রেখে কথা বলার মত ক্ষমতা এই রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান হারিয়ে ফেলেছেন জন্যই আজকে সন্দেশখালির মানুষ গর্জে উঠছে। অথচ তিনি নীরবতার ভূমিকা পালন করছেন। আসলে সুকান্তবাবুর কথাই ঠিক। তিনি সেখানকার অত্যাচারিত মা বোনেদের চোখে চোখ রেখে কথা বলতে তো পারবেন না। সেই কারণেই সুকৌশলে এই গোটা সন্দেশখালি ইস্যুটাকেই ঘুরিয়ে দিতে সব রকম চেষ্টা এই রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের তরফে করা হচ্ছে বলেই দাবি একাংশের। পর্যবেক্ষকদের মতে, সন্দেশখালি ইস্যু নিয়ে রাজধর্ম পালন করা উচিত ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। কিন্তু সেই সময় পেরিয়ে গিয়েছে। এতদিনে গোটা রাজ্যের মানুষের কাছে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে যে, যারা অত্যাচার করে, তারা তৃণমূলের সম্পদ হিসেবে গণ্য হয়। সেই কারণেই শাহজাহানরা এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার হয় না। প্রথম দিন থেকেই যখন মহিলারা অভিযোগ করছিলেন, তখনই এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর ক্যামেরার সামনে এসে স্পষ্ট ভাষায় বলে দেওয়া উচিত ছিল যে, পুলিশ আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নেবে। কিন্তু তা না করে এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিরোধীদের ঘাড়ে ঘুরিয়ে দোষ চাপিয়ে নিজের অপদার্থতার প্রমাণ দিয়েছেন। গোটা রাজ্য জুড়ে সন্দেশখালি নিয়ে যে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতে তিনি ভয় পাচ্ছেন। বুঝতে পারছেন যে, একটা সন্দেশখালিতেই তার দলের নেতাদের অত্যাচারের ঘটনায় মানুষ গর্জে উঠেছে, আগামী দিনে গোটা রাজ্যে এই প্রতিবাদ সংগঠিত হলে তার সরকারের আর ক্ষমতায় থাকা সম্ভব হবে না। আর সেসব বুঝতে পেরেই চোখে চোখ রেখে কথা বলা সম্ভব নয় বলেই সন্দেশখালি যাচ্ছেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সুকান্ত মজুমদারের বক্তব্যের পর তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা। আপনার মতামত জানান -