মাথা ফেটে আহত মমতা, চাপ দ্বিগুণ করে আরও টেনশন বাড়ালেন শুভেন্দু! তৃণমূল বিজেপি রাজনীতি রাজ্য March 15, 2024 প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হঠাৎ করেই বাড়িতে পড়ে গিয়ে কপালে চোট লাগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। যেখানে এসএসকেএম হাসপাতালের বেডে তার শুয়ে থাকা অবস্থায় কপাল ফেটে রক্ত পড়ছে, সেই রকম একটি ছবি ভাইরাল হয়। দলমত নির্বিশেষে সকলেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যাতে দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন, তার জন্য প্রার্থনা করছেন। কিন্তু নিজের বাড়িতে এত নিরাপত্তা থাকা সত্ত্বেও, পরিবারের সদস্যরা থাকা সত্ত্বেও, কি করে মুখ্যমন্ত্রী পড়ে গেলেন! সেটা নিয়ে প্রশ্নের শেষ নেই। বিরোধীরা গোটা ঘটনায় তদন্তের দাবি করছে। আর এর মাঝেই আজ খেজুরির সভা থেকে শুভেন্দু অধিকারী যা বললেন, তাতে এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর রাজনৈতিক টেনশন অনেকটাই বেড়ে গেল। অনেকে বলছেন, বর্তমানে তৃণমূলের যা পরিস্থিতি, তাতে এমনিতেই টেনশন গ্রাস করছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে তার দলের নেতাদের মধ্যে। তারা নিজেরাও জানেন যে, এবারের ভোটে তাদের শোচনীয় দশা হবে। তার মধ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কপালে আঘাত পেয়ে বর্তমানে বাড়িতে বিশ্রামে রয়েছেন। কিন্তু শুভেন্দু অধিকারী রাজনৈতিক বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে তাকে কোনোমতেই শান্তি পেতে দিচ্ছেন না বলেই দাবি একাংশের। প্রসঙ্গত, এদিন খেজুরির সভা থেকে নাম না করে মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ করেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, “তৃণমূলের বাজার খুব খারাপ। ওপর থেকে সবাই মাথা ঘুরে পড়ে যাচ্ছে, প্রেসার লো, মাথা কাজ করছে না। সবে ওপর তলা মাথা ঘুরে পড়তে শুরু করেছে। এটা নীচতলা পর্যন্ত যাবে।” এখন তৃণমূল বলতেই পারে যে, শুভেন্দু অধিকারী বিন্দুমাত্র সৌজন্য জানে না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন অসুস্থ, তখন তার অসুস্থতা নিয়েও আক্রমণ করছেন। কিন্তু এটা সুস্থ বা অসুস্থতার ব্যাপার নয়। শুভেন্দু অধিকারী রাজনৈতিক আক্রমণ করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সুস্থ হয়ে উঠুন, এটা তিনিও চান। কারণ রাজনৈতিক শত্রুতা রয়েছে শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তাই রাজনৈতিক কথা বলেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কপালে আঘাত পাওয়ার বিষয়টাকে উল্লেখ না করে সুকৌশলে তাকে আক্রমণ করে এই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা বুঝিয়ে দিলেন, বিরোধীদের প্রতিবাদ থেকে শুরু করে সন্দেশখালির ঘটনা, দুর্নীতি বিভিন্ন ইস্যুতে প্রচন্ড টেনশনে রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। তাই তাদের নেতা-নেত্রীদের মাথা ঘুরতে শুরু করেছে। যার ফল স্বরূপ তৃণমূল এখন শুভেন্দু অধিকারীর এই কথাকে গায়ে লাগিয়ে জ্বলে পুড়ে ছারখার হচ্ছে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। পর্যবেক্ষকদের মতে, রাজনৈতিক হোক বা প্রশাসনিক, সব দিক থেকেই এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অত্যন্ত চাপে রয়েছেন। তিনি কিভাবে পড়ে গিয়েছেন, সেটা অবশ্যই তদন্তের বিষয়। তবে শুভেন্দু অধিকারীর এই ধরনের আক্রমণের পর অনেকে আবার বলছেন, বিরোধীরা যখন এত শক্তিশালী হয়, তখন কোনো মুখ্যমন্ত্রী হয়ত ঠিক থাকতে পারেন না। দীর্ঘদিন ধরেই শুভেন্দু অধিকারীর একের পর এক বাক্যবান এবং রাজনৈতিক কৌশল এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে চাপে রেখেছে সামনে লোকসভা। বিজেপিতে এই রাজ্য থেকে একটা বড় মাপের আসন পেতে চলেছে এবং কেন্দ্রের সরকার গঠন করা যে একপ্রকার নিশ্চিত, সেটা খুব ভালো করে জানে তৃণমূল কংগ্রেস। তাই হয়ত এত টেনশন রাখতে না পেরেই ধপধপ করে পড়ে যাচ্ছে তৃণমূলের নেতা-নেত্রীরা। বিরোধীদের পক্ষ থেকে এটাও বলা হচ্ছে যে, ভোট পেলেই তো চোট পাওয়ার মত ঘটনা ঘটতে দেখতে পাওয়া যায়। তাই এইসব দেখে রাজ্যের মানুষ অভ্যস্ত। স্বভাবতই এই পরিস্থিতিতে শুভেন্দু অধিকারীর আক্রমণ আরও টেনশনে ফেলে দিল তৃণমূল কংগ্রেসকে। দিনের শেষে তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা। আপনার মতামত জানান -