এখন পড়ছেন
হোম > জাতীয় > ফের পুরোনো কৌশলে বাজিমাতের চেষ্টা মোদীর, জেনে নিন

ফের পুরোনো কৌশলে বাজিমাতের চেষ্টা মোদীর, জেনে নিন


 

গোটা দেশে রাজনৈতিক বিরোধী দলগুলোর পক্ষ থেকে যতই এনআরসি এবং সংশোধিত নাগরিক আইনের বিরুদ্ধে গণআন্দোলন গড়ে তুলতে দেখা যাক না কেন, দিল্লির সভা থেকে কিন্তু স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিমাতেই বিরোধীদেরকে একহাত নিতে দেখা গেল ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে। একদিকে যখন দেশের বুদ্ধিজীবী মহল থেকে শুরু করে বিভিন্ন রাজনৈতিক, অরাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান থেকে সংশোধিত নাগরিক আইনের বিরোধিতা করা হচ্ছে, সেই সময় কার্যত নিজের পুরনো মেজাজেই বিক্ষোভ বিরোধীদের উপর চাপাতে দেখা গেল প্রধানমন্ত্রীকে।

সূত্রের খবর, এদিনের সভা থেকে নরেন্দ্র মোদি বলেন, “প্রতিবেশী দেশ থেকে আসা হিন্দু শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার ভাবনা তার মাথায় প্রথমে আসেনি।” এদিন কার্যত এই ভাবনার পিছনে জাতির জনক মহাত্মা গান্ধী, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ এবং অসমের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈদের মত কংগ্রেস নেতাদের নাম করতে দেখা যায় প্রধানমন্ত্রীকে।

শুধু তাই নয়, দেশের উত্তর থেকে দক্ষিণ, বিভিন্ন জায়গায় সংখ্যালঘু সমাজ থেকে শুরু করে ছাত্রদের মধ্যে সংশোধিত নাগরিক আইনের বিরুদ্ধে যে প্রতিবাদ আন্দোলন সৃষ্টি হয়েছে, তার সম্পূর্ণ দায় যে বিরোধীদের, সেই কথা বোঝাতে খামতি রাখেননি। নিজের ভঙ্গিমাতে তিনি বলেন, “কংগ্রেসের সঙ্গী কারা! শহুরে নকশাল, দিদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, বাম, কিছু দলিত নেতা এবং বুদ্ধিজীবীরা।” তবে বরাবরের মতনই বিরোধীদের আন্দোলনের পেছনে পাকিস্তানের হাত এবং তাদের জঙ্গিদের মদতের কথা বাদ পড়েনি নরেন্দ্র মোদির বক্তব্যে।

এদিন দিল্লির সভা থেকে প্রধানমন্ত্রী নিজের বক্তব্যে বলেন, “আমাকে রাস্তা থেকে সরানোর চেষ্টা হচ্ছে। মোদির পুতুলে যেতে আসতে যত ইচ্ছে, মোদির পুতুল জ্বালান। কিন্তু দেশের সম্পত্তি জ্বালাবেন না।” গরিব মানুষের ক্ষয়ক্ষতির দিকে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী এদিনের সভা থেকে বলেন, “গরিবের অটো, বস্তি জ্বালাবেন না। গরিবকে মেরে কি পাবেন! যত রাগ, যত ঘৃণা, যত আঘাত, মোদির উপরেই করুন।”

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন জায়গায় যে হিংসার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তা নিয়ে কংগ্রেসের অবস্থানকে কটাক্ষ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, “100 বছরের পুরনো দলের কোনো নেতা শান্তি বজায় রাখা বা পুলিশের উপরে হামলা নিয়ে কোনো কথাই বলছেন না। অথচ স্বাধীনতার পর থেকে দেশে 33000 পুলিশ মারা গিয়েছেন। এদিন দিল্লিতে অবস্থিত পুলিশ স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানানোর আবেদন করতে দেখা যায় প্রধানমন্ত্রীকে। দেশের বিভিন্ন জায়গায় যে হিংসা চলছে, সেই হিংসায় গান্ধী পরিবার এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ বাম নেতৃত্ব এবং শহুরে নকশালদের রিমোট কন্ট্রোল রয়েছে বলে ইঙ্গিত করেন নরেন্দ্র মোদী।

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এদিনের সভা থেকে নিজের বক্তব্যের মাধ্যমে একদিকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যেমন হিন্দুত্বের ভোটব্যাঙ্ককে রক্ষা করার চেষ্টা করেছেন, অন্যদিকে তেমনই দেশের অশান্তির পিছনে বিরোধীদের ভূমিকাকে টেনে নিয়েছে কার্যত তাদেরকে কাঠগোড়ায় দাঁড় করিয়েছেন তবে নরেন্দ্র মোদি। এদিনের বক্তব্য জুড়ে ছিল, কংগ্রেস বিরোধিতার সুর। বিগত দিনে গুজরাট বিধানসভা নির্বাচনে সোনিয়া গান্ধীর নরেন্দ্র মোদী সম্পর্কে উক্তি “মওত কা সওদাগর” মন্তব্যকে পুনরায় তুলে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, “আমার দ্বিতীয় বার জিতে আসার শোক এখনও মেটেনি। দুই দশক ধরে ওরা আমার পিছনে লেগে আছে। রন্ধে রন্ধে চিনি এদের।”

পাশাপাশি কংগ্রেস যত ষড়যন্ত্র করবে, মানুষের প্রেম নরেন্দ্র মোদির প্রতি তত বাড়বে বলেও মন্তব্য করতে দেখা যায় প্রধানমন্ত্রী মোদিকে। নিজের বক্তব্য থেকে কার্যত তিনি বোঝাতে চেয়েছেন, দেশের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো যত তোষণের রাজনীতি করবেন, জাতীয়তাবাদী জনগণের সমর্থন তত বাড়বে ভারতীয় জনতা পার্টির প্রতী।

বস্তুত, বরাবরই নরেন্দ্র মোদী যেভাবে বক্তব্য রেখে থাকেন, সেভাবেই পাকিস্তানে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে তেরঙ্গা হাতে আওয়াজ তোলার ডাক দিয়েছেন এদিনের সভা থেকে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বর্তমানে দেশজুড়ে এনআরসি এবং সংশোধিত নাগরিক আইন নিয়ে আসামে যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, তাতে করে জনগণের মত শেষ পর্যন্ত কার দিকে যাবে, তা স্পষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। তবে দেশের খ্যাতনামা বক্তাদের মধ্যে নরেন্দ্র মোদী যে একজন, সেই বিষয়ে অবশ্য সন্দেহ নেই কারো মধ্যেই। তাই নিজের ভাষণশৈলী এবং ব্যক্তিত্বের দ্বারা বিরোধীদের কতটা কন্ট্রোল করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী! সেদিকে অবশ্যই লক্ষ্য থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!