এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > লক্ষ টাকার ‘কাটমানি’, কাঠগড়ায় পঞ্চায়েত – পঞ্চায়েত সমিতি

লক্ষ টাকার ‘কাটমানি’, কাঠগড়ায় পঞ্চায়েত – পঞ্চায়েত সমিতি

 

রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের শাসনাধীন বিভিন্ন পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতির বিরুদ্ধে উন্নয়নমূলক কর্মসূচি চালানোর ক্ষেত্রে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ একাধিকবার উঠেছে। আর এই নিয়ে শাসকদলের ভোগান্তির সীমা নেই বলেও মত প্রকাশ করেছেন একাধিক রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

সম্প্রতি সেরকমই একটা চিত্র ধরা পরল কাঁকসার গ্রাম পঞ্চায়েতে শুরু করে পঞ্চায়েত সমিতিতে। অভিযোগ, এখানে বিভিন্ন ধরনের বড় কাজকে 5 লক্ষ টাকার নিচের স্কিমে পরিণত করে নিজেদের পকেট ভর্তি করা এবং কাটমানি খাবার রাস্তা প্রশস্ত করতে ব্যস্ত তৃণমূল নেতৃত্ব। নিয়ম অনুযায়ী, 5 লক্ষ টাকার নিচের কাজের ক্ষেত্রে টেন্ডার না ডেকে কাজ ভাগ করা যায়। তাই সেক্ষেত্রে দুর্নীতির অনেকটাই সুযোগ থাকে বলে মত একাংশের।

আর সেই কারণেই বড় কাজের স্কিম থাকলেও সমস্ত কাজ ছোট হিসেবে ভাগ করে দেওয়া হয়। আর এই কাজে শুধু তৃণমূল কংগ্রেস জড়িত তাই নয়, বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সরকারি আধিকারিকদের বিরুদ্ধেও সমানভাবে দুর্নীতিতে সঙ্গ দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন একাধিক বিরোধী দল থেকে শুরু করে স্থানীয় মহলের একাংশ।

দলের মধ্যে একটি বিশেষ শ্রেণী উন্নয়নমূলক কাজে দুর্নীতির মাধ্যমে নিজেদের পকেট ভর্তি করার প্রবণতা প্রকাশ করায় ক্ষুব্ধ অনেক নিচুতলার তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরাও এক্ষেত্রে বাদ পড়েনি। 100 দিনের কাজে কাঁকসা ব্লকের অন্তর্গত সাতটি পঞ্চায়েত রয়েছে। আর এই সাতটির মধ্যে 6 টি পঞ্চায়েত তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত। শুধু পঞ্চায়েতই নয়, স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতিও তৃণমূল কংগ্রেসের দখলে রয়েছে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

জানা যায়, কাঁকসা পঞ্চায়েত সমিতিতে সম্পতি 100 দিনের কাজের টেন্ডার ডাকা হয়। এক্ষেত্রে মূল্যায়ন না থাকায় অনলাইনের জায়গায় অফলাইনে দরপত্র গ্রহণ করা হয়। কাজের প্রকৃতি দেখে অনেক ঠিকাদাররাই মনে করেছিলেন, কোনোভাবেই কাজটি 30 লক্ষ টাকার নিচে হবে না।

কিন্তু পরবর্তীতে আশ্চর্য হয়ে লক্ষ্য করা যায়, নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য একশ্রেণী 2 লক্ষ টাকার কাজকে পঞ্চায়েত সমিতির লাভের বিপরীতে গিয়ে 5 লক্ষ টাকায় ভাগ করে নামিয়ে আনে। অপরদিকে ক্ষতি স্বীকার করে ডাকা হয় টোল ট্যাক্সের টেন্ডার। জানা যাচ্ছে, এই ব্যাপারে বাদানুবাদ বিশাল আকৃতি ধারণ করলে অবশেষে টেন্ডার প্রক্রিয়া বাতিল করতে হয়।

তবে বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, কাঁকসা পঞ্চায়েত সমিতির অন্তর্গত বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েতে যেমন টেন্ডারিং প্রক্রিয়াকে নিয়ে বারবার বিতর্কে যাওয়ায় উন্নয়নের কাজ ব্যাহত হচ্ছে, তাতে করে বিপুল পরিমাণে ক্ষতির মুখে পড়তে হতে হচ্ছে গ্রাম পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতিকে। যদিও স্থানীয় কাকসা ব্লকের বিডিও সুদীপ্ত ভট্টাচার্যের মতে, স্বচ্ছভাবে টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। আর এক্ষেত্রে যদি কোনো রকম অভিযোগ আসে, তাহলে তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।

অপরদিকে তিনি জানান, সিন্ডিকেট দুর্নীতি নিয়ে তিনি কোনো রকম অভিযোগ পাননি। যদিও তৃণমূল কংগ্রেসের স্থানীয় নিচুতলার কর্মীদের একাংশের মতে, আসলে ব্লকের মধ্যেই সরকারি কর্মী থেকে শুরু করে দলীয় বিভিন্ন পদাধিকারীরা নিজেদের জাল বিস্তার করে রেখেছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যজুড়ে দলের ভাবমূর্তি রক্ষা করার জন্য “দিদিকে বলো” কর্মসূচির মাধ্যমে মানুষের অভিযোগ গ্রহণ করছেন এবং তার প্রতিকার করছেন, এরকম অবস্থায় দলীয় স্তরে যদি এই ধরনের দুর্নীতির অভিযোগ সামনে আসে, তাহলে অত্যন্ত অস্বস্তিতে পড়তে হতে পারে তৃণমূল কংগ্রেসকে।

যদিও এই ব্যাপারে তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি জিতেন্দ্র তিওয়ারি বলেন, “তৃণমূলের কোনো নেতা বা কর্মীরা যদি কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকে, তাহলে এক্ষুনি আমাকে জানান। আমরা দল থেকে তাদের তাড়িয়ে দেব। তৃণমূলে থেকে এইভাবে আর্থিক দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেবে না দল।”

তবে জিতেন্দ্রবাবু যাই বলুন না কেন, ওয়াকিবহাল মহলের মতে, পঞ্চায়েত সমিতি এবং গ্রাম পঞ্চায়েতের টেন্ডার নিয়ে ওঠা বিভিন্ন রকমের অভিযোগ রীতিমতো প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছে রাজ্যের শাসক দলকে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!