এখন পড়ছেন
হোম > অন্যান্য > মৃণালিনীর প্রেম -(লাভ স্টোরি)- কলমে অপরাজিতা – পর্ব ১০

মৃণালিনীর প্রেম -(লাভ স্টোরি)- কলমে অপরাজিতা – পর্ব ১০


মৃণালিনীর পরীক্ষা আপাতত শেষ হয়েছে। বাড়িতে এর মধ্যে সৌদামিনী আর বিভাস দু বার এসেছিলো। নানা কথায় বার বার অভি এসে হাজির হয়েছিল মৃণালিনী নিজেকে সামলেছে। সৌদামিনী একটু সাধারণ, সে এত কিছু বোঝেনি।

অভির সঙ্গে সৌরভের একটা মনোমালিন্য তৈরী হয়েছিল সেসব মিটেছে। এখন আস্তে আস্তে অভি বের হতে চাইছে সেই সব কিছু থেকে। শ্রেয়াসীর থেকে। বুঝছে এখন ও শ্রেয়সী সত্যি কোনোদিন ওর ছিল না। তাছাড়া শ্রেয়সী এখন ওর কাছে অতীত,তাকে ভুলে যাওয়ায় শ্রেয়, কিন্তু ভুলতে পারছে কি?
হয়তো না তবে ভুলবেই।

এর মাঝে একদিন সৌরভ গান শুনছে আর নিজের মনে মনে গানটা গাইছে। হঠাৎ করে অভির চোখের সামনে একটা মুহূর্ত ভেসে উঠলো। কি? সেই বিভাসদার বিয়েটা, বিয়ের দিন রাত্রে জলসায় এই গানটা গাইছিলো মৃণালিনী।

না ভালো লাগছে না গানটা শুনতে , সৌরভকে বললো গানটা নিজের মনে মনে গা। সৌরভ – কেন? কি হলো আবার?
অভি – কিছু না এমনি।

সৌরভ – আরে, বলনা।

অভি – বললাম তো কিছু না।

ফিরে আসার পর থাকে শুধু ওই মেয়েটাকে বার বার দোষ দিয়েছে রাগ দেখিয়েছে,ওর উপরে। কিন্তু সত্যি কি ওর দোষ ছিল, শ্রেয়সী তার আগে থেকেই লিভ টুগেদার করছিলো ওই ছেলেটার সাথে। ওদের সম্পর্কটা ভাঙতোই, শ্রেয়সী ওর উপরে দোষ চাপিয়ে ভাঙতে চাইছিলো সম্পর্কটাকে। এই প্রথম ওর মৃণালিনীর কথা মনে পড়লো অন্যভাবে, মনে হলো কেমন আছে? এখনো গান গায় নিশ্চই? এখোনো ঐরকমভাবে উদ্ঘাট সাজে? ভাবতে ভাবতেই হেসে ফেললো।

সৌরভের মনে পড়েছে – অভি কয়েকটা রেকর্ডিং পাঠিয়েছিল মৃণালিনীর। আর বলেছিলো বিয়ের রাত্রে ব্যাপক গান গেয়েছে, এই গানটা বলেছিলো কিনা মনে পড়ছে না , তবে কি ?সৌরভ দেখছিলো অভিকে।
বললো – মৃণালিনী খুব ভালো এই গানটা গেয়েছিল না ?

অভি অন্যমনস্ক হয়েই হুম, ভীষণ ভালো। ওর মতো আর কাউকে গাইতে শুনিনি, সব ভালো শুধু………… থমকে গেলো।

সৌরভ – শুধু ?

অভি – কিছু না, ছাড় না।

আর একদিন সকালে রান্নার মাসিকে বলতে গেছে চা খাবে , হঠাৎ ডাস্ট মিল্কের ডিব্বা চোখে পড়লো, ডিব্বাটা হাতে তুলে নিয়ে দেখতে দেখতে হাসলো,মনে পরে গেছে ওর সেই মৃণালিনীর সাথে চুরি করে ডাস্ট মিল্ক খাওয়ার কথা, এখনো খায় ও ডাস্ট মিল্ক? খাবেনা কেন? ডিব্বাটা রেখে চলে যাচ্ছিলো, ফের ঘুরে এলো, ডিব্বা খুলে এক চামচ মুখে ভরলো, চোখ বন্ধ করা অভির, শুধু অস্ফুটে বললো – সরি।,

সৌরভ দেখছিলো আড়াল থেকে ,কিছু হয়েছে ওর? শ্রেয়সী যাবার দুঃখ নাকি মৃণালিনী কোথাও না কোথাও ?

ফের বললো অভি – সরি মৃণালিনী,,,,,,,,,,ব্যাস তাহলে কোথাও না কোথাও মৃণালিনী ভিড় করেছে অভির মনে !সৌরভ কিছু বললো না।

চলছে এইভাবেই কিন্তু আস্তে আস্তে সরছে শ্রেয়সী, ভিড় বাড়াচ্ছে মৃণালিনী। আর এক দিন বৃষ্টির দিনে সৌরভকে নিয়েই বৃষ্টিতে  ভিজেছে অভি। পাগলের মতো ভিজেছে , যেমন আগে ভিজতো। শ্রেয়াসীর এগুলো ন্যাকা ন্যাকা লাগতো। অভির সব কিছুই অপছন্দ ছিল, আস্তে আস্তে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছিল।

সৌরভ এবার অভিকে বিভাসদার বিয়ের সব কথা জানতে চাইলো অভির কাছে। না বোঝেনি অভি , সেখানেও অভির কথায় শুধুই মৃণালিনী, সেই গোবর মাখা থেকে, বুকুর মা ভাবা, উদ্ঘাট সাজা, সেলফি তোলা, জুতো লুকাতে যাওয়া, বাবার বকা খাওয়া, ওর বাবার নজরে রাখা, বন্ধুদের কথা, মৃণালিনীর গান গাওয়া। বিভাসদদের বাড়ি আসা, মৃণালিনীর সাথে একটু একটু করে ভাব হওয়া, গুঁড়ো দুধ চুরি করে খাওয়া, বৃষ্টিতে ভেজা, মেলায় নাগরদোলায় অভিকে ভয়ে জড়িয়ে ধরা, অভির মীরা বাই গিফট করা মৃণালিনীকে। তারপর ওর সাথে ফুচকা ,চ্যাট খাওয়া। আর তারপর এতসব।

অভি বললো – খুব খারাপ বিহেভ করেছি ওর সাথে, ও জেনে বুঝে করেনি কিছু।

সৌরভ – কি লিখেছিলো যেন?

অভি – ফিলিংস লাভ উইথ অভিজাত, এন্ড টোয়েন্টি থ্রী আদারাস।বলেই হা হা করে হেসে উঠলো। সাথেই সৌরভও

বললো সিরিয়াসলি মনে বোঝে না ও, একবার দেখার ইচ্ছা আছে আমার।

অভি দাঁড়া দেখাচ্ছি। এখনো অভির মোবাইলে বিয়ের ছবিগুলো আছে। শুধু বিয়ের নয়, অভি মৃণালিনীর সব মুহূর্তের ছবি এখনো ওর হোয়াটসাপে পাওয়া যাবে। হোয়াটসাপে তখন পাঠিয়েছিল ভাই দাদা, বোন যারা আছে বাড়ির। না কিছু ডিলেট করেনি। একই পিকচার দুবার পেলে সেটা ডিলিট করেছে কিন্তু না মৃণালিনীর পিকচার ডিলিট করেনি। কেন কে জানে?

মোবাইলটা সৌরভের হাতে দিলো। সৌরভ দেখছে একে একে। দেখা শেষে বললো। তুই মৃণালিনীর সাথে জড়িয়ে গিয়েছিস অভি।

অভি চমকে তাকালো সৌরভের দিকে – না ,তোর মনে হচ্ছে।

সৌরভ -আমাকে বিয়েবাড়ির গল্প যে বলি সাবটাতো মৃণালিনীর গল্প। তাছাড়া এখনো কেন পিচ্চুরিগুলো ডিলিট করিসনি। এখানে তো শুধু তুই আর মৃণালিনী ,ডিলিট করলে কি হতো।

 

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

 

অভি – ওসব কিছু নয়।

সৌরভ – ভেবে দেখ , শ্রেয়সী যেতোই, আর শ্রেয়সীকে তুই মনের মধ্যে জোর করে আটকে রেখেছিলি। কিন্তু দূরত্ত্ব একটা ছিল আর সেই সুযোগেই মৃণালিনী ঢুকে পড়েছে তোর মনে , মানলে মান নাহলে ছাড়।

না মানেনি অভি, ওসব কিছু নয়। মৃণালিনীকে খারাপ খারাপ কথা বলেছে যে কারণে ওর খারাপ লাগছে এখনো আর কিছু নয়।

ভেবেছে অনেক সৌরভের কথাগুলো সত্যিই কি তাই? দূর, ইটা কোনো কথা হলো। কিন্তু শ্রেয়সীকে এখন আর তেমন মনে পড়েনা। কষ্ট হয়না তেমন ওর জন্য, লোকও করেছে অভি। মাঝে মাঝেই ওর আর মৃণালিনীর পিকচারগুলো দেখে অভি। সৌরভ কি সত্যি বলেছে সত্যিই মৃণালিনী ? না সেসব কিছু নয়।

আচ্ছা ওই বিয়ের দিনের মৃণালিনীর গানগুলো কেউ ভিডিও করেনি ? অনেকে ভিডিও করছিলো তো, না জানা হয়নি , সম্বিৎ ( বিভাসের কাকার ছেলে) ও ছিল রাত্রে। ওর কাছে ?

কল করে জানলো আছে, সেন্ড করে দিয়েছে সম্বিৎ। শুনেছে অনেকবার,সেন্ড করেছে চেনা জানা যারা আছে। সম্বিতের কাছেই শুনেছে বিভাসদার দাদার ছেলের জন্মদিন পালন করা হবে এবার সে পাঁচ বছর হলো।আসতেও বলেছে অভিকে কল করে। না আর ইচ্ছা নেই যাবার। মৃণালিনীও জানে বিভাসদার দাদার ছেলের জন্মদিন , অনেক করে ওকে যেতে বলেছে সবাই, বাড়ির সবাই যাবে। পরের দিন কিছু একটা পুজো আছে ফের মেলা বসবে আবার থাকতে বলবে , দাদা বৌদির থাকবে , না মৃণালিনী থাকবে না আর কিছুতেই, ইচ্ছা করেই। যেতেও চায়নি ভয় হয়েছিল যদি অভি আসে , আর ওর সামনে সামনি হবে না মৃণালিনী কোনো দিনও।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!