প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – রাজ্যের তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই তোষনের অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা। ক্ষমতায় আসার পরেই মুসলিম সমাজের ইমামদের ইমাম ভাতা দেওয়া হলেও, কেন ব্রাহ্মণ সমাজের পুরোহিতদের ভাতা দেওয়া হচ্ছে না, তা নিয়ে বিজেপির তরফে বিভিন্ন সময় প্রশ্ন করা হয়েছে। যার জেরে অস্বস্তিতে পড়েছে শাসক দল। তবে সম্প্রতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুরোহিতদের পুরোহিত ভাতা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন।যার জেরে ব্রাহ্মণ সমাজের পুরোহিতরা রীতিমত উজ্জীবিত হয়েছেন। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুরোহিত ভাতার কথা ঘোষণা করার পরেই এবার তৃণমূল কংগ্রেসে প্রায় প্রচুর সংখ্যক পুরোহিত যোগ দিলেন।

সূত্রের খবর, এদিন বর্ধমান বীরহাটায় তৃণমূলের দলীয় কর্মসূচিতে 68 জন এবং কালনায় মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের উপস্থিতিতে প্রায় 20 জন পুরোহিত তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেন। আর ব্রাহ্মণ সমাজের প্রতিনিধিদের তৃণমূলে যোগদান এখন ভারতীয় জনতা পার্টিকে অনেকটাই চাপে ফেলে দিল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

কেননা এতদিন বিজেপির পক্ষ থেকে হিন্দু সমাজের স্বার্থ সুরক্ষিত করা হচ্ছে না বলে দাবি করা হয়েছিল। কিন্তু এবার যেভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার পুরোহিত ভাতা ঘোষণা করার পর তৃণমূল কংগ্রেসে প্রায় 88 জন পুরোহিত যোগদান করলেন, তাতে হিন্দু ভোটব্যাঙ্ক তৃণমূলের আরও শক্তিশালী হতে শুরু করল বলেই দাবি রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।

এদিন এই বিপুল সংখ্যক যোগদান কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে বিজেপিকে কার্যত কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন তৃণমূলের নেতা মন্ত্রীরা। বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হয়ে মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন, “আমি মৃত্যুকে ভয় পাই না। রাজনৈতিক জীবনে বহু বিপদ অতিক্রম করেছি। মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে লাভ নেই। মানুষ আমার রক্ষাকবচ। আমরা ক্ষমতায় এসে গোলাপের কুড়ি দিয়ে রবীন্দ্র সংগীত শুনিয়েছি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের মাথার উপর আছেন। তিনি বলেছিলেন, বদলা নয় বদল চাই‌। আমরা উন্নয়নে মানুষের পাশে থেকে কাজ করে চলেছি। বদল এসেছে বাংলার উন্নয়নে।”

এদিকে কালনা 2 ব্লকের পাথরঘাটায় বিজেপির বিরুদ্ধে রাজনৈতিক কর্মী সভা থেকে গেরুয়া শিবিরের উদ্দেশ্যে আক্রমণাত্মক মন্তব্য করেন তৃণমূলের দেবু টুডু। তিনি বলেন, “বিজেপি নেতার তাদের ল্যাম্পপোস্টে বেঁধে রাখা হবে।” তবে রাজনৈতিক আক্রমণ অপেক্ষা এদিনের এই কর্মসূচিতে সবথেকে বড় আকর্ষণীয় বিষয় পুরোহিতদের তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান।

এতদিন বিজেপির পক্ষ থেকে যে সংখ্যালুঘু তোষণের অভিযোগ তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে করা হচ্ছিল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার পুরোহিত ভাতার ঘোষণা করার পর বিজেপির সেই অভিযোগ ঢোপে টিকছে না বলেই দাবি বিশেষজ্ঞদের। আর এমত পরিস্থিতিতে তৃণমূলের রাজনৈতিক সভায় যেভাবে প্রায় প্রচুর পুরহিত ঘাসফুল শিবিরে নাম লেখালেন, তাতে ভারতীয় জনতা পার্টির অস্বস্তি অনেকটাই বৃদ্ধি পেল বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের। এখন গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।