এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > রাজ্যপালের সঙ্গে মুকুল-শঙ্কুর বৈঠকে তিন গুরুত্বপূর্ণ দাবির পরে মহাচাপে রাজ্যে সরকার?

রাজ্যপালের সঙ্গে মুকুল-শঙ্কুর বৈঠকে তিন গুরুত্বপূর্ণ দাবির পরে মহাচাপে রাজ্যে সরকার?


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া এক্সক্লুসিভ – রাজ্যে সরকারি হাসপাতালে ডাক্তারদের সুরক্ষার প্রশ্নে রাজ্য সরকারের ভূমিকা নিয়ে – বর্তমানে উত্তাল রাজ্য-রাজনীতি। নজিরবিহীনভাবে স্বাস্থ্য পরিকাঠামো ভেঙে পড়ার পরিস্থিতিতে যেতে চলেছে গোটা রাজ্য। এই পরিস্থিতিতে যাঁর সদর্থক পদক্ষেপ সমগ্র পরিস্থিতির সুষ্ঠু অবস্থা ফিরিয়ে আনতে পারত, সেই স্বাস্থ্যমন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রীর ‘একগুঁয়েমি’ ও ‘হুমকি’ পরিস্থিতি আরও জটিল করেছে বলে দাবি বিরোধীদের। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ডাক্তারদের গন-ইস্তফা শুরু হয়ে গেছে। চূড়ান্ত সমস্যার সম্মুখীন রাজ্যের সাধারণ মানুষ।

এই পরিস্থিতিতে বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের নেতৃত্বে শঙ্কুদেব পণ্ডা সহ দশ সদস্যের বিজেপির এক প্রতিনিধিদল রাজভবনে রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর সঙ্গে গিয়ে সাক্ষাৎ করে। সেখানে মুকুল রায় ও শঙ্কুদেব পণ্ডার তিন-তিনটি গুরুত্ত্বপূর্ন দাবি এবার রাজ্য সরকারকে বড়সড় চাপে ফেলে দিল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। এমনকি অত্যন্ত সময়োপযোগী এই তিন দাবিকে কেন্দ্র করে রাজ্যের ডাক্তারদের এই আন্দোলন এবার নতুন দিকে মোড় নিতে পারে বলেও মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।

কিন্তু কি সেই তিন দাবি? শঙ্কুদেব পণ্ডা প্রথমেই রাজ্যপালের কাছে দাবি জানান, কোনো পরিস্থিতিতেই ডাক্তারদের দেওয়া একটিও পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা যাবে না। কেননা, স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী বারেবারে দাবি করেছেন, রাজ্যে যথেষ্ট সংখ্যক ডাক্তার নেই – সেখানে এতজন ডাক্তার একসঙ্গে কাজ ছেড়ে দিলে, রাজ্যের স্বাস্থ্যব্যবস্থার কি হবে? কথা থেকে রাজ্য সরকার এঁদের বদলি আনবেন? ফলে সাধারণ মানুষের জীবন ক্রমশ দুর্বিষহ হয়ে উঠবে। রাজ্যে চিকিৎসার কোনো পরিকাঠামোয় থাকবে না – মুখ্যমন্ত্রীর জেদের জন্য কাতারে-কাতারে সাধারণ মানুষের প্রাণ যাবে রাজ্যজুড়ে, যা কিছুতেই হতে দেওয়া যায় না।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

শঙ্কুদেব পণ্ডার দ্বিতীয় দাবি ছিল আরও মারাত্মক – তিনি রাজ্যপালের কাছে স্পষ্ট জানান, রাজ্যের হাসপাতালগুলিতে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য কোনো পরিকাঠামোই নেই রাজ্য সরকারের, নেই কোনো ‘ইন্টেলিজেন্স’। হঠাৎ করে ৫০০ বা হাজার ‘বহিরাগত’ চলে হাসপাতালে ঢুকে চিকিৎসারত ডাক্তারদের উপর চড়াও হলে, কিভাবে তা সামাল দেওয়া হবে তারজন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা, ফোর্স বা দিকনির্দেশ কোনোটাই নেই রাজ্য সরকারের কাছে। তাই হাসপাতালের ও চিকিৎসকদের সুরক্ষা সুনিশ্চিত করতে রাজ্য সরকারের অতি শীঘ্র কেন্দ্র সরকারের সাহায্য নেওয়া উচিত।

শঙ্কুদেবের বক্তব্য ছিল, কেন্দ্রীয় বাহিনী যে কতটা দক্ষ এর থেকেও বড় পরিস্থিতি সামাল দিতে তাতো লোকসভা নির্বাচনেই প্রমাণিত। পঞ্চায়েত নির্বাচন মুখ্যমন্ত্রী গায়ের জোরে রাজ্যের বাহিনী দিয়ে করতে গিয়েছিলেন, কিন্তু তারফলে বাংলা জুড়ে রক্তগঙ্গা বয়ে গিয়েছিল, অকালে ঝরে গিয়েছিল শতাধিক প্রাণ! কিন্তু, সেই বাংলাতে কেন্দ্রীয় বাহিনী ভোট করানোর দায়িত্ব পেতেই – রাজ্যের সমস্ত মানুষ নিজের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পেয়ে নিজের ভোট নিজে দিতে পেরেছেন। ফলে, হাসপাতালগুলির সুরক্ষার ভার কেন্দ্রীয় বাহিনীর হাতে গেলে রাজ্যের চিকিৎসকরা যে সুরক্ষিত থাকবেন – সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। রাজ্য তাই এই ব্যাপারে কেন্দ্রের সাহায্য নিক এবং এর জন্য যা খরচ হবে তা কেন্দ্রকে দিয়ে দিক।

শঙ্কুদেব পণ্ডার তৃতীয় দাবি ছিল, এমনিতেই হাসপাতালগুলিতে প্রয়োজনের তুলনায় চিকিৎসকের সংখ্যা অনেক কম। তাই, প্রায় প্রতিটি চিকিৎসককেই অনেক অতিরিক্ত সময় দিতে হয়, তাই এরপরে তাঁদের পক্ষে রোগীর পরিবারের সঙ্গে আলাদা করে সময় দিয়ে তাঁদের অভাব-অভিযোগ শোনা কি আদৌ সম্ভব? ফলে, রাজ্যের প্রতিটি হাসপাতালে ইমার্জেন্সিতে প্রফেশনাল কাউন্সিলিং টীম রাখা উচিত। কেননা, রোগীর পরিবার মানসিকভাবে বিপর্যস্ত বা চিন্তিত থাকবেন – এটাই স্বাভাবিক। ফলে, সেই ধরনের মানুষকে সময় দিয়ে তাঁদের সবরকমের প্রশ্নের উত্তর দেওয়া ও রোগীর পরিবারের সঙ্গে চিকিৎসকদের সমন্বয় ঘটানোর কাজটি করতে পারবেন এইসব ফেশনাল কাউন্সিলিং টীম।

সূত্রের খবর, শঙ্কুদেব পণ্ডার তোলা এই তিনটি দাবি নিয়েই সবিস্তারে ভেবে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠি। তার থেকেও বড় কথা, শঙ্কুদেবের তোলা কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে হাসপাতালের সুরক্ষা ব্যবস্থা ঢেলে সাজানোর যুক্তি – গ্রহণযোগ্য হয়েছে প্রায় সর্বস্তরে। বিরোধীদের দাবি, বিশেষ করে দেখা যাচ্ছে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কোনো হাসপাতালে কোনো ঝামেলা হলে, আঙুল উঠছে শাসকদলের নেতা-কর্মীদের দিকেই। এই পরিস্থিতিতে স্থানীয় পুলিশদের ‘হাত-পা বাঁধা’ থাকছে অনেক সময়। কিন্তু, কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকলে, সেক্ষত্রে দলমত নির্বিশেষে তাঁরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে দুবার ভাববেন না। সবমিলিয়ে, রাজ্যপালের সঙ্গে মুকুল রায়-শঙ্কুদেব পণ্ডাদের এই বৈঠকের পর, উপরোক্ত তিন গুরুত্বপূর্ণ দাবি নিয়ে রীতিমত চাপে পরে গেল রাজ্যে সরকার বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!