বছর খানেকের বেশি সময় হয়ে গেল তিনি তৃণমূল ত্যাগ করে বিজেপিতে যোগদান করেছেন। আর বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকেই একের পর এক ইস্যুতে প্রাক্তন দল তথা প্রাক্তন নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পর্কে সরব হতে দেখা গেছে বিজেপি নেতা মুকুল রায়কে। কখনও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন বিরোধী মহাজোট তো কখনও বা রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে একটা “লিমিটেড কোম্পানি” বলে ঘাসফুল শিবিরের অস্বস্তি বাড়িয়ে দিয়েছেন তিনি।

আর এবার তৃণমূলের মুখপত্রের আয়-ব্যয় সংক্রান্ত খোঁজে শাসকদলের মানিক মজুমদারকে সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে জিজ্ঞাসাবাদ করায় ফের তৃণমূলের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন মুকুল রায়। সূত্রের খবর, এদিন মুকুল রায় বলেন, “সিবিআই নিজের ইচ্ছায় তদন্ত করছে না। চিটফান্ড নিয়ে সিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ সুপ্রিম কোর্ট দিয়েছে। তাই আইন মেনে সিবিআইকে সাহায্য করা উচিত”।

অন্যদিকে গত ১৯ শে জানুয়ারি তৃণমূলের পক্ষ থেকে বিজেপি বিরোধী ব্রিগেড সমাবেশে উপস্থিত দেশের নয় দলের নয় নেতাকে নিয়েও এদিন সমালোচনার সুর শোনা যায় মুকুল রায়ের গলায়। তৃণমূল নেত্রী তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রীত্বের দাবিদার হওয়া প্রসঙ্গে এদিন মুকুল রায় বলেন, “বিরোধী মহাজোটের কতজন প্রধানমন্ত্রী হবেন! সপ্তাহের প্রথম দিন স্ট্যালিন, দ্বিতীয় দিন অখিলেশ, তৃতীয় দিন মায়াবতী, চতুর্থ দিন ফারুক আব্দুল্লাহ, পঞ্চম দিন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। আর বাকি দুই দিন শনি ও রবিবার সব অফিসে ছুটি থাকে। সেদিন কোনো কাজ থাকে না। তাই সেদিনের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলাবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়”।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, বিরোধী মহাজোটের বিভিন্ন নেতার মধ্যে প্রায় সবাই প্রধানমন্ত্রিত্বের দাবিদার – এই কথা বুঝিয়েই সেই বিরোধী মহাজোটকে ধাক্কা দেওয়ার চেষ্টা করলেন বিজেপি নেতা মুকুল রায়। লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় পদ্ম ফোটানোর মূল দায়িত্ব রয়েছে একদা তৃণমূলের অঘোষিত দুনম্বর নেতার কাঁধেই। আর তাই, নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে ততই সিবিআই তদন্ত থেকে শুরু করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন সবকিছু নিয়েই শাসকদলের অস্বস্তি বাড়াতে উঠেপড়ে লেগেছেন মুকুল রায় বলেই ধারণা রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।