এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > নন্দীগ্রাম যেন গলার কাঁটা, করুন পরিনতি মমতার ! শেষের দিন কি আরও কাছে ?

নন্দীগ্রাম যেন গলার কাঁটা, করুন পরিনতি মমতার ! শেষের দিন কি আরও কাছে ?


প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- রাজ্য রাজনীতিতে বরাবরই টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে পরিচিত নন্দীগ্রাম। বিগত বাম সরকারের 34 বছরের শাসনকে রীতিমতো চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছিল এই নন্দীগ্রামের আন্দোলন। যে আন্দোলন অধিকারী পরিবারের হাত ধরে শুরু হয়েছিল, পরবর্তীতে তার ফায়দা নিয়েছিলেন রাজ্যের তৎকালীন বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যার ফলস্বরূপ আজকে তিনি মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর তিনি হয়তো সেই অধিকারী পরিবারের অবদানকে ভুলে গিয়েছেন। যার কারণে পরিবারবাদের বিরুদ্ধে সেই অধিকারী পরিবারের মেজো ছেলে শুভেন্দু অধিকারী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সেই নন্দীগ্রামেই হারিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন, নন্দীগ্রামের মাটি শাসকের পক্ষে যায় না। এখানকার আন্দোলন ন্যায়ের পক্ষে। গোটা রাজ্যজুড়ে বিভিন্ন ইস্যুতে এই নন্দীগ্রামেরই সেই শুভেন্দু অধিকারী রীতিমতো তৃণমূলকে নাস্তানাবুদ করে দিচ্ছেন। তবে যে নন্দীগ্রাম তৃণমূলকে ক্ষমতায় এনেছিল, এবার সেই নন্দীগ্রাম থেকেই কি তৃণমূলের শেষের শুরু হতে চলেছে? যত দিন যাচ্ছে, ততই সেই সম্ভাবনা প্রকট হচ্ছে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

প্রসঙ্গত, এদিন তৃণমূলের পরিণতি নিয়ে বড় বার্তা দেন শুভেন্দু অধিকারী। দলের একটি কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার পর সিপিএমের যে পরিণতি হয়েছিল, সেই একই দশা তৃণমূলেরও যে হবে, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি। যদিও বা শুভেন্দু অধিকারীর মুখ থেকে এই কথা প্রথম শোনা যাচ্ছে না। এর আগেও তিনি এইরকম কথা একাধিক বার বলেছেন। তবে এদিন তার মুখে নন্দীগ্রাম নিয়েও তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য শোনা গিয়েছে। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা বলেন, “সিপিএম চিরকাল ক্ষমতায় থাকেনি, তৃণমূলও চিরকাল ক্ষমতায় থাকবে না। সিপিএমের শেষের শুরু হয়েছিল এই নন্দীগ্রাম থেকেই। তৃণমূলেরও শেষের শুরু হবে গ্রাম থেকে।” অর্থাৎ বিরোধী দলনেতার বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে স্পষ্ট, তিনি যে লড়াই শুরু করেছেন, সেই লড়াই তিনি শেষ পর্যন্ত নিয়ে যাবেন। আর নন্দীগ্রাম থেকে বিরোধী আন্দোলনের এই লড়াই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সুখের সংসারে  দাবানলের  সঞ্চার করবে বলেই মত বিরোধীদের।

বিশেষজ্ঞদের মতে, শুভেন্দু অধিকারী যে লড়াইটা বিরোধী দলনেতা হিসেবে একা লড়ে যাচ্ছেন, তা কুর্নিশ জানানোর মত। এর আগেও রাজ্যে একাধিক বিরোধী দলনেতা এই তৃণমূল সরকারের আমলে ছিল। কিন্তু তাদের এইভাবে আওয়াজ তুলতে দেখা যায়নি। মাটি কামড়ে পড়ে থেকে এইভাবে সরকারকে চ্যালেঞ্জ জানাতে দেখা যায়নি। কিন্তু শুভেন্দু অধিকারীর অন্য ধাতু দিয়ে তৈরি। বিজেপির অনেক বড় বড় নেতা অনেক বড় বড় কথা বলতে পারেন। কিন্তু শুভেন্দু অধিকারী নিজের এলাকাকে সামলানোর পাশাপাশি গোটা রাজ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে রীতিমতো চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিচ্ছেন। প্রত্যেকটি ইস্যু ধরে ধরে বিরোধী আন্দোলন যেভাবে করতে হয়, তেমনভাবেই পা ফেলছেন তিনি। আর তার এক একটি পদক্ষেপ বুঝিয়ে দিচ্ছে, আগামী দিন তৃণমূল সরকার যদি ক্ষমতা থেকে বিদায় নেয়, তাহলে নন্দীগ্রামের ভূমিপুত্র এমন একজন, যিনি এই সাম্রাজ্য বিদায়ের পেছনে প্রধান কারিগর হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবেন। আর এদিনের শুভেন্দু অধিকারীর মন্তব্যের পর একাংশ বলছেন, তৃণমূল সরকারের হাতে সময় হয়ত ধীরে ধীরে ফুরিয়ে আসছে।

পর্যবেক্ষকদের প্রশ্ন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি অতই বড় নেত্রী হবেন, তাহলে শুভেন্দু অধিকারীর কাছে বিধানসভা নির্বাচনে তাকে হারতে হলো কেন? শুভেন্দু অধিকারী তো এটা প্রমাণ করে দিয়েছেন যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অপরাজেয় নন। তাকেও পরাজিত হতে হয়। আর তারপর সেই শুভেন্দুবাবুর কাছে পরাজিত হওয়ার রাগে তার ওপর কত বদলা নেওয়ারই না চেষ্টা করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু কিছুতেই স্বস্তি পাননি তিনি। বারবার আদালতে গিয়ে রাজ্য সরকারের প্রতিহিংসা পরায়ন আচরণের মুখোশটা টেনে খুলে দিয়েছেন এই শুভেন্দুবাবু। তবে চিরদিন কেউ ক্ষমতায় থাকে না। তাই তৃণমূল একদিন ক্ষমতা থেকে যাবে। আর তৃণমূলকে এই বিদায় দেওয়ার পেছনে নন্দীগ্রামের অবদান আবার চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। গ্রামের মানুষের রায়েই বিদায় নিতে হবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে। দিনের শেষে তেমনটাই বলছে সমালোচক মহল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!