প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, এখন থেকে ২৩ সে জানুয়ারির দিনটি পরাক্রম দিবস হিসেবে পালন করা হবে। নেতাজিকে বিশেষ শ্রদ্ধা জানাতেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। তবে, কেন্দ্রের এই উদ্যোগকে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল ও বাম শিবির। নেতাজির পরিবারের সদস্যরাও কেন্দ্রের এই পদক্ষেপে খুশি নয়।

প্রসঙ্গত, ফরওয়ার্ড ব্লকের পক্ষ থেকে নেতাজির জন্মদিনকে দেশপ্রেম দিবস হিসেবে ঘোষণা করার দাবি জানানো হয়েছিল, মুখ্যমন্ত্রীও একমত ছিলেন সে বিষয়ে। সেদিন তিনি জাতীয় ছুটির দাবি জানান। এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তকে তীব্র কটাক্ষ করেছে ফরওয়ার্ড ব্লক। ফরওয়ার্ড ব্লকের নেতা নরেন চট্টোপাধ্যায় এ প্রসঙ্গে জানিয়েছেন যে, বিজেপি সরকারের কোনো জ্ঞান নেই। এই সরকার শুধুমাত্র সাম্প্রদায়িকতা আর দাঙ্গা বোঝে।

ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা নরেন চট্টোপাধ্যায়ের এই কটাক্ষের জবাব দিলেন বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার। বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার জানালেন যে, তাঁদেরকে কে বাধা দিয়েছে সে দিনটিকে তাঁদের মত পালন করতে? তিনি জানালেন, দেশপ্রেম দিবস ও পরাক্রম দিবস এই কথার মধ্যে পার্থক্য করে তাঁরা কি বোঝাতে চাইছেন? তিনি জানালেন, নরেন চট্টোপাধ্যায়দের মতো নেতারা এখন এক্সপায়ার করে গেছেন। যে সিপিএম একসময় নেতাজিকে অপমান করেছিল, নেতাজিকে তোজোর কুকুর বলে অসম্মান করেছিল, তাদেরই কুকুর হয়ে থেকেছেন ফরওয়ার্ড ব্লক নেতারা। ক্ষমতার লোভ, লালবাতি ওয়ালা গাড়ির জন্য দীর্ঘ সময় কাটিয়েছেন তাঁরা সিপিএমের সঙ্গে।

তিনি অভিযোগ করেছেন যে, নেতাজির আদর্শ একেবারে ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছে ফরওয়ার্ড ব্লক। যারা সিপিএমের লেজুড় হয়ে ক্ষমতা ভোগ করেছে। তাদের মুখে নেতাজি নিয়ে কোন কথাই এখন মানায় না। নেতাজি হলেন সারা দেশের গর্ব। নেতাজীকে নিয়ে গর্ব অনুভব করে সকলে। এই কারণেই পরাক্রম দিবস ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেছেন যে, ফরওয়ার্ড ব্লকের নেতারা শুধুমাত্র নেতাজীকে নিয়ে রাজনীতি করেছেন, তাঁর নাম ভাঙিয়ে খেয়েছেন। নেতাজির কোনো কাজই করেনি তাঁরা। তাই, তাদের কথার আর কোন মূল্য নেই।

নেতাজির জন্মদিনের দিন জাতীয় ছুটির দাবি জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্রের এই উদ্যোগ সম্পর্কে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় জানালেন যে, পরাক্রম দিবস হিসেবে ঘোষণা করায় তাঁরা সন্তুষ্ট নন। মুখ্যমন্ত্রী চেয়ে ছিলেন এই দিনটিকে দেশপ্রেম দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হোক। কেন্দ্রের পক্ষ থেকে তা মেনে নেওয়া হয়নি। তিনি জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী ২৩ সে জানুয়ারি মিছিল করবেন। তারা তাদের মতে দিনটিকে পালন করবেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, নির্বাচনে সুবিধা পেতেই কেন্দ্র এই বিশেষ ঘোষণা করেছে।

কেন্দ্রের এই ঘোষণা সম্পর্কে শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার জানালেন যে, এখানে একটা ছায়া যুদ্ধের মতো ব্যাপার শুরু হয়েছে। সবসময় কারও না কারও সঙ্গে লড়াই করছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই নামকরণের পিছনে যে ভাবনা আছে, সে ভাবনা সমালোচনা যোগ্য বিষয়। নেতাজির প্রপৌত্র চন্দ্র বসু নেতাজির জন্মদিনকে দেশপ্রেম দিবস হিসেবে পালন করার পক্ষপাতী। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।