এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > নীতির প্রশ্নে কড়া আক্রমণ, দলত্যাগী মুকুলকে নিয়ে বিস্ফোরক শুভেন্দু!

নীতির প্রশ্নে কড়া আক্রমণ, দলত্যাগী মুকুলকে নিয়ে বিস্ফোরক শুভেন্দু!


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –  2020 সালের ডিসেম্বর মাসে অমিত শাহের হাত ধরে বিজেপিতে যোগদান করার দিন মুকুল রায়ের কথা তুলে ধরেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিজেপির অন্যান্য নেতাদের কথা বলার পাশাপাশি বিজেপির তৎকালীন সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায়ের কথা তুলে ধরেন শুভেন্দুবাবু। তিনি বলেন, “মঞ্চে উপস্থিত মুকুলদা আমাকে বারবার করে বলেছে, শুভেন্দু যদি আত্মসম্মানবোধ থাকে, তাহলে তৃণমূল ছেড়ে বেরিয়ে আয়। বিজেপিতে যোগদান কর। আমরা একসাথে আত্মসম্মান নিয়ে কাজ করতে পারব‌। আমি তার কথা রাখতে পেরেছি। কাজেই আমি খুশি।”

অর্থ্যাৎ 2017 সালে তৃণমূল কংগ্রেসকে প্রথম ধাক্কা দিয়ে মুকুল রায় বিজেপিতে যোগদান করেছিলেন‌। যার পর তৃনমূলে ভাঙ্গন ধরতে শুরু করেছিল। আর বিধানসভা নির্বাচনের আগে শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করার পর তৃণমূল যে দ্বিতীয় ধাক্কা খেতে চলেছে, তা কার্যত স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল রাজনৈতিক মহলের কাছে।

তবে শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগদান করার পর যখন তিনি অগ্রজ মুকুল রায়কে পেছনে ফেলে বিজেপির কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য নেতৃত্বের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে শুরু করেছিলেন, তখন বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির প্রার্থী হয়েও এবং দলের সর্বভারতীয় সহ সভাপতির দায়িত্বে থাকা সত্ত্বেও, তেমনভাবে তৃণমূলের বিরুদ্ধে মন্তব্য করতে দেখা যায়নি মুকুল রায়কে। পরবর্তীতে একদিকে নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পরাজিত করে শুভেন্দু অধিকারী যেমন বিজেপির প্রার্থী হিসেবে জয়লাভ করেন, ঠিক তেমনই কৃষ্ণনগর উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রে জয়লাভ করেন মুকুল রায়।

পরবর্তীতে অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ হওয়া সত্ত্বেও, মুকুল রায়ের বদলে বিজেপির বিরোধী দলনেতা করা হয় শুভেন্দু অধিকারীকে। আর তখন থেকেই দলের সিদ্ধান্ত এবং তাকে গুরুত্ব না দেওয়া যে খুব একটা পছন্দ হয়নি মুকুল রায়ের, তা ধীরে ধীরে স্পষ্ট হতে শুরু করে। যা আরও স্পষ্ট হয়ে যায় গত শনিবার। যেখানে হঠাৎ করেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করতে তৃণমূল ভবনে রওনা দেন মুকুল রায় এবং তার পুত্র শুভ্রাংশু রায়। আর তারপরেই ভারতীয় জনতা পার্টি ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি। এদিকে এই ঘটনার পর থেকেই বিজেপিতে তৈরি হয় আশঙ্কা।

অনেকে বলতে শুরু করেন, মুকুল রায়ের মত বিচক্ষণ রাজনীতিবিদ যখন তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিলেন, তখন বিরোধী দলে থাকা বিজেপির অনেক জনপ্রতিনিধি ঘাসফুল শিবিরের সামিল হবেন‌। তবে প্রথম দিন থেকেই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এই ব্যাপারে তৃণমূলের উদ্দেশ্যে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন। দলত্যাগ বিরোধী আইন কিভাবে কার্যকর করতে হয়, তা তিনি দেখিয়ে দেবেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন নন্দীগ্রামের বিজেপির বিধায়ক।

তবে শুভেন্দু অধিকারী যে কথাই বলুন না কেন, বিজেপিতে ভাঙ্গনের আশঙ্কা দিনকে দিন বাড়ছে। আর এই পরিস্থিতিতে মুকুল রায় তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেওয়ায় বিজেপি যে যথেষ্ট বিড়ম্বনার মুখে পড়ল, সেই ব্যাপারে কার্যত নিশ্চিত একাংশ। তবে এই গোটা বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে নারাজ একসময় তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিজেপিতে মুকুল রায়ের সঙ্গে ঘর করে আসা বর্তমান রাজ্য বিজেপির বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এক্ষেত্রে বিজেপিতে কেউ অপরিহার্য নয় বলে বুঝিয়ে দিলেন তিনি। পাশাপাশি বিজেপি মুকুল রায়কে জয়লাভ করার সুযোগ করে দিয়েছে বলেও দাবি করতে দেখা গেল নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ককে।

সূত্রের খবর, এদিন শুভেন্দু অধিকারীকে মুকুল রায়ের দলবদল নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। যার উত্তর দিতে গিয়ে হেভিওয়েট এই বিজেপি নেতা বলেন, “মুকুল রায় কেন, কৃষ্ণনগর উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রে যদি বিজেপির বুথ সভাপতিকেও দাঁড় করানো হত, তাহলে তিনিও নির্বাচনে জয়লাভ করতে পারতেন। বিজেপি আদর্শের ভিত্তিতে জয়লাভ করেছে। ফলে সেখানে এক্স, ওয়াই, জেড কোনো ফ্যাক্টর নয়।” এদিকে মুকুল রায় তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিতেই তার পথ ধরে অনেকে ঘাসফুল শিবিরে নাম লেখাতে চাইছেন বলে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে।

এদিন এই প্রসঙ্গে বিরোধী দলনেতা বলেন, “যারা এই মুহূর্তে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিতে চাইছেন, তারা নিরাপদে থাকবার জন্যই তা করতে চাইছেন।” স্বাভাবিক ভাবেই 2019 সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি ব্যাপক সাংসদ পাওয়ার পেছনে মুকুল রায়ের অবদান রয়েছে বলে দাবি করেন একাংশ। পরবর্তীতে বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি বিরোধী দলে জায়গা পেলে মুকুল রায়কে যদি ঠিকমত ব্যবহার করা হত, তাহলে বিজেপি অনেক বেশি আসন পেয়ে ক্ষমতার কাছাকাছি পৌঁছে যেত বলেও দাবি করা হয়।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

কিন্তু মুকুল রায় ঠিকমত জায়গা না পাওয়ার কারণে বিজেপি থেকে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছে এবং বিজেপির ফলাফল খারাপ হয়েছে বলে দাবি একাংশের। আর এই পরিস্থিতিতে গোটা বিষয়কে সম্পূর্ণরূপে ভিত্তিহীন বলে বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেন শুভেন্দু অধিকারী‌। এক্ষেত্রে বিজেপিতে কেউ অপরিহার্য নয় বলে দাবি করলেন তিনি। অর্থাৎ নেতা-কর্মী এবং সমর্থকদের ঐক্যবদ্ধ লড়াইকে স্বীকৃতি দিয়ে মুকুল রায়ের দলবদলকে কার্যত পাত্তা দিতে চাইলেন না নন্দীগ্রামের বিজেপির বিধায়ক।

একাংশ বলছেন, তৃণমূল কংগ্রেসে মুকুল রায় যোগদান করার পর ভারতীয় জনতা পার্টি এবং শুভেন্দু অধিকারীকে চাপে রাখবার জন্য তাকে কাজে লাগাতে পারে তৃণমূল কংগ্রেস। এক্ষেত্রে রাজ্য রাজনীতিতে শুভেন্দু অধিকারীর ওপর চাপ সৃষ্টি করার জন্য কি কৌশল প্রয়োগ করা যায়, তা মুকুল রায়ের কাছ থেকে শুনে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে ঘাসফুল শিবির। হয়ত বা শুভেন্দু অধিকারীও সেটা উপলব্ধি করেছেন।

আর সেই কারণে মুকুল রায়ের যে কোনো ক্যারিশমা নেই বিজেপির জয়লাভের পেছনে, তা বুঝিয়ে দিলেন তিনি। পাশাপাশি মুকুল রায়ের পথ ধরে যারা বিজেপি ত্যাগ করছেন, তাদের নীতিবোধ নিয়েও প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন শান্তিকুঞ্জের মেজো ছেলে। সব মিলিয়ে দলবদল করার পর প্রথম শুভেন্দু অধিকারীর আক্রমণের মুখে পড়লেন মুকুল রায়। এখন শুভেন্দুবাবুর এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে মুকুলবাবুর পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া আসে কিনা, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!