নতুন বছরে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বড় কাল! ভাঙ্গন কি চিন্তা বাড়াবে ঘাসফুলের! তৃণমূল রাজনীতি রাজ্য January 1, 2021 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – 1998 সালের পয়লা জানুয়ারি তৃণমূল কংগ্রেস প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর সিপিএমকে উৎখাত করাই ছিল তৃণমূলের প্রধান লক্ষ্য। আর তখন তৃণমূলের কর্মী সমর্থকরা একযোগে লড়াই করে সিপিএমকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য শোরগোল বাধিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে দলের যে পুরনো কর্মীরা 2011 সাল পর্যন্ত লড়াই করে দলকে সাফল্যের মুখ দেখালেন, ক্ষমতায় আসার পরে সেই পুরনো কর্মীরাই কার্যত পেছনের সারিতে চলে গিয়েছিলেন। যেখানে বিরোধী দল থেকে আগত নেতাকর্মীদের সামনে নিয়ে এসে তাদের গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ ছিল পুরনো কর্মীদের। যার ফলে ব্লকে ব্লকে, অঞ্চলে অঞ্চলে, জেলায় জেলায় এবং রাজ্যের বিভিন্ন নেতার মধ্যেও তৈরি হয়েছিল গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। বর্তমানে নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে সকলেই তৎপর হয়ে উঠেছেন। 2021 এর পা দিয়েছি আমরা। কিন্তু এই 2021 রাজনীতিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবার আরও একটি বিধানসভা নির্বাচন দরজায় কড়া নাড়ছে। আর এই নির্বাচনে তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সেদিক থেকে বর্তমানে তৃণমূলের অনেক হেভিওয়েট নেতা থেকে শুরু করে জনপ্রতিনিধিরা গেরুয়া শিবিরে নাম লেখাতে শুরু করেছেন। আর এর প্রধান কারণ দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এবং পুরনোদের গুরুত্বহীন করে দেওয়া বলেই মনে করছেন একাংশ। স্বাভাবিকভাবেই নতুন বছরে যখন বিধানসভা নির্বাচন, তখন বছরের একদম শুরুর দিন থেকেই তৃনমূল কংগ্রেস এই দ্বন্দ্ব বন্ধ করতে এবং নিজেদের ঘর সামলাবে কি পদক্ষেপ গ্রহণ করে, সেটাই এখন চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে বিশেষজ্ঞদের কাছে। ইতিমধ্যেই মুকুল রায় থেকে শুরু করে শুভেন্দু অধিকারী এমনকি অনেক হেভিওয়েট বিধায়ক এবং সাংসদ যোগ দিয়েছেন ভারতীয় জনতা পার্টিতে। বিজেপির হুঁশিয়ারি, আগামী দিনে তৃণমূল কংগ্রেসে পিসি, ভাইপো ছাড়া আর কেউ থাকবে না। অর্থাৎ এক্ষেত্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া তৃণমূল কংগ্রেসে আর কোনও নেতা মন্ত্রী থাকতে পারবেন না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে গেরুয়া শিবির। স্বাভাবিকভাবেই বিজেপির পক্ষ থেকে যখন এই হুঁশিয়ারি দেওয়া হচ্ছে, তখন জল্পনা বাড়িয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের বিভিন্ন জেলার নেতা থেকে শুরু করে জনপ্রতিনিধিরা দলের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে বেশ কিছু মন্তব্য করতে শুরু করেছেন। যা শাসকদলের আশঙ্কাকে আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। তাহলে কি বিজেপির পক্ষ থেকে যে দাবি করা হচ্ছে, তা সত্যি! আর এখানেই একাংশ বলছেন, তৃণমূলকে অবিলম্বে নিজেদের ঘর সামলানোর দিকে মনোযোগী হওয়া উচিত। কেননা 2011 সালে তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পর বিরোধীদলের ঘর ভাঙতে শুরু করেছিল। সেক্ষেত্রে সংগঠনে যাদের জায়গা পাওয়া উচিত, তাদের দিকে বিন্দুমাত্র নজর দেওয়া হয়নি। যার ফলে একসময় দলকে ক্ষমতায় নিয়ে আসা পুরনো কর্মীরা কার্যত বঞ্চিত হয়ে পড়েছিলেন। আর তাই সেই সমস্ত পুরনো নেতাকর্মীরা এখন নাম লেখাতে শুরু করেছেন ভারতীয় জনতা পার্টিতে। আর সিপিএমকে সরানো সেই পুরনো নেতাকর্মীরা যদি এখন বিজেপিতে নাম লেখাতে শুরু করেন, তাহলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাংগঠনিক দল হিসেবে পরিচিত বিজেপির সাথে কিভাবে লড়াই দিয়ে সাফল্য পাবেন, সেটাই সংশয়ের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে অনেক তৃণমূল নেতার কাছে। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি একবার ময়দানে নামেন এবং পুরনো নেতাকর্মীদের ফিরিয়ে আনার জন্য তৎপরতা দেখা হলেই সেই সমস্ত নেতাকর্মীরা আবার দলের সক্রিয় হতে শুরু করবেন। কিন্তু মুখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আহ্বান জানালেও, কাজে সেক্ষেত্রে যথেষ্ট গলদ থেকে যাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। যার কারণে জেলায় জেলায় কার্যত পেছনের সারিতে পড়ে যাওয়া নেতাকর্মীরা এখন চলে যাচ্ছেন বিরোধী শিবির ভারতীয় জনতা পার্টিতে। অনেকে বলতে শুরু করেছেন, 2021 সাল তৃনমূল কংগ্রেসের কাছে অত্যন্ত চ্যালেঞ্জের একটি বছর। কেননা এই বছরে তৃণমূল কংগ্রেসকে সাফল্য পেয়ে ক্ষমতায় আসতে হবে। আর বিজেপির সাথে প্রধান লড়াইয়ে যেভাবে তৃণমূলের ঘর ভাঙতে শুরু করেছে, তাতে এই চ্যালেঞ্জের বছর তৃণমূল কংগ্রেস উত্তীর্ণ হতে পারবে কিনা, সেটাই এখন লক্ষণীয় বিষয় রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের কাছে। স্বভাবতই এমত পরিস্থিতিতে অনেকে আবার বলছেন, সিপিএমকে উৎখাত করা কোনো ব্যাপার ছিল না তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষে। দীর্ঘ লড়াই আন্দোলন করে সিপিএমের মতো দলকে উৎখাত করে দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তখন তার সাথে ছিলেন দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা। কিন্তু এখন দলের অন্দরে তৈরি হয়েছে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। সেদিক থেকে সেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সামাল দিয়ে যদি একইভাবে সকলকে নিয়ে লড়াই করার আহ্বান জানান নেত্রী এবং তাতে যদি সবাই শামিল হন, তাহলে বিজেপিকে আটকানো খুব একটা চাপের হবে না বলেই দাবি তৃণমূলের ঘনিষ্ঠ মহলের। সব মিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের । আপনার মতামত জানান -