এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > মালদা-মুর্শিদাবাদ-বীরভূম > পৌষমেলা ও পৌষ উৎসব পালন নিয়ে নিয়ে বড়সড় সিদ্ধান্ত বিশ্বভারতীর কোর্ট কমিটির, জেনে নিন বিস্তারিত!

পৌষমেলা ও পৌষ উৎসব পালন নিয়ে নিয়ে বড়সড় সিদ্ধান্ত বিশ্বভারতীর কোর্ট কমিটির, জেনে নিন বিস্তারিত!


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – করোনার বলি শান্তিনিকেতনের ঐতিহ্যমণ্ডিত পৌষ মেলা। করোনা সংক্রমনের কারণে এ বছর পৌষ মেলা হচ্ছে না শান্তিনিকেতনে। পৌষ মেলার শতবর্ষেরও অধিক দীর্ঘ ইতিহাসে এ বছর নিয়ে, মোট তিনবার বন্ধ থাকছে পৌষ মেলা। ইতিপূর্বে, ১৯৪৩ সালে মন্বন্তরের কারনে, ১৯৪৬ সালের দাঙ্গার কারণে বন্ধ ছিল পৌষ মেলা। এ বছর করোনা সংক্রমনের কারণে বন্ধ রাখা হচ্ছে পৌষ মেলা। গতকাল সোমবার বিশ্বভারতীর কোর্ট কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে যে, শুধুমাত্র নিয়ম রক্ষার জন্য পৌষ উৎসব পালিত হবে, কিন্তু বন্ধ রাখা হবে পৌষ মেলা।

গতকাল সোমবার বিশ্বভারতীর কোর্ট কমিটির সদস্যদের মধ্যে একটি অনলাইন বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল। সেই বৈঠকে কমিটির ৯০ জন সদস্যের মধ্যে ৭০ জন উপস্থিত ছিলেন। এই বৈঠকে বিশ্বভারতীর অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনার সঙ্গে সঙ্গে পৌষ মেলা নিয়েও আলোচনা চলে। বৈঠকে বেশকিছু সদস্য প্রশ্ন করেছিলেন যে, করোনা সংক্রমণ কালে পৌষ মেলার আয়োজন করা কি আদৌ সম্ভব হবে? গতকালের এই বৈঠকে অধিকাংশ সদস্যই মেলা বন্ধের পক্ষে সওয়াল করেছিলেন। শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত হল যে, করোনা পরিস্থিতির কারণে পৌষ মেলা বন্ধ রাখা হচ্ছে। তবে, সমস্ত রকম স্বাস্থ্যবিধি মেনে অল্প কয়েকজন মানুষকে নিয়ে পৌষ উৎসব পালন করা হবে।

বিশ্ব ভারতীর পৌষ মেলা পালনের ঐতিহ্য শতবর্ষ প্রাচীন। প্রতিবছর ৭ ই পৌষ থেকে শুরু হয় পৌষ মেলা। আশ্রমের ভেতরে ছাতিমতলার উপাসনা, বৈতালিক, আশ্রমবন্ধুদের শ্রাদ্ধবাসর, খ্রিস্টোৎসব এই সমস্ত কিছুকে নিয়ে শুরু হয় পৌষ উৎসব। পৌষ মেলা প্রসঙ্গে বিশ্বভারতীর বাংলা বিভাগের অধ্যাপক মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায় গতকাল জানালেন যে, ১৮৪৩ খ্রিস্টাব্দের ৭ ই পৌষ ব্রাহ্মধর্মে দীক্ষা গ্রহণ করেছিলেন দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর। ১৮৪৫ সালে ব্রাহ্মদের মধ্যে সৌহার্দ্য বৃদ্ধি করতে তাঁর ইচ্ছাতে কলকাতায় গোরিটি বাগানে এক মেলার আয়োজন করা হয়েছিল।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এরপর ১৮৮৮ সালে দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর একটি ট্রাস্ট ডিড তৈরি করেছিলেন, সেখানে তিনি লিখেছিলেন যে, ট্রাস্টিরা যেন পৌষ মেলা শান্তিনিকেতনে আয়োজন করার চেষ্টা করেন। এরপর ১৮৯১ সালের ৭ ই পৌষ শান্তিনিকেতনের উপাসনা মন্দিরের প্রতিষ্ঠা। মন্দির প্রতিষ্ঠার দিনে দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের দীক্ষা দিবসের বাৎসরিক উপলক্ষে মন্দিরে উপাসনার মধ্য দিয়ে পৌষ উৎসব পালন শুরু হলো। ১৮৯৪ সাল থেকে প্রতিবছর পৌষ উৎসব পালন করা হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে অধ্যাপক মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায় আরো জানালেন যে, দীর্ঘ ১২৬ বছরের ইতিহাসে মেলা বন্ধ রাখা হয়েছে ১৯৪৩ সালে দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের দীক্ষা গ্রহণের শতবর্ষে তেতাল্লিশের মন্বন্তর এর কারণে। এরপর পৌষ মেলা বন্ধ রাখা হয়েছিল ১৯৪৬ সালে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার কারণে। তবে ১৯৪৩ ও ১৯৪৬ সালে মেলা বন্ধ থাকলেও উৎসব পালন করা হয়েছিল। এবছরও পৌষ মেলা বন্ধ রাখা হচ্ছে, কিন্তু পৌষ উৎসব পালিত হবে।

গতকাল বিশ্বভারতীর কোর্ট কমিটির এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালেন আশ্রমিক থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের অনেকেই। তবে এ প্রসঙ্গে বোলপুর ব্যবসায়ী সমিতির সদস্য সুনীল সিংহ জানান যে, মেলার মাঠ ঘিরে দেওয়া নিয়ে তাঁরা যখন প্রতিবাদ করেছিলেন, তখনই তাঁরা বুঝতে পেরেছিলেন যে, বিশ্বভারতীর পক্ষ থেকে মেলা বন্ধ করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। গতকালের এই সিদ্ধান্ত সেটাই প্রমাণ করে দিল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!