এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > বিজেপি > রাজ্য বিজেপিতে কি সর্বেসর্বা শুভেন্দু? কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সিদ্ধান্তে জল্পনা!

রাজ্য বিজেপিতে কি সর্বেসর্বা শুভেন্দু? কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সিদ্ধান্তে জল্পনা!


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –  তৃণমূলের একসময়কার দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা হিসেবে পরিচিত শুভেন্দু অধিকারী এখন ভারতীয় জনতা পার্টির প্রধান সেনাপতি। বিধানসভা নির্বাচনের আগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের হাত থেকে বিজেপির পতাকা নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেছিলেন তিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সতীর্থ রাজ্য মন্ত্রীসভার প্রাক্তন সদস্য সহ বিগত বাম আমল থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছায়াসঙ্গী থাকা শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগদান করার পর রীতিমত অস্বস্তি বাড়তে থাকে তৃণমূল কংগ্রেসের।

একসময় কংগ্রেস প্রভাবিত জেলাগুলোতে সংগঠন বিস্তারের জন্য এই শুভেন্দু অধিকারীর ওপর সবথেকে বেশি ভরসা রেখেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। আর সেই শুভেন্দু অধিকারী বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপিতে যোগদান করার ফলে রীতিমত চাপ বাড়তে থাকে ঘাসফুল শিবিরের। শুভেন্দু অধিকারীকে বিজেপি নিজেদের দলে যোগদান করানোর পেছনে যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ক্ষমতাচ্যুত করার অন্যতম উদ্দেশ্য রয়েছে, তা কার্যত স্পষ্ট হয়ে যায়।

তবে বিজেপির সেই লক্ষ্য পূরণ হয়নি। 77 টি আসন পেয়ে বিরোধীদলের জায়গা দখল করেছে গেরুয়া শিবির। অন্যদিকে তৃতীয়বার বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে রাজ্যের ক্ষমতা দখল করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। তবে বিজেপি বিরোধী দলের জায়গা দখল করলেও, খুব একটা নিরাশ হননি শুভেন্দু অধিকারী। তাকে বিধানসভার বিরোধী দলনেতা করা হয়েছে। সেদিক থেকে রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ সহ অন্যান্য নেতাদের থেকে কি অনেকটাই এগিয়ে রয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী! কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পক্ষ থেকে তাকে দিল্লিতে তলব করা নিয়ে রীতিমত জল্পনা ছড়িয়ে পড়েছে বিজেপির অন্দরমহলে।

সূত্রের খবর, গত সোমবার বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পক্ষ থেকে দিল্লিতে ডেকে পাঠানো হয় বাংলার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে। আর তারপরেই মঙ্গলবার দিল্লিতে পৌঁছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দীর্ঘক্ষন বৈঠক করেন নন্দীগ্রামের বিজেপির বিধায়ক। আর অমিত শাহের সঙ্গে শুভেন্দু অধিকারীর এই রুদ্ধদ্বার বৈঠক এখন নানা মহলে গুঞ্জন তৈরি করেছে। অনেকেই বলতে শুরু করেছেন, শুভেন্দু অধিকারী বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা।

সেদিক থেকে ঘরে এবং বাইরে সরকারকে চাপে রাখতে বিজেপির তুরুপের তাস একমাত্র তিনিই। তাই তার সঙ্গে কথা বলে দলের সাংগঠনিক ব্যাপারটিও হয়ত বা এখন ঠিক করে নিতে চাইছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। অনেকে আবার বলছেন, এখনও পর্যন্ত রাজ্য বিজেপির সভাপতি রয়েছেন দিলীপ ঘোষ। তাহলে কি শুভেন্দু অধিকারীকে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পক্ষ থেকে তলব এবং তার সঙ্গে আলোচনার মধ্য দিয়ে স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে, দিলীপ ঘোষ ধীরে ধীরে রাজ্য বিজেপিতে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ছেন? কদর বাড়ছে শুভেন্দু অধিকারীর?

গেরুয়া শিবিরের একাংশের দাবি, এমনটা ভাবার কোনো কারণ নেই। দিলীপ ঘোষ তার সাংগঠনিক কাজকর্ম চালিয়ে যাবেন। কিন্তু শুভেন্দু অধিকারী যেহেতু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূল কংগ্রেসকে খুব ভালোমতোই চেনেন, তাই তাকে বিরোধী দলনেতা করে শাসকদলের চাপ বাড়ানোর কৌশল নেওয়া হয়েছে। আর বিরোধী দলনেতার ভূমিকা গণতন্ত্রে অপরিসীম। সেদিক থেকে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পক্ষ থেকে শুভেন্দু অধিকারীকে ডেকে আগামী দিনে হয়ত বা পথ চলার টনিক দিয়ে দিলেন অমিত শাহেরা।

বিশ্লেষকরা বলছেন, সাংগঠনিক দিক দিলীপ ঘোষ পরিচালনা করলেও এখন তার থেকে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় রয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। সংগঠন বলতে যেমন নিজের দলে শ্রীবৃদ্ধি করা, ঠিক তেমনই কৌশলগতভাবে প্রতিপক্ষ দলের ওপর চাপ বাড়ানো। সেদিক থেকে বিধানসভার ভেতরে এবং বাইরে শাসকদলের অস্বস্তি বাড়িয়ে দিতে পারেন একমাত্র শুভেন্দু অধিকারী। কারণ তিনি বিরোধী দলনেতা। তাই তার মধ্যে দিয়েই এবার বাংলার সংগঠন দেখতে চাইছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

শুভেন্দু অধিকারীকে দিল্লিতে তলব করার ঘটনাতে তা স্পষ্ট হয়ে গেল বলেই মনে করা হচ্ছে। অনেকে আবার বলছেন, বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার পর থেকেই তৃনমূল কংগ্রেস আরও ফুলে-ফেপে উঠতে শুরু করেছে। বিধানসভা নির্বাচনের আগে যারা বিজেপিতে এসেছিলেন, তারা আবার সুর বদল করতে শুরু করেছেন। অনেকেই প্রকাশ্যে মন্তব্য করে বিজেপির অস্বস্তি বাড়িয়ে দিচ্ছেন।

আর এই পরিস্থিতিতে একসময় তৃণমূল কংগ্রেসে থাকা শুভেন্দু অধিকারী যেভাবে অন্য দল থেকে নেতা নিয়ে এসেছিলেন এবং তৃণমূলকে শক্তিশালী করেছিলেন, এবার সেই শুভেন্দু অধিকারীর উপর ভরসা রাখতে চাইছে বিজেপি। অর্থাৎ ভোটে পরাজয়ের পর বিরোধী দলের জায়গা দখল করে যাতে বিজেপির এখন কোনো জনপ্রতিনিধি শাসক দলে নাম না লেখান, তার জন্য শুভেন্দু অধিকারী বিজেপির কাছে বড় রক্ষাকবচ বলেই মনে করা হচ্ছে। যার জেরে তাকে বেশি গুরুত্ব দিতে চাইছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।

তবে এই গুরুত্বের পরিমাণ যদি দিনকে দিন বাড়তে শুরু করে, তাহলে বিরোধী দলনেতার পাশাপাশি শুভেন্দু অধিকারীকে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পক্ষ থেকে বাংলার সংগঠনের ক্ষেত্রেও বড় জায়গা দেওয়া হতে পারে বলে গুঞ্জন ছড়িয়েছে। সব মিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!