সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে কাছে টানার প্রক্রিয়া শুরু করে দিলেন বঙ্গ-বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব জাতীয় রাজ্য November 6, 2018 মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজ্যের ক্ষমতায় আসার নেপথ্যে বেশ বড় ভূমিকা রয়েছে সংখ্যালঘু ভোট ব্যাঙ্কের। একথা অস্বীকার করার উপায় নেই কারো। নেত্রী বরাবরই সংখ্যালঘুদের ভোটব্যাঙ্ক দখলে রাখতে নানার রকম রণকৌশল নেন। এবার তৃণমূল নেত্রীর সেই পদাঙ্কের অনুসরণের পরিকল্পনা রয়েছে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বদের। কারণ তাঁরা ভালোভাবেই বুঝেছে শুধু মাত্র হিন্দুত্বের বুলি আউড়ে ভোটের ময়দানে বাজিমাত করা যাবে না। রামমন্দির যদি লোকসভা ভোটের আগে তৈরি করা সম্ভব হতো তাহলে এটারই বিজ্ঞাপন করে বিজেপির সমর্থনে কিছু মানুষ টানা যেতো। কিন্তু সেটাও মামলার গেরোয় আটকে রয়েছে। এমতাবস্থায় বাংলায় ঘাসফুল উৎখাত করে পদ্ম ফোটাতে হলে দরকার সংখ্যালঘুদের ভোটব্যাঙ্কে থাবা বসানোর। কারণ এই মুহূর্তে একমাত্র সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্কই ভোটে ফারাক তৈরি করতে পারে। সেইজন্যে সংখ্যালঘুদের মন পেতে ময়দানে নামতে দেখা গেল রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষকে। আরএসএসের মুসলিম রাষ্ট্রীয় মঞ্চের বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে সম্প্রীতির বার্তা দিয়ে বোঝাতে চাইলেন বিজেপি যতোটা হিন্দু ততোটাই মুসলমানের। আসলে বিজেপি সকলকে সঙ্গে করেই এগোতে চান। একথা বলে বিজেপি রাজ্য সভাপতি একদিকে যেমন নিজেদের বিভেদের রাজনীতি করার দোষ খন্ডাতে চান,তেমনি সংখ্যালঘুদের ভোটব্যাঙ্ককে বিজেপির দখলে আনতে চান। এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। কারণ,গুজরাটের মতো হিন্দু প্রধান রাজ্যে শুধুমাত্র হিন্দুদের ভোটেই ক্ষমতায় আসা যায় কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে সে কৌশল খাটে না। এখানে সংখ্যালঘু ভোটই একটি বড় ফারাক তৈরি করে দিতে পারে বিরোধীদের সঙ্গে। সেটা বুঝেই লোকসভা ভোটের আগে সংখ্যালঘুরদের সঙ্গে জনসংযোগ তৈরি করার লক্ষ্যে পা বাড়ালেন দিলীপ ঘোষ। দিন কয়েকআগে নয়াদিল্লিতে ‘আরএসএস আরএসএস-এর চোখে ভবিষ্যত ভারত’ শীর্ষক সম্মেলনে মোহন ভাগবত বলেছিলেন,”হিন্দুত্বের মানে সকলকে একসঙ্গে নিয়ে চলা। মুসলিমদের গ্রহণ করাও এর অংশ। মুসলিমদের যদি গ্রহণ করতে না পারি, এটা হিন্দুত্ব নয়। ভারতীয়ত্বই ও একাত্মকরণই হল হিন্দুত্ব।” এই কথাটাকেই অক্ষরে অক্ষরে পালনের ছক কষলেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। উল্লেখ্য,তবে সঙ্ঘের মতো কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের ‘রাজনৈতিক শাখা’-র থেকে দূরত্ব বজায় রেখেই চলতে দেখা যায় দেশের মুসলমান সমাজকে। ২০১৪ সালে দিল্লির মসনদে বসার আগে ভোট প্রচারে ‘সবকা সাথ সবকা বিকাশ’ এর শ্লোগান তুলে এবং ‘আচ্ছে দিন’-এর নাড়া লাগিয়ে মুসলমান সম্প্রদায়ের মন জয়ের চেষ্টা করেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। এবং তাতে সাফল্যও হাতে নাতে পেয়েছিলেন তিনি। মোদী ঝড়ে নাস্তানাবুদ হয়েছিল বিরোধীরা। কিন্তু ৫ বছরের দেশের ছবি পাল্টে গিয়েছে অনেক। মোদী-ম্যাজিক ভ্যানিশ হয়েছে সময়ের সাথে সাথে। বেকারত্ব,পেট্রো পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি,নোটবন্দি,জিএসটি, রাফাল কেলেঙ্কারি,সিআইডির অন্তর্দ্বন্দ্ব ইত্যাদি ইস্যুতে জর্জরিত বিজেপি সরকার। পাশাপাশি রামমন্দির নির্মান নিয়ে সমস্যা তো রয়েইছে। প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে ব্যর্থ মোদী,সংঘ পরিবারের শাখা সংগঠনগুলিই এই ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করেছে। এরকম পরিস্থিতিতে সংখ্যালঘুদের মন জয় করতে তিনতালাকের মতো বিষয়কেও হাতিয়ার করেছেন মোদী সরকার। ফেসবুকের কিছু টেকনিকাল প্রবলেমের জন্য সব খবর আপনাদের কাছে পৌঁছেছে না। তাই আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে সংখ্যালঘুদের পাশে পেতে এবার উদ্যোগী হতে দেখা গেল বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বকেও। সম্প্রতি সেই প্ল্যান মোতাবেকই বাংলাতে সংখ্যালঘুদের নিয়ে বিজয়া সারলেন দিলীপ ঘোষ। এর আগেও সংখ্যালঘুদের নিয়ে আলোচনায় বসেছে বিজেপি। তাঁদের সঙ্গে বৈঠক করতে দেখা গিয়েছে শিবপ্রকাশ ও বাংলার দায়িত্বপ্রাপ্ত অরবিন্দ মেননকে। কিন্তু প্রশ্ন একটা থেকেই যাচ্ছে। সংখ্যালঘু প্রীতির এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে সক্ষম হবেন কি রাজ্য বিজেপি সভাপতি? এই প্রশ্নকে ঘিরেই জোর চর্চা শুরু হয়েছে রাজ্য রাজনীতির অন্দরে। আপনার মতামত জানান -