এখন পড়ছেন
হোম > জাতীয় > নীরবে চলে গেলেন নেতাজির অতি প্রিয় ‘স্পাই’, জানুন তাঁর লোমহর্ষক অজানা কাহিনী

নীরবে চলে গেলেন নেতাজির অতি প্রিয় ‘স্পাই’, জানুন তাঁর লোমহর্ষক অজানা কাহিনী


অনেকটা যেন নিঃশব্দেই চলে গেলেন সরস্বতী রাজমনি। হয়ত অনেকেই নাম শোনেননি, কিন্তু নেতাজি ঘনিষ্ঠ এই ‘স্পাই’ ছিলেন এককথায় ব্রিটিশদের আতঙ্ক। রাজমনি তৎকালীন বর্মাদেশের রেঙ্গুনে জন্মগ্রহন করেন। তাঁর বাবা রেঙ্গুনে বসবাসকারী ভারতীয়দের মধ্যে অন্যতম ধোনি ছিলেন, তাঁর সোনার খনি ছিল সেখানে। মাত্র ১৬ বছর বয়সেই নেতাজির আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে তাঁর সমস্ত অলংকার আজাদ হিন্দ বাহিনীর ফান্ড তৈরির জন্য তিনি স্বেচ্ছায় দিয়ে দেন। পরবর্তীকালে নেতাজি একথা জানতে পেরে নিজে সমস্ত অলংকার ফেরত দিতে যান ‘ছেলেমানুষের আবেগের বশে’ ভুল করে দিয়ে ফেলেছেন বলে। কিন্তু রাজমনির সঙ্গে কথা বলে নেতাজি এতটাই অনুপ্রাণিত হন যে শেষপর্যন্ত তিনি তা নিতে স্বীকৃত হন।

এরপর ১৯৪২ সালে রানী ঝাঁসি বাহিনীতে যোগ দেন সরস্বতী রাজমনি। প্রায় দুবছর ধরে ছেলেদের ছদ্মবেশ ধরে তিনি ও আরো কয়েকজন বাহিনীর জন্য বিভিন্ন তথ্য জোগাড় করতে থাকেন। একবার তাঁর এক সহকর্মী ব্রিটিশদের হাতে ধরা পড়লে তিনি একজন নর্তকীর বেশ ধরে সোজা হানা দেন ব্রিটিশ ক্যাম্পে। এরপর তিনি ব্রিটিশ অফিসারকে মাদক খাইয়ে তাঁর সেই সহকর্মীকে নিয়ে সেখান থেকে পালান, কিন্তু পালানোর সময় তাঁর একটি পা ব্রিটিশদের গুলিতে মারাত্মকরকমভাবে জখম হয়। এরপর নেতাজির ‘অন্তর্ধান’ পর্যন্ত তিনি বাহিনীর গুরুত্ত্বপূর্ন পদে ছিলেন ও নেতাজির অন্যতম ভরসার পাত্রী ছিলেন।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর রাজমনির পরিবার সোনার খনি সহ সবকিছু বিলিয়ে দিয়ে ভারতবর্ষে ফিরে আসেন। কিন্তু ২০০৫ সাল নাগাদ খবরে প্রকাশিত তাঁর আর্থিক অবস্থা এমন পরাজয়ে পৌঁছায় যে দুবেলা দুমুঠো অন্ন সংস্থান করতেও তিনি অপারক হয়ে পড়েন। এমত অবস্থায় তৎকালীন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী কুমারী জয়ললিতা তাঁকে এককালীন ৫ লক্ষ টাকা ও আজীবন থাকার জন্য একটি বিনা ভাড়ার ঘরের ব্যবস্থা করেন। গত ১৩ জানুয়ারী তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে অমর্ত্যলোকের পথে যাত্রা করেন। প্রিয় বন্ধু মিডিয়ার তরফ থেকে ভারতমাতার এই অসামান্য সন্তানের আত্মার চিরশান্তি কামনা করি।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!