এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > শেষমেষ মমতার ফাঁদে পা দিলেন রাজ্যপাল! হতাশ বঙ্গবাসী, তীব্র কটাক্ষ বিজেপির!

শেষমেষ মমতার ফাঁদে পা দিলেন রাজ্যপাল! হতাশ বঙ্গবাসী, তীব্র কটাক্ষ বিজেপির!


প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান রাজ্যপালকে ঠিকমতো বুঝতে পারছেন না শাসক, বিরোধী কোনো পক্ষই। কখনও তিনি এমন পদক্ষেপ নিচ্ছেন, যা প্রতিবাদীদের মধ্যে তৈরি করছে আশা। আবার কখনও বা তার বেশ কিছু পদক্ষেপ সরকারের পক্ষে চলে যাচ্ছে। যার ফলে অনেকেই হতাশ হয়ে যাচ্ছেন। রাজ্যে যখন বেকাররা কাঁদছে, যখন ডিএ না পাওয়ার যন্ত্রণায় দিনের পর দিন আন্দোলনে বসে রয়েছেন সরকারি কর্মচারীরা, তখন এই রাজ্যের সরকার নিজেদের মন্ত্রী, বিধায়কদের বেতন বৃদ্ধির কথা ভাবছে। বিধানসভায় তার জন্য বিশেষ অধিবেশন পর্যন্ত আনা হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত রাজ্যপাল সেই বিলে স্বাক্ষর না করায় তা নিয়ে আলোচনা করতে পারেনি রাজ্য সরকার। যেখানে রাজ্যপালের পদক্ষেপকে সকলেই স্বাগত জানিয়েছিলেন। কিন্তু কিছু সময়ের মধ্যেই সেই রাজ্যপাল সেই বিলে স্বাক্ষর করে দিলেন। যার ফলে মন্ত্রী, বিধায়কদের বেতন বৃদ্ধির বিষয়টি নিয়ে আর কোনো বাধাই রইল না। কার্যত রাজ্যপাল সরকারের পক্ষেই সায় দিয়ে যারা সঠিক বেতনের অভাবে কাঁদছেন, যারা প্রতিবাদে বসে রয়েছেন দিনের পর দিন, উৎসবের মধ্যেও যাদের মধ্যে তৈরি হয়েছে অন্ধকারের আবহ, তাদেরকে আরও বেশি করে চোখের জল ফেলতে বাধ্য করলেন বাংলার সংবিধানিক প্রধান। অন্তত তেমনটাই বলছে রাজ্যের বিরোধী দল গেরুয়া শিবিরের ঘনিষ্ট মহল।

প্রসঙ্গত, বিধানসভায় এর আগে বিশেষ অধিবেশনের দিন মুখ্যমন্ত্রী মন্ত্রী, বিধায়কদের বেতন বৃদ্ধির কথাটি ঘোষণা করেছিলেন। আর সেই সময় থেকেই সেই বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এখনও পর্যন্ত তার স্ট্যান্ড তিনি ক্লিয়ার করে দিয়েছেন। বিরোধী দলনেতার বক্তব্য যে, তাদের বেতন বৃদ্ধির কোনো প্রয়োজন নেই। বরঞ্চ সেই বেতনের অংশ দিয়ে যারা দিনের পর দিন সঠিক বেতনের দাবিতে রাস্তায় বসে রয়েছেন, যারা আন্দোলন করছেন, তাদের পাওনা মিটিয়ে দিক রাজ্যের সরকার। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার নিজেদের সর্বগ্রাসী মনোভাবকে সবসময় জিইয়ে রাখতে চায়। সেই কারণে অবৈধভাবে অর্থ ইনকাম হচ্ছে না। কারণ ইডি, সিবিআইয়ের একটা নজরদারি রয়েছে জন্যই এবার বৈধভাবে মানুষের ট্যাক্সের টাকা তুলে নিয়ে গিয়ে নিজেদের বেতন বৃদ্ধির পথে হাটছেন মন্ত্রী, বিধায়করা। অন্তত তেমনটাই দাবি বিরোধী শিবিরের। তবে সকলে এই ব্যাপারে রাজ্যপাল সিলমোহর না দেওয়ায় একটা সন্তুষ্টির জায়গা খুঁজে পেয়েছিলেন। বিরোধী দল মনে করেছিল যে, রাজ্যপাল অন্তত যারা বেতনের অভাবে আন্দোলন করছেন, তাদের ব্যথার জায়গাটা বুঝবেন। সেই কারণেই তিনি এই বিলে সীলমোহর দেননি। কিন্তু রাজ্যপালও শেষ পর্যন্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাতা ফাঁদে পা দিয়েই ফেললেন। যেভাবে এই রাজ্য সরকার বাংলাকে সর্বনাশের পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, তার সাথী হয়ে গেলেন রাজ্যপালও বলেই দাবি সমালোচকদের।

বিজেপির দাবি, রাজ্যপালের পক্ষ থেকে এই বিলে স্বাক্ষর না করাই উচিত ছিল। কিছু মানুষ আনন্দ করছে, আর কিছু মানুষের পকেটে টাকা নেই। হাহাকার করে ঘুরছেন তারা। ছোট ছোট সন্তান নিয়ে তারা দিনের পর দিন আন্দোলনে বসে রয়েছে, অথচ সেদিকে রাজ্য সরকার যে নজর দেবে না, তা পরিষ্কার। কিন্তু রাজ্যপালের তো অন্তত তাদের বিষয়টি সহানুভূতির সঙ্গে বোঝা উচিত ছিল। তার সম্পর্কে তো মানুষের মধ্যেও একটা আশা জেগেছিল যে, সরকার যতই অন্যায় কাজ করুক, রাজ্যপাল তাকে আটকে দেবেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনিও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাতা ফাঁদেই পা দিয়ে দিলেন। আর যাই হোক, রাজ্যপালের এই মন্ত্রী, বিধায়কদের বেতন বৃদ্ধির বিলে এই মুহূর্তেই অনুমোদন দেওয়া ঠিক হয়নি। এটাতে রাজ্যের মানুষ আরও হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়বেন বলেই দাবি গেরুয়া শিবিরের।

পর্যবেক্ষকদের মতে, বরাবরই যারা বিরোধী রাজনীতি করেন, তাদের কাছে সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষেত্রে বড় অস্ত্র হয়ে দাঁড়ান রাজ্যপাল। রাজ্যের বর্তমান বিরোধী দল অবশ্য রাজ্যপালের ওপর নির্ভর করে রাজনীতি করতে পছন্দ করে না। কারণ শুভেন্দু অধিকারীর মতো নেতা যেখানে রয়েছেন, সেখানে তাদের কোনো ভরসার জায়গা না থাকলেও চলবে। কিন্তু তবুও সাংবিধানিক প্রধানের দায়িত্ব পালন করা রাজ্যপালের আশু কর্তব্যের মধ্যেই পড়ে। যেখানে রাজ্যের অধিকাংশ মানুষ কাঁদছেন, সেখানে মন্ত্রী বিধায়কদের বেতন বৃদ্ধির দিলে তড়িঘড়ি স্বাক্ষর করে দেওয়া রাজ্যপালের পক্ষে উচিত হয়নি বলেই মনে করছেন একাংশ। রাজ্যপাল কতটা কি বুঝে তাতে স্বাক্ষর করেছেন, সেটা সময় বলবে। কিন্তু আখেরে এই বিলে স্বাক্ষর করে তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার দলের সুবিধেই করে দিয়েছেন। আর যারা ন্যায্য দাবিতে লড়ছেন, সঠিক বেতনের দাবিতে লড়াই করছেন, সমকাজে সমবেতনের কথা তুলে ধরে আন্দোলনে বসে রয়েছেন, তাদেরকে আরও একবার হতাশার মুখে ফেলে দিলেন পশ্চিমবঙ্গের সাংবিধানিক প্রধান। দিনের শেষে তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!