এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > সন্দেশখালির ঘটনা নাকি ভুয়ো, মমতার বক্তব্যে নয়া বিতর্ক! কটাক্ষ বিজেপির!

সন্দেশখালির ঘটনা নাকি ভুয়ো, মমতার বক্তব্যে নয়া বিতর্ক! কটাক্ষ বিজেপির!


প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মাঝেমধ্যে এমন কিছু কথা বলে ফেলেন, যার ফলে নিজেই বিতর্কের মুখে পড়ে যান। সন্দেশখালিতে এত বড় ঘটনা ঘটে গেল, সবাই যে ঘটনা নিয়ে লজ্জিত, সবাই ধিক্কার জানাচ্ছে, সেখানে এত কিছুর পরেও এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী আবার সেটাকে অন্য আঙ্গিকে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করলেন। আজকে তিনি নাকি নারী দিবসের মিছিল করছেন! আর সেই মিছিলের শেষে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সন্দেশখালির ঘটনাকে “ভুয়ো” বলে সকলের কাছে হাসির খোরাক হয়ে উঠলেন। তবে একজন মুখ্যমন্ত্রী, তিনি আবার মহিলা, সেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি করে এই ধরনের কথা বলেন? শেখ শাহজাহান এতদিন পরে গ্রেপ্তার হয়েছেন কেন, এর পেছনে যে রাজ্য পুলিশের কারসাজি রয়েছে, এটা আজকে সবাই জানে। আর রাজ্য পুলিশের প্রতি যে আস্থা নেই, শেখ শাহজাহানকে ঠিকমতো টাইট দিতে যে পারে একমাত্র কেন্দ্রীয় সংস্থা, সেটা আদালতের নির্দেশেই প্রমাণিত। যার ফলে সন্দেশখালির বাঘ হিসেবে যিনি নিজেকে এতকাল বড়াই করতেন, সেই বাঘ আজকে সিবিআইয়ের হেফাজতে পড়ে বিড়াল হয়ে গিয়েছেন। আর এসবের মধ্যেই নারী দিবসের সমর্থনে মিছিল করার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা বললেন, তা সত্যিই চমকে দেওয়ার মত। বিরোধীরা বলছেন, মহিলারা যখন কাঁদছেন, যখন তাদের সম্ভ্রমকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দেওয়া হচ্ছে, তখন এত কিছু ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরেও কি করে একজন মুখ্যমন্ত্রী সেটাকে ভুয়ো বলতে পারেন?

প্রসঙ্গত, আজ নারী দিবসের মিছিল শেষে কলকাতায় বক্তব্য রাখেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেখানেই সন্দেশখালি নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে দেখা যায় তাকে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সন্দেশখালিতে একটা ঘটনা ঘটেছে। হিন্দিতে সন্দেশ শব্দের অর্থ হচ্ছে সংবাদ। তাই কেউ কেউ ভুয়ো সন্দেশ ছড়িয়েছেন।” এখন এখানে সকলের প্রশ্ন যে, তাহলে কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলতে চাইছেন যে, সন্দেশখালিতে যে সমস্ত ঘটনা সামনে এসেছে, তা মিথ্যা? মহিলারা তাদের যে সমস্ত অভাবের কথা সামনে এনেছেন, তার সবটাই সাজানো! অর্থাৎ যেমনটা তিনি পার্কস্ট্রিট থেকে শুরু করে বিভিন্ন ঘটনায় বলে থাকেন, এক্ষেত্রেও কি এত বড় ঘটনার পরেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিবেক বোধ জাগ্রত হচ্ছে না? অনেকে বলছেন, সন্দেশখালিতে শেখ শাহজাহান গ্রেপ্তার হওয়ার আগে এবং পরে এই বিষয় নিয়ে তেমন কোনো কিছুই বলতে দেখা যায়নি এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে। তিনি হয়তো নিশ্চিন্তে ছিলেন যে, তার পুলিশের অধীনে শেখ শাহজাহান ছিল, তাই মুখ খুলতে পারবে না। আর তাদের কোনো ভান্ডা ফোর হবে না। কিন্তু গতকাল আদালতের নির্দেশের পর শেখ শাহজাহান যেমন ভেঙে পড়েছেন, ঠিক তেমনই হয়ত চিন্তা বেড়ে গিয়েছে এই রাজ্যের শাসক দলের ওপরতলার নেতা-নেত্রীদের মধ্যে। তারা ভাবছেন যে, পরিস্থিতি খুব একটা ভালো নয়। এখন শাহজাহানের কাছ থেকে সিবিআই সবকিছু বের করতে শুরু করলে, তাদের অনেক পর্দা ফাঁস হয়ে যাবে। তাই ভুয়ো খবর ছড়ানো হয়েছে বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে গিয়ে নিজেই বিতর্কের মুখে পড়ে গেলেন বলেই মনে করছেন একাংশ।

পর্যবেক্ষকদের মতে, দেওয়ালে যখন পিঠ থেকে যায়, তখন মানুষ ভুলকে সত্যি ভেবে অদ্ভূত এক আত্মপ্রসাদ লাভ করে‌‌। আর সেটাই হয়েছে বর্তমানে সরকার এবং তাদের মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যে। তারা ধরাকে সরা জ্ঞান করতে শুরু করেছেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী কেন বুঝতে পারছেন না যে, এসব তিনি যত বলছেন, যত সন্দেশখালির ঘটনাকে মিথ্যা বলে তুলে ধরার চেষ্টা করছেন, ততই তিনি মানুষের মনে খারাপ প্রভাব বিস্তার করছেন! তিনি কেন বুঝতে পারছেন না যে, সন্দেশখালির মহিলাদের এসব কথা বলে তিনি অপমানিত করছেন! প্রমাণ করার চেষ্টা করছেন যে, তিনি শেখ শাহজাহানের পক্ষে আছেন! সেই প্রশ্ন কিন্তু ইতিমধ্যেই তুলতে শুরু করেছে রাজ্যের বিরোধী দল বিজেপি। তারা এটাই বলছে যে, এটাই তো মুখ্যমন্ত্রী বারবার করে থাকেন। রাজধর্ম পালন না করে তিনি আবার গোটা ঘটনাকে ভুয়ো বলে সন্দেশখালির একটা অন্য ব্যাখ্যা প্রতিস্থাপন করার চেষ্টা করে নিজের সরকারকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন। তবে এসবে আর বেশি দিন চিড়ে ভিজবে না। সময় এগিয়ে আসছে। সন্দেশখালির দেখানো পথে আগামীদিনে গোটা বাংলা হাঁটবে। দিনের শেষে তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!