এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > সৌরভের বিনিয়োগ প্রতিশ্রুতি কি গ্যাস বেলুন? প্রবল খোঁচা দিলীপের!

সৌরভের বিনিয়োগ প্রতিশ্রুতি কি গ্যাস বেলুন? প্রবল খোঁচা দিলীপের!


প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-কিছুদিন আগেই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বিদেশ যাত্রা করে সেখান থেকে বাংলায় শালবনীতে শিল্প গড়ার বার্তা দিয়েছিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। আর সেই সময় থেকেই বাংলার দাদার সঙ্গে এই সরকারের আন্তরিকতা তৈরি হচ্ছে বলে গুঞ্জন তৈরি হয়েছিল। যে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় অনেক তৃণমূল নেতার চোখে বিষের মত, বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের মঞ্চ থেকে সেই সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে বাংলার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে বিদেশের মাটি থেকে যে প্রতিশ্রুতি বাংলার জন্য দিয়েছিলেন মহারাজা, সেই প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন কবে হবে? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভাবছেন, সৌরভ গাঙ্গুলি বাংলার সেন্টিমেন্ট। তাই তাকে মুখ করে তিনি আগামী দিন মানুষের মন জয় করবেন। কিন্তু শিল্পের ক্ষেত্রে বাংলার মহারাজার প্রতিশ্রুতিকে অনেকটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্ষমতায় আসার আগের প্রতিশ্রুতির মত? বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ যে কথা বললেন, তারপর এই প্রশ্ন ক্রমশ মাথাচাড়া দিচ্ছে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে।

প্রসঙ্গত, এদিন এই বিষয় নিয়ে দিলীপ ঘোষকে প্রশ্ন করা হয়। আর সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি বলেন, “সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় তো শালবনীতে শিল্প গড়ার কথা বলেছিলেন। কিন্তু সেটা এখনও পর্যন্ত আকাশেই আছে। তার কোনো বাস্তবায়ন হয়নি।” অর্থাৎ বাংলার মুখ হিসেবে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে সামনে এনে মুখ্যমন্ত্রী ভেবেছিলেন, তিনি একটা মহৎ কাজ করে দিয়েছেন। কিন্তু ক্রিকেটের ক্ষেত্রে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের অবদানকেকে কেউ অস্বীকার করে না। তবে উন্নয়নের ক্ষেত্রে, শিল্প আনার ক্ষেত্রে তার অবদান কি? এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার মতো ক্ষমতা কি বাংলার মহারাজার রয়েছে! শুধু তাই নয়, বিদেশের মাটি থেকে তিনি যে শিল্প স্থাপনের প্রতিশ্রুতি রাজ্যে দিয়েছিলেন, সেই ব্যাপারে তো কোনো পদক্ষেপ এখনও পর্যন্ত তাকে বা তার দিদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিতে দেখা যায়নি। ফলে সেই প্রতিশ্রুতি কোথায় গেল? সেটাও তো প্রশ্নের বিষয়। কারণ রাজ্যের মানুষ তো তাকে বিশ্বাস করেন। তাহলে কি তিনিও দিদির ভাই হিসেবে দিদি যেমন মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে মানুষের মন জয় করার চেষ্টা করেছিলেন, তিনিও সেই একই রাস্তা বাছতে শুরু করেছেন? তা নিয়েও কটাক্ষ করছেন সমালোচকরা।

বিজেপির দাবি, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব। তাকে চিনতে পেরেছে বলেই বিজেপি অনেক আগে তাকে ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর করেছিল ত্রিপুরার। কিন্তু সেই সময় বাংলার সন্তান হিসেবে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে কোনো জায়গা দিতে দেখা যায়নি তৃণমূল সরকারকে। ফলে এতদিন পরে তাদের বিলম্বিত বোধোদয় কেন হল, সেটাও একটা বড় প্রশ্ন। আর তার থেকেও বড় প্রশ্ন যে, কেউ যখন কোনো প্রতিশ্রুতি দেবেন, তখন তা তার পালন করা উচিত। তাই বাংলার মহারাজা দিদির ঘনিষ্ঠ যত হবে, ততই মানুষের মনে তার সম্পর্কে একটা বিরূপ প্রভাব তৈরি হবে। মানুষ তাকে একটা অন্য চোখে দেখে। তিনি মানুষের কাছে সেন্টিমেন্ট। কিন্তু যে সরকার মানুষের টাকা চুরি করে, বেকারদের চোখের জল ফেলতে বাধ্য করে, সেই সরকারের ঘনিষ্ঠ হলে তিনি যত বড়ই ব্যক্তি হোন না কেন, রাজ্যের সাধারণ মানুষ তাকে গ্রহণ করবেন না বলেই দাবি গেরুয়া শিবিরের।

পর্যবেক্ষকদের মতে, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ভালো মাঠের ক্রিকেটার। তিনি যে বড় শিল্পপতি, এটা কেউ জানত না। তবে তার এই দিকটি প্রকাশ্যে এসেছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তার বিদেশ সফরের সময়। আর তখন থেকেই অনেকে এটাও বলেছেন যে, বাংলার সন্তান হিসেবে তিনি যদি বাংলার ভালো চান, বাংলায় যদি বিনিয়োগ করতেই চান, তাহলে সেটা বিদেশের মাটি থেকে করতে হবে কেন? বাংলাতেই তো তিনি এই ঘোষণা করতে পারতেন। আসলে তাকে দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিদেশের মাটি থেকে একটা চমক দেওয়ার চেষ্টা করিয়েছেন বলেই দাবি একাংশের। তবে জল গড়াতে সময় লাগে না। তাই এখন সেই সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এতটাই দিদির প্রিয় ভাই হয়ে গিয়েছেন যে, তাকে ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর করে বিজেপির পথেই হাঁটতে বাধ্য হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে রাজ্যে যে বিনিয়োগের কথা সৌরভবাবু ঘোষণা করেছিলেন, তার বাস্তবায়ন কবে হবে? নাকি এটাও একটা প্রতিশ্রুতির মত ঢপের শ্রুতি! দিলীপ ঘোষের বক্তব্যের পর তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!