প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – প্রায় বেশ কিছু বছর আগে মুকুল রায়ের মত তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতা যোগদান করেছিলেন ভারতীয় জনতা পার্টিতে। যার পর থেকে তৃণমূলে ব্যাপক ভাঙ্গন আশঙ্কা করা হয়েছিল। তবে তৃণমূলের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিল, একটা মুকুল রায় গেলে লক্ষ্য মুকুল রায় তৈরি হবে। কিন্তু সেইরকম কিছু হতে দেখা যায়নি। উল্টে সেই মুকুল রায়ের হাত ধরে তৃণমূলের একের পর এক হেভিওয়েট নেতা এবং জনপ্রতিনিধি যোগদান করেছেন ভারতীয় জনতা পার্টিতে।

আর এই পরিস্থিতিতে একসময় মুকুল রায় তৃণমূল নেতৃত্ব গৌণ বলে ভাবলেও, যে মুকুল রায় তৃণমূলকে অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছেন, এবার তৃণমূলে জল্পনা তৈরি হয়েছে দলের শীর্ষ নেতা শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে। তবে মুকুল রায়ের সময় তৃণমূলের পক্ষ থেকে যেমন গোটা ব্যাপারটিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি, ঠিক একইভাবে এখনও শুভেন্দু অধিকারীর বিষয় নিয়ে গুরুত্ব দিতে চাইছে না তৃণমূল কংগ্রেস। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মুকুল রায়ের সময় তৃণমূলে যতটা ভাঙ্গন ধরেছিলহ যদি শুভেন্দু অধিকারী দলত্যাগ করেন, তাহলে তার থেকেও দ্বিগুণভাবে ভাঙ্গন ধরবে তৃণমূল কংগ্রেসে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর তৃণমূল কংগ্রেসের এখন যদি জনপ্রিয় মুখ বলে কেউ থেকে থাকে, তাহলে তার নাম শুভেন্দু অধিকারী। দীর্ঘদিন ধরে যে সমস্ত জেলায় তৃণমূলের সংগঠন দুর্বল, সেখানে মুশকিল আসান হয়ে উঠেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। বিরোধীদের দখলে থাকা মুর্শিদাবাদ থেকে শুরু করে মালদহ জেলায় ঘাসফুল ফোটাতে সক্ষম হয়েছিলেন তিনি। তৃণমূলের গুরুত্বপূর্ণ সাংগঠনিক দায়িত্ব বিতরণ হওয়ার সময় সেই শুভেন্দু অধিকারীকে তেমন ভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। যার পর থেকেই দলের সঙ্গে ক্রমশ দূরত্ব বৃদ্ধি হতে শুরু করেছে তার।

কিছুদিন আগেই মন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন তিনি। তবে শুভেন্দু অধিকারীর মান ভাঙানোর জন্য তৃণমূলের পক্ষ থেকে সৌগত রায় চেষ্টা করলেও, লাভের লাভ কিছু হয়নি। তাই এই পরিস্থিতিতে গোটা রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় শুভেন্দু অধিকারীর ছবি এবং পোস্টার দিয়ে তার অনুগামী লিখে দাদার অনুগামী বলে কর্মী সমর্থকরা প্রচার করতে শুরু করেছেন। অনেকে বলছেন, তৃণমূলের কর্মী সমর্থক থেকে শুরু করে হেভিওয়েট জনপ্রতিনিধিরা শুভেন্দু অধিকারীর নামের এই প্রচার করতে শুরু করেছেন। তাই তিনি যদি দলত্যাগ করেন, তাহলে তৃণমূলের মুকুল রায়ের সময় যে ভাঙ্গন ধরেছিল, তার থেকেও বড় ভাঙ্গন ধরতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

একাংশ বলছেন, দুই মেদিনীপুর থেকে শুরু করে মালদহ, মুর্শিদাবাদ, পুরুলিয়া এই সমস্ত জেলায় শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামীরা প্রস্তুত হয়ে রয়েছেন।তারা সকলেই শুভেন্দু অধিকারী যে পথে যাবেন, সেই পথেই পা বাড়াবেন বলে নিশ্চিত বিশেষজ্ঞরা। আর তা যদি হয়, তাহলে এই সমস্ত জেলার পাশাপাশি অন্যান্য জেলায় থাকা শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামীরা অনেকটা সাহস পেয়ে যাবেন। আর তারাও তখন তাদের বড় সিদ্ধান্ত নিতে শুরু করবেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

স্বাভাবিকভাবেই এই প্রবণতা এবং আশঙ্কা যদি সত্যি হয়, তাহলে তৃণমূল কংগ্রেস আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে কার্যত ভাঙতে শুরু করবে বলেই দাবি বিশেষজ্ঞদের। তবে এই সমস্ত কিছু শুভেন্দু অধিকারীর পদত্যাগের উপরেই নির্ভর করবে বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের। সব মিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।