তাপসের দলবদলে প্রবল চাপে মমতা? প্রকাশ্যেই বড় ইঙ্গিত! পাল্টা দিল বিজেপি! তৃণমূল বিজেপি রাজনীতি রাজ্য March 7, 2024 প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- তৃণমূলের মধ্যে এখনও যারা একটু আধটু সভ্য রয়েছেন, যাদের কিছুটা হলেও মেরুদন্ড রয়েছে, যারা এই দুর্নীতিগ্রস্ত দলটার মধ্যে থেকেও নিজেদের গায়ে দুর্নীতির কালি লাগাতে দেননি, তার মধ্যে অন্যতম তাপস রায়। যার সততা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারে না বিরোধী দলের নেতারাও। কিন্তু সেই তাপস রায় তিনিও তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করেছেন। এই দলটায় এত ঘৃণা, এত যন্ত্রণা তার মনে জন্ম নিয়েছে যে, তিনিও শেষ পর্যন্ত 23 বছরের সম্পর্ক ছিন্ন করে যোগদান করেছেন ভারতীয় জনতা পার্টিতে। স্বাভাবিকভাবেই তৃণমূলের মধ্যেও অনেকে প্রশ্ন তুলছেন যে, তাপসবাবুর মত ভালো মানুষ যদি দল ছেড়ে দেয়, তাহলে তৃণমূলের অবস্থা কি হবে? যারা আবার দেউলিয়াপনা রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত, তারা সাথে সাথেই তাপসবাবুকে আক্রমণ করতে শুরু করেছেন। আর এসবের মধ্যেই তাপস রায় যে ফ্যাক্টর, তার দলবদল যে যথেষ্ট হতাশ করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও, তার প্রমাণ তিনি নিজেই দিয়ে দিলেন। বিশেষজ্ঞদের একাংশ কিন্তু তেমনটাই বলছেন। কিন্তু কি এমন বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়! যার জন্য এমন কথা বলছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা! আজকে নারী দিবসের সমর্থনে মিছিল করার পর বক্তব্য রাখতে গিয়ে এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তাপস রায়ের দলবদল প্রসঙ্গে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেছেন। আর সেই বিষয়কে কেন্দ্র করেই উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। প্রসঙ্গত, এদিন নারী দিবসের সমর্থনে মিছিল করার পর বক্তব্য রাখেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেখানেই ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেন তিনি। তাপস রায়ের দলবদল প্রসঙ্গে ঘুরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “কেউ কেউ তো আবার ভয়েই বিজেপিতে চলে যাচ্ছে। বাড়িতে একবার ইডি গিয়েছে, ভাবছে আবার যদি আসে!” আর এখানেই অনেকে বলছেন যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার তার দলের কেউ বিজেপিতে গেলেই তাকে প্রতিহিংসা রাজনীতিতে অ্যাটাক করার চেষ্টা করেন। এক্ষেত্রেও তিনি তাই করেছেন। এটা অত্যন্ত স্বাভাবিক। কিন্তু যে তাপস রায়ের সততা নিয়ে বিরোধী দলের কেউ প্রশ্ন তুলতে পারেননি, সেই তাপস রায় এতদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে এবং তার দলের সঙ্গে ঘর করে আসার পরে কি করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলে তাপস রায়ের অবদান ভুলে গেলেন? কি করে তিনি এটা বোঝানোর চেষ্টা করলেন যে, তাপস রায় শুধুমাত্র ভয় পেয়ে বিজেপিতে চলে গিয়েছেন! এর পেছনে যে আরও অনেক কারণ রয়েছে, সেটা তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় খুব ভালো মত জানেন। সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে তিনি উত্তর কলকাতার দায়িত্ব দিয়ে রেখেছেন। অথচ তাপস রায়ের মতো দীর্ঘদিনের রাজনীতিবিদ এবং যিনি সৎ, সেই লোকটাকে একটা কিছু দেননি। দিনের পর দিন তাকে অবহেলা করেছেন। অথচ তিনি মুখ বুজে সহ্য করেছেন। তাই বাধ্য হয়ে তিনি আজকে বিজেপিতে যোগদান করেছেন। আর তারপরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ সেই তাপস বাবুকে নিয়ে যে ইঙ্গিতপূর্ন কথা বললেন, তা শুনে বিরোধীরাও হাসছে। তারা বলছেন যে, তাপস রায়ের এই বিজেপিতে যোগদান কিছুটা হলেও গলার কাঁটার মতো বিঁধছে এই রাজ্যের শাসক দলের। ইতিমধ্যেই গোটা বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে পাল্টা কটাক্ষ করতে শুরু করেছে বিজেপি। তাদের দাবি, কেন্দ্রীয় সংস্থা যে নিরপেক্ষ, এটা সবাই জানে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আজকে এইসব নাটক না করলেও চলবে। তিনি খুব ভালো করেই জানেন যে, তাপস রায়ের মত মানুষ তার দল ছেড়ে বেরিয়ে আসার কারণে তার কতটা ক্ষতি হয়েছে। তাই এখন “যত দোষ নন্দ ঘোষ” এটা দেখানোর চেষ্টা করছেন। প্রমাণ করার চেষ্টা করছেন যে, কেন্দ্রীয় এজেন্সি ভয় দেখিয়েছে। কিন্তু বড় বড় ভাষণ দিলেও এর স্বপক্ষে কোনো তথ্য প্রমাণ প্রকাশ করতে পারবেন না। তাই এসব কথা বলে আর চিড়ে ভিজবে না। সবে তো তাপস রায় এসেছে। আগামী দিনে যারা তৃণমূলের মধ্যে ভালো লোক রয়েছেন, যারা মেরুদন্ড এখনও পর্যন্ত বিকিয়ে দেননি, তারা সকলেই ভারতীয় জনতা পার্টিতে যুক্ত হবেন। তবে দিনের শেষে ঘুরিয়ে হলেও তাপস রায়কে নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে ইঙ্গিতপূর্ণ কথা বললেন, তাতে বারবার প্রমাণিত হচ্ছে যে, এই দলবদল কিছুটা হলেও অস্বস্তি তৈরি করেছে তৃণমূল নেত্রী এবং তার দলের মধ্যে। তাপস রায়ের বিজেপিতে যোগদান ইস্যুতে তারা যথেষ্ট ব্যথিত এবং হতাশ। দিনের শেষে তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা। আপনার মতামত জানান -