ঠাকুরবাড়ি মহাসংঘের সংঘাধিপতি কে? জোর তরজা মমতা ,শান্তনুর নদীয়া-২৪ পরগনা রাজ্য January 30, 2019 আগামী ২ ফেব্রুয়ারী অর্থাৎ চলতি সপ্তাহের শনিবার ঠাকুরনগরে সভা করতে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর তার আগেই মতুয়া মহাসংঘের সংঘাধিপতি কে তা নিয়ে দড়ি টানাটানি শুরু হয়ে গেল ঠাকুর বাড়িতে। একদিকে মমতাবালা ঠাকুর এবং অন্যদিকে শান্তনু ঠাকুরের নেতৃত্বে মতুয়াশিবির কার্যত দুভাগে ভাগ হয়ে গেল। গতকাল বিকালে তৃণমূল সাংসদ তথা ঠাকুরবাড়ির বড়বউ মমতাবালা ঠাকুর এক সাংবাদিক বৈঠক করে ঘোষণা করেন,তিনিই সর্বভারতীয় মতুয়া মহাসংঘের সংঘাধিপতি। তাঁর তরফ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে কোনো আমন্ত্রণ জানানো হয়নি এবং ২ তারিখের অনুষ্ঠানের জন্যে তাঁদের কাছেও কোনো আমন্ত্রণ আসেওনি। একই কথার জবাবে মমতাবালার ভাইপো শান্তনু ঠাকুর বলেন,”আমি মতুয়া মহাসংঘের সংঘাধিপতি। আমি প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছি।” দুজনেই নিজেকে সর্বভারতীয় মতুয়া মহাসংঘের সংঘাধিপতি দাবী করায় ঠাকুরনগরে নয়া বিতর্ক মাথাচাড়া দিয়ে উঠল। প্রসঙ্গত,আগামী ২ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ঠাকুরনগরে আসছেন সর্বভারতীয় মতুয়া মহাসংঘের আমন্ত্রণ রক্ষা করতে। মোদীর সভার প্রস্তুতি নিয়ে চূড়ান্ত ব্যস্ততা রয়েছে ঠাকুরনগরে। মতুয়াদের বড়মা বীণাপানি দেবীর সঙ্গেও দেখা করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী,এমনটা জানা গিয়েছে। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - তবে সোমবার রাত থেকেই নবতিপর বৃদ্ধা শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ায় মোদী আদৌ তাঁর সঙ্গে দেখা করতে পারবেন কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। তৃণমূলের তরফ থেকে তো সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে,অসুস্থ বীণাপানি দেবীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীকে দেখা করতে দেওয়া হবে না। এই ইস্যু নিয়ে তো শোরগোল ছিলই ঠাকুরনগরে৷ তার উপরে গতকাল ঠাকুরবাড়ির বড়বউ তথা তৃণমূল সাংসদ নিজেকে সারা ভারতের মতুয়া মহাসংঘের সংঘাধিপতি বলে দাবী করে বসলেন। এবং এটাও জানালেন তাঁর তরফ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে আসার জন্যে কোনো আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। প্রধানমন্ত্রী শুধুমাত্র রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্যে ভোটের আগে ঠাকুরনগরে আসছেন। তাছাড়া প্রধানমন্ত্রীর সভায় শান্তনু ঠাকুরের তরফ থেকে বড়মাকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়নি বলে জানান তিনি। এছাড়া আরো বলেন,”আমার স্বামী কপিলকৃষ্ণ ঠাকুর সারাভারত মতুয়া মহাসংঘের সংঘাধিপতি ছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পর মতুয়াভক্তরা আমাকে সংঘাধিপতি পদে বসিয়েছেন। আমার শ্বশুরমশাই প্রয়াত প্রমথরঞ্জন ঠাকুরের উইল অনুযায়ী মতুয়া ভক্তরা যাঁকে সংঘাধিপতি হিসেবে চাইবেন, তিনিই সংঘাধিপতি হবেন। পরিবারের বাইরেও কেউ হতে পারেন।” এদিকে,জেঠিমা মমতাবালাদেবীর সাংবাদিক বৈঠকের জবাবে শান্তনু ঠাকুর বলেন,ঠাকুরদা পি আর ঠাকুর মতুয়াদের জন্যে যে নিয়মবিধি লিখে গেছেন,তাতে স্পষ্টভাবে বলা আছে পরিবারের পুরুষ সদস্য ছাড়া সংঘাধিপতি হওয়া যায় না। পরিবারের বউরা মতুয়া মহাসংঘের সহায়িকা হতে পারেন। সংঘাধিপতি হতে পারবেন না। সরকারি নথিতে সংঘাধিপতি পদে তিনিই রয়েছেন৷ আর প্রধানমন্ত্রীকে তাঁদের তরফ থেকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আর সেই আমন্ত্রণ রক্ষা করতেই প্রধানমন্ত্রী ঠাকুরনগরে আসছেন বলে জানালেন তিনি। শান্তনু ঠাকুরের এই কথাতেই ভরসা রেখেছেন মতুয়া সংগঠনের এক পক্ষ। মোদ্দা কথা হল,প্রধানমন্ত্রীর ঠাকুরনগরে আসার প্রেক্ষিতে মতুয়া মহাসংঘের ফাটল আরো চওড়া হল। মতুয়া মহাসংঘের একাংশের ধারণা,একজন ঠাকুরবাড়ির পূত্রবধূজপ সংঘাধিপতি পদে দাঁড় করানো নিয়ে রাজনৈতিক খেলা শুরু হয়েছে। এরমধ্যে মোহরা বানানো হয়েছে বড়মাকে। আর সেজন্যেই ১৯৪৩ সালের মতুয়াদের নিয়মবিধি অনুযায়ী পরিবারের কোনো বউ সংঘাধিপতি হতে পারে না। এখন মোদীর ঠাকুরনগরে আসার আগ পর্যন্ত মতুয়া মহাসংঘের সংঘাধিপতি কে তা নিয়ে ঠাকুরবাড়ির বাকযুদ্ধ কতদূর গড়ায় সেটাই দেখার! আপনার মতামত জানান -