এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > তৃণমূলে রদবদল! এবার খোদ ছত্রধরের ছাঁটা শুরু হয়ে গেল? ক্ষোভ-বিক্ষোভের মাঝেই তুমুল জল্পনা!

তৃণমূলে রদবদল! এবার খোদ ছত্রধরের ছাঁটা শুরু হয়ে গেল? ক্ষোভ-বিক্ষোভের মাঝেই তুমুল জল্পনা!


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – ক্ষমতায় আসবার আগে জঙ্গলমহল শান্ত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর 2011 সালে মানুষের রায়ে যখন মুখ্যমন্ত্রী হলেন তিনি, তখন একাধিকবার জঙ্গলমহল সফর করতে দেখা গেছে তাকে। জঙ্গলমহলে মাওবাদী উপদ্রবকে ঠান্ডা করেছেন তিনি। বারবার সেই জঙ্গলমহলে গিয়ে বলেছেন খুশি থাক জঙ্গলমহল কিন্তু গত পঞ্চায়েত এবং লোকসভা ভোটের পর এই জঙ্গলমহলের মানুষের রায় তৃণমূল কংগ্রেস যে খুব একটা খুশি হয়নি তা বলাই যায়। আশ্চর্য জনকভাবে এখানকার অনেক জায়গাতেই উত্থান ঘটেছে ভারতীয় জনতা পার্টির।

আর এর পরেই সম্প্রতি সেই জঙ্গলমহলের ভোটব্যাঙ্ক পুনরুদ্ধারের জন্য জনসাধারণ কমিটির নেতা দীর্ঘদিন শ্রীঘরে থাকা ছত্রধর মাহাতো জেল থেকে বেরোনোর পর পরই তাকে দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেন তৃণমূল নেত্রী। রাজ্য সম্পাদকের পদ দিয়ে জঙ্গলমহল পুনরুদ্ধারের বার্তা দেওয়া হয় তাকে। সেই মত করে ছত্রধর মাহাতো সংগঠন সাজাতে শুরু করেছিলেন। কিন্তু এবার ঝাড়্গ্রাম জেলা তৃণমূলের নতুন কমিটি হওয়ার সাথে সাথেই সেই ছত্রধর মাহাতোকে অনেকটাই কোণঠাসা করে দেওয়া হল বলে দাবি করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। জানা গেছে, ছত্রধর মাহাতো এবং তার অনুগামীদের ক্ষমতা এই জেলার মাত্র দুটি ব্লকে বেঁধে রাখা হয়েছে। যার ফলে নানা মহলে নানা প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।

সূত্রের খবর, এদিন দুপুরে ঝাড়গ্রামের একটি বেসরকারি অতিথিশালায় সাংবাদিক বৈঠকের মাধ্যমে তৃণমূল ও যুব তৃনমূলের নতুন জেলা ও ব্লক কমিটি পদাধিকারীদের নাম প্রকাশ করা হয়। কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে এখানে উপস্থিত থাকতে দেখা যায়নি ছত্রধর মাহাতোকে। তৃনমূল তাকে রাজ্য কমিটিতে দায়িত্ব দিলেও, যে জেলার জন্য ছত্রধর মাহাতোকে বাড়তি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, সেই ঝাড়গ্রামের জেলা কমিটিতে কেন তাকে বাড়তি ভাবে গুরুত্ব দেওয়া হল না, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে প্রশ্ন। জানা গেছে, ঝাড়গ্রাম ব্লকের তৃণমূলের নতুন সভাপতি হয়েছেন ছত্রধরের একসময়কার আন্দোলনের সঙ্গী নরেন মাহাতো।

অন্যদিকে লালগড় ব্লক যুব তৃনমূলের সভাপতি করা হয়েছে রাজু হাসদাকে। তিনিও ছত্রধর মাহাতোর অনুগামী বলে পরিচিত। কিন্তু এই দুজন ছাড়া নতুন করে ছত্রধর মাহাতোর কোনো অনুগামীকে তৃণমূল কোথাও জায়গা দেয়নি। ফলে সেই ছত্রধরবাবুর জেলায় আধিপত্য নিয়ে তৈরি হয়েছে প্রশ্ন। আশ্চর্যের ব্যাপার, ঝাড়গ্রাম, জামবনি এবং লালগড় ব্লকে তার পছন্দের লোকজনদের নাম ব্লক সভাপতি এবং ব্লক যুব সভাপতির জন্য রাজ্য নেতৃত্বের কাছে পাঠিয়েছিলেন ছত্রধর মাহাতো।

এমনকি ঝাড়গ্রাম শহর তৃণমূলের সভাপতি পদেও ছিলেন তিনি। কিন্তু সেখানে প্রশান্ত রায়কেই রেখে দেওয়া হয়েছে। অনেক জায়গাতে আবার ছত্রধর মাহাতোর অনেক অনুগামীকেও পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। যেমন গোপীবল্লভপুর 1 ব্লক সভাপতির পদ থেকে তার ঘনিষ্ঠ শংকরপ্রসাদ হাসদাকে সরিয়ে নতুন ব্লক সভাপতি করা হয়েছে হেমন্ত ঘোষকে। জানা গেছে, এই হেমন্তবাবু জেলা সভাপতি দুলাল মুর্মুর অনুগামী বলে পরিচিত।

 

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিকে ঝাড়্গ্রাম জেলা তৃণমূলের নতুন জেলা কমিটিতে মোটের উপর সদস্য সংখ্যা 98 জন। যেখানে নাম রয়েছে ছত্রধর মাহাতোর। কিন্তু তার ওপর তৃণমূল এত ভরসা করলেও এবং জঙ্গলমহলের ভোটব্যাঙ্ক তার হাত ধরে ফিরিয়ে আনার স্বপ্ন দেখলেও, কেন সেই ছত্রধর মাহাতো এবং তার অনুগামীদের জেলা রাজনীতিতে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হল না? একাংশ বলছেন, জেলার সকল নেতাকে খুশি রাখতে এবং সব পক্ষকে সন্তুষ্ট করতেই ছত্রধরবাবুর বেশি দাবি মানা সম্ভব হয়নি। এদিকে এদিনের এই সাংবাদিক বৈঠক প্রসঙ্গে ছত্রধর মাহাতোকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “এই সাংবাদিক বৈঠক হওয়ার খবর আমার জানা ছিল না। তবে নতুন কমিটির কথা শুনলাম। দল যা ভালো বুঝেছে করেছে।”

এদিকে ঝাড়্গ্রাম জেলা তৃণমূলের কমিটি সহ ব্লক কমিটি গঠনের পর বিভিন্ন জায়গায় বিদ্রোহের খবর আসতে শুরু করেছে। মুখ পরিবর্তন নিয়ে অনেকেই অসন্তোষ প্রকাশ করতে শুরু করে দিয়েছেন। যার ফলে তৃণমূলের অন্দরে তৈরি হয়েছে সমস্যা। বিধানসভা নির্বাচনের আগে সাংগঠনিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে দল যখন ঐক্যবদ্ধ ভাবে চলার চেষ্টা করছে, তখন এই পরিবর্তনের পরেও যেভাবে বিদ্রোহের খবর আসতে শুরু করেছে, তাতে জেলা তৃণমূল কিভাবে তাকে মোকাবিলা করবে, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে সংশয়।

ইতিমধ্যেই বেশ কিছু নেতা নিজেদের বর্তমান প্রত্যেকে ইস্তফা দিতে চেয়ে জেলা নেতৃত্বের কাছে চিঠি দিয়েছেন বলে খবর। এদিন এই প্রসঙ্গে জেলা তৃণমূল সভাপতি দুলাল মুর্মু বলেন, “সাময়িক অভিমানে কেউ হয়ত এরকম করছেন। তবে কেউ দল ছাড়বেন না।” সব মিলিয়ে ঝাড়গ্রাম জেলার নতুন কমিটি ঘোষণার পরেও যেভাবে জায়গা পাওয়া না পাওয়া নিয়ে চাপা অসন্তোষ তৈরি হয়েছে, তাতে তার কোনো প্রভাব ভোটবাক্সে পড়ে কিনা, সেদিকেই নজর থাকবে রাজনৈতিক মহলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!