এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলে বলি হতে হলো পঞ্চাশোর্ধ বয়সী এক মহিলাকে

তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলে বলি হতে হলো পঞ্চাশোর্ধ বয়সী এক মহিলাকে

রাজ্যের রাজনৈতিক মানচিত্রে তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠী কোন্দল নতুন কোনো বিষয় নয়। তবে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কারণে তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠী কোন্দল প্রকাশ্যে আসে। কখনও টেন্ডার ভাগাভাগি নিয়ে এক নেতার বিরুদ্ধে অপর নেতাকে দুর্নীতির অভিযোগ তুলতে দেখা যায়। কখনও আবার বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে সুযোগ-সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার নাম করে জনগণের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা আত্মসাৎ করাকে কেন্দ্র করে এক নেতার সমালোচনা করে অন্য এক তৃণমূল নেতা।

কিন্তু সম্পূর্ণ বিপরীত ঘটনা চোখে পড়ল উত্তর দিনাজপুর জেলায়। সেখানে চা বাগানের জমির দখল নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠী কোন্দল প্রকাশ্যে এলো। যাতে অস্বস্তিতে জেলা তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব থেকে শুরু করে উচ্চ পদাধিকারীরা। সূত্র মারফত পাওয়া খবর অনুযায়ী, এই চা বাগানের গোষ্ঠী কোন্দলকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই বসিদা বেগম নামে পঞ্চাশোর্ধ বয়সী এক মহিলাকে বলি হতে হয়েছে।

পাশাপাশি ঘটনায় জড়িত আরও দুই মহিলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। ঘটনার সূত্রপাত উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুরে। সেখানে অবস্থিত ডানকান চা বাগানে দীর্ঘদিন থেকে পড়ে থাকা একটি জমিকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এই ব্যাপারে স্থানীয় ব্যক্তিবর্গরা অভিযোগ করেছেন, এই ঘটনার পিছনে রয়েছেন স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেস নেতা জাকির হোসেন এবং ইসলামপুরের বিধায়ক আব্দুল করিম চৌধুরী।

পরিত্যক্ত চা বাগানের জমিকে কেন্দ্র করে জাকির হোসেনের গোষ্ঠীর লোক এবং বিধায়ক আব্দুল করিম চৌধুরীর গোষ্ঠীর লোকের বিবাদের জেরে এমন মর্মান্তিক পরিণতি ঘটে বলে মত স্থানীয়দের। বস্তুত, ঘটনার উৎসস্থল ডানকান গোষ্ঠীর ওই চা বাগান বিগত বছর চারেক হল বন্ধ হয়ে রয়েছে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

জানা গেছে, ওই চা বাগান তৈরির সময় যে সমস্ত স্থানীয় বাসিন্দারা জমি দিয়েছিলেন, তাদের মধ্যে বেশিরভাগই ওই জায়গায় চা বাগানের জমিকে নিজেদের দখলে রেখে পুরোদস্তুর চাষবাস করছিলেন। কিন্তু স্থানীয়দের তরফ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, এলাকার স্বনামধন্য প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা জাকির হোসেনের সরাসরি মদদপুষ্ট হয়ে ওই চা বাগানের জমি দখল হয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি ইসলামপুরের স্থানীয় বিধায়ক তথা তৃণমূল নেতা আব্দুল করিম চৌধুরীর লোকজনের ওই জমির উপরে দীর্ঘদিনের নজর ছিল‌। ফলে তারাও জমি দখলের জন্য চেষ্টা চালিয়েছে।

স্বাভাবিকভাবেই পরবর্তীতে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। স্থানীয় বসিদা বেগমের জমি ওই চা বাগানের ভিতর ছিল। এলাকা সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সেই জমি দেখতে যান বসিদা বেগম। কিন্তু স্থানীয় কয়েকজন তাকে বাধা প্রদান করে। এর কিছুক্ষণ পরেই শুরু হয় বচসা এবং মারামারি।

শুধু তাই নয়, কিছুক্ষণের মধ্যেই বোমাবাজি এবং গুলি চালানোর মত ঘটনাও ঘটে‌। যার পরেই মহিলাদেরকে লক্ষ করে একজন দুষ্কৃতী গুলি চালাতে শুরু করে দেয়। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় বসিদা বেগম সহকারে আরও তিনজন মহিলাকে ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা বসিদা বেগমকে মৃত বলে জানিয়ে দেয় এবং গুরুতর আহত অবস্থায় আরো দুইজন মহিলার চিকিৎসা শুরু হয় ঘটনার। বেশ কিছুক্ষণ পরে সেখানে পুলিশের দেখা পাওয়া যায়।

জানা গেছে, পরে দীর্ঘক্ষণের চেষ্টায় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। কিন্তু রাজনৈতিক মহলের বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল নেতৃত্ব যদি এই ধরনের মারদাঙ্গা পূর্ণ ঘটনাকে প্রত্যক্ষ মদত দেন, তবে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি কোনখানে গিয়ে পৌঁছাবে!

শুধু তাই নয়, সামান্য স্বার্থের জন্য যেভাবে নিরীহ মানুষদের ভয়াবহ হামলার সম্মুখীন হতে হচ্ছে, তাতে করে এলাকায় আগামী দিনে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকা তৃণমূল নেতাদের সম্পর্কে এবং শাসক দল তৃণমূল সম্পর্কে কি ধারণা তৈরি হবে! তাও রীতিমতো ভাববার বিষয়। এখন পরবর্তীতে সমগ্র পরিস্থিতি কোন দিকে গিয়ে পৌঁছয়! দলবদ্ধ দিক থেকে তৃণমূল কংগ্রেসই বা কি পদক্ষেপ গ্রহণ করেন! সেদিকেই লক্ষ্য থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!