গ্রেপ্তার তৃণমূলের প্রতিনিধিদল, অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি আসামে ঘাসফুল শিবিরকে ঘিরে কলকাতা জাতীয় বিশেষ খবর রাজ্য August 3, 2018 জাতীয় নাগরিকপঞ্জীকরণের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল আসামে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিনিধিদলের আগমনকে ঘিরে তুলকালাম কান্ড ঘটে গেল। এদিন রাজ্যের শিলচরের কুম্ভীরগ্রাম বিমানবন্দরে রাজ্যে নগরপঞ্জী ইস্যুতে ১৪৪ ধারা জারী হওয়ার কারণে তৃণমূল কংগ্রেসের জনপ্রিতিনিধিদের বিমানবন্দরের মধ্যেই আটকে দেওয়া হল। শুধু তাই নয়, প্রতিনিধিদলে থাকা মহিলাদের সঙ্গেও চরম অস্বস্তিকর ব্যবহার করা হয়েছে বলে অভিযোগ। রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে অভিযোগ, একরকম আইন বিরুদ্ধভাবেই পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী-সাংসদ-বিধায়কদের একটি ঘরের মধ্যে আটকে রাখা হলো। এমনই একটি ঘর যেখানে ঠিক মতন নেটওয়ার্ক না পাওয়ার জন্যে সহজে ফোনে যোগাযোগ করাও সম্ভব হয়না। এমনকি সেই ঘরে সাংবাদিকরা ঢুকতে গেলে তাঁদেরকেও পুলিশি প্রতিরোধের মুখে পড়তে হয় এবং তাঁদের ক্যামেরা ভেঙ্গে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনার জেরে গতকালই পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন অংশে তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করে বলে জানা গিয়েছে। এমনকি, রেলপথ অবধি অবরোধ করে বিক্ষোভকারীরা। প্রসঙ্গত, পুর্ব পরিকল্পনা অনুসারে বৃহস্পতিবার আসামে নাগরিক কনভেনশনে যোগ দিতে ঐ রাজ্যে যাচ্ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক-সাংসদ সম্মিলিত একটি প্রতিনিধি দল। এই দলে ছিলেন – ফিরহাদ হাকিম, কাকলি ঘোষ দস্তিদার, মহুয়া মৈত্র, রত্না দে নাগ, সুখেন্দুশেখর রায়, নাদিমুল হক প্রমুখ শীর্ষ নেতা। আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে কলকাতা এবং দিল্লী দেশের দুই প্রান্ত থেকে এই কনভেনশনে অংশগ্রহণ করতে তৃণমূল কংগ্রেস দলের প্রতিনিধিরা এদিন আসামে উপস্থিত হন। বিমানবন্দরে ঢোকা মাত্রই সেখানে আগে থেকে মোতায়েন করা পুলিশ বাহিনী এই প্রতিনিধি দলকে আটকে দেয় বলে অভিযোগ। এই দলের সদস্যরা নানা ভাবেই পুলিশের সাথে কথা বলার চেষ্টা করলেও পুলিশ নাকি তাঁদের সাথে কথা বলতেও রাজি ছিল না, এমনকি তাঁদের আটকানোর জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখতে চাইলে তাও নাকি দেখানো হয় নি। এরই মাঝে, রীতিমতো শারীরিক হেনস্তার মুখে পড়েন বিধায়ক মহুয়া মৈত্র ও মমতাবালা ঠাকুর বলেও অভিযোগ ওঠে। তৃণমূলের প্রতিনিধিরা বারবার পুলিশকে বোঝানোর চেষ্টা করেন, তাঁরা শুধু মাত্র গৃহহারা মানুষের সঙ্গে কথা বলতে চান। কিন্তু নিরাপত্তার অজুহাত দিয়ে তাঁদের কোনও আবেদনেই কর্ণপাত না করে আটক করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের তরফে। এইসময়ে পুলিশের বাধা অতিক্রম করে মহুয়া মৈত্র বিমানবন্দর থেকে বেরনোর চেষ্টা করলে নিমেষের মধ্যে বিমানবন্দর এলাকা রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় বলে দাবি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের। কাকলি ঘোষ দস্তিদার পরে অভিযোগ করেন, এই সময়ে তাঁদের একটা ঘরে আটক করে রাখা হয়। সেখানে কোনো খাবার এমনকি পাণীয় জলের পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা ছিল না। এদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিনিধিদলকে বিমানবন্দরে আটকে রাখা এবং শহরে প্রবেশ করতে না দেওয়ার প্রসঙ্গে অসমের ডিআইজি কুলধর শইকিয়া জানান, গোটা এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা ছিল। তৃণমূল কংগ্রেস নেতাদের আগমনে সেখানে আইন-শৃঙ্খলার অবনতি হওয়ার সম্ভবনা ছিলো। এই সব বিষয়ে আগাম বিবেচনা করেই বুধবার রাতেই তৃণমূল কংগ্রেস দলকে পরদিনের অসম সফর বাতিল করতে অনুরোধ করা হয়। ডিআইজি দাবি করেন, অনুরোধ অগ্রাহ্য করে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিনিধিদল সেখানে যান বলেই আটকাতে বাধ্য হয় পুলিশ। তৃণমূলের শীর্ষনেতাদের আটক করে রাখা প্রসঙ্গে তিনি আরও জানান যে, ওঁরা সংসদের সম্মানীয় ব্যক্তিত্ব। তাই ওঁদের প্রথমেই গ্রেপ্তার করা হয়নি। প্রাথমিক পর্যায়ে ডিসি ও এডিজি পদমর্যাদার অফিসাররা তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করেন বলেও এই পুলিশ কর্তা দাবি করেন। কিন্তু তৃণমূলের প্রতিনিধিদল পুলিশের সঙ্গে কোনোপ্রকার আলোচনা ও সহযোগিতা করতে অসম্মত হন বলে দাবি উঠেছে আসাম পুলিশের একটি সূত্র থেকে। এমনকি তৃণমূলের প্রতিনিধিদল বিমানবন্দরেই অবস্থান বিক্ষোভের মত কর্মসূচি নেয় – আর তাই, আরও খানিক সময় পরে ১৫১ ধারায় অভিযোগ এনে তৃণমূল নেতাদের গ্রেপ্তার করে একটি গেস্ট হাউসে নিয়ে যাওয়া হয়। এমনকি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে বলেও জানা গিয়েছে। আপনার মতামত জানান -