এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > মমতাকে স্বস্তিতে ফেলে বিজেপির সুরে মেলালেন তৃণমূল বিধায়ক, শোরগোল রাজ্যে

মমতাকে স্বস্তিতে ফেলে বিজেপির সুরে মেলালেন তৃণমূল বিধায়ক, শোরগোল রাজ্যে

একসময় বামেদের সরানোর জন্য তৎকালীন টাটা গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে লড়াই এবং অনশণ করে অনিচ্ছুক কৃষকদের জমিতে কোনো মতেই শিল্প করতে দেওয়া হবে না বলে সিঙ্গুরের মানুষদের পাশে থাকার শপথ নিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফলস্বরূপ 2011 সালের বিধানসভা নির্বাচনে বামেদের সরিয়ে ক্ষমতায় আসে তৃণমূল সরকার।

আর এরপর বহু বছর কেটে গেছে। কিন্তু এবার লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পর রাজ্যে বিজেপির উত্থান ঘটলে সেই সিঙ্গুরে শিল্পের দাবিতে সরব হয়েছে গেরুয়া শিবির। হুগলি লোকসভা কেন্দ্র থেকে নির্বাচিত বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় কিছুদিন আগেই দাবি তুলেছেন যে, এবার সিঙ্গুরে শিল্প স্থাপন করতে হবে।

পাশাপাশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এই সিঙ্গুরের মানুষ ক্ষমতায় আনলেও এখন তিনি সিঙ্গুরকে ভুলে গেছেন বলেও তৃণমূল নেত্রীর বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন বিজেপির এই হেভিওয়েট নেত্রী। আর এবার আশ্চর্যজনকভাবে এক সময় এই সিঙ্গুরে অনিচ্ছুক কৃষকদের জমিতে যাতে কোনরূপ কারখানা না হয়, তার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথে দীর্ঘ আন্দোলন করা সিঙ্গুরের তৃণমূল বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যর মুখেই শিল্প স্থাপনের কথা শুনতে পাওয়ায় রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে চাঞ্চল্য।

প্রসঙ্গত, ক্ষমতায় আসার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের মন্ত্রিসভায় রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যকে নিয়ে আসলেও পরবর্তীকালে তাঁর সাথে সম্পর্কের গভীরতা আলগা হতে থাকে। যার কারণ হিসেবে তারই ছাত্র বেচারাম মান্নার সাথে রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের গোষ্ঠীর দ্বন্দ্বের কথা প্রকাশ্যে উঠে আসতে শুরু করে। আর এরই মাঝে লোকসভা নির্বাচনের পর বিজেপি যখন বাংলায় ভালো ফল করেছে, ঠিক তখনই হুগলি লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় সিঙ্গুরে শিল্প স্থাপনের দাবিতে সরব হওয়ায় তারই পথে হেঁটেই রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য একই কথা বলায় তৈরি হয়েছে বিতর্ক।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

সূত্রের খবর, মঙ্গলবার একটি মামলায় বারাসাত আদালতে উপস্থিত হন রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। আর সেখানেই সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “সিঙ্গুরে আমরাও শিল্প চাইছি। কিন্তু কৃষকদের কাছ থেকে জোর করে জমি নিয়ে শিল্প নয়। চাষিরা যদি স্বেচ্ছায় জমি দেয়, তাহলে শিল্প করতে আপত্তি কোথায়!” আর প্রবীণ এই তৃণমূল বিধায়ক তথা এক সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জমি আন্দোলনের অন্যতম সঙ্গী হিসেবে পরিচিত রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের মুখে বিজেপি নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়ের কথারই প্রতিফলন দেখতে পাওয়ায় এবার তীব্র চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

ইতিমধ্যেই এই ব্যাপারে তৃণমূলের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে শুরু করেছে বিজেপি। গেরুয়া শিবিরের দাবি, আসলে শিল্প না করে আন্দোলন করে যেভাবে সিঙ্গুরের মানুষদের ক্ষতি করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তা তার দলের নেতারাই মানতে পারছে না। আর তাই তো প্রকাশ্যেই এখন অনেকেই এই ব্যাপারে অসন্তোষ প্রকাশ করছেন।

অন্যদিকে এই ব্যাপারে পাল্টা তৃণমূলের দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বরাবরই শিল্পের পক্ষে। কিন্তু অনিচ্ছুক কৃষকদের জমি কেড়ে নিয়ে কখনোই শিল্প করা যাবে না। আর নিজের বক্তব্য সেই কথাই তুলে ধরেছেন তৃণমূল বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। বৃথাই বিজেপি ঘোলা জলে মাছ ধরার চেষ্টা করছে।

তবে যে যাই বলুন না কেন, রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ মনে করছেন, সিঙ্গুরের জমি আন্দোলনের পর তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় এলে সেখানে সেইভাবে আর কোনো শিল্প স্থাপন হয়নি। কিন্তু এবার হুগলি কেন্দ্রে বিজেপি জয়লাভ করার পর সেখানকার সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় সেখানে শিল্পের দাবি তোলায় তার পথে হেটেই এখানকার প্রবীণ তৃণমূল বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য একই কথা বলায় তৃণমূলের অস্বস্তি অনেকটাই বৃদ্ধি পেল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!