এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > বামফ্রন্ট > তন্ময়ের পর কান্তি, আত্মসমালোচনার কথা বলে বাড়িয়ে দিলেন দলের অস্বস্তি!

তন্ময়ের পর কান্তি, আত্মসমালোচনার কথা বলে বাড়িয়ে দিলেন দলের অস্বস্তি!


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –  2011 সালে ক্ষমতা থেকে বিদায় নেওয়ার পর কার্যত রক্তক্ষরণ শুরু হয়ে গিয়েছিল বামফ্রন্টের। পরিস্থিতি এতটাই করুন হয়ে গিয়েছিল তাদের যে, পরবর্তীতে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে 2016 সালের বিধানসভা নির্বাচনে লড়াই করেছিল তারা। তবে সেই লড়াইয়ে কিছুটা হলেও মুখরক্ষা হয়েছিল সেই বাম-কংগ্রেস জোটের। কোনো রকমে রাজ্যের বিরোধী আসন দখল করেছিল দুই দল। তবে 2021 সালের বিধানসভা নির্বাচনে এই দুই দলের কেউই একটি আসনও লাভ করতে পারেনি। যেখানে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে তৃতীয়বারের জন্য তৃণমূল যেমন ক্ষমতায় এসেছে, ঠিক তেমনই এই দুই দলকে কার্যত নিশ্চিহ্ন করে দিয়ে 77 টি আসন নিয়ে রাজ্যের বিরোধী দলের ক্ষমতা দখল করেছে ভারতীয় জনতা পার্টি।

আর এই পরিস্থিতিতে যে বামফ্রন্ট 34 বছর ধরে রাজ্য শাসন করেছে, তারা কেন মানুষের মনে বিশ্বাসযোগ্যতার জায়গা অর্জন করতে পারছে না, তা নিয়ে দলের অন্দরে তৈরি হয়েছে প্রশ্ন। ইতিমধ্যেই ভোটের ফলাফল প্রকাশের পর নিজেদের বেশ কিছু দোষ ত্রুটির কথা সামনে আনতে দেখা গেছে সিপিএমের প্রাক্তন বিধায়ক তন্ময় ভট্টাচার্যকে। যার ফলে ব্যাপক অস্বস্তিতে পড়েছে মার্কসবাদী কমিউনিস্ট পার্টি।

ইতিমধ্যেই দলের পক্ষ থেকে তাকে সতর্ক করা হয়েছে কিন্তু এরপরেও সিপিএমের অস্বস্তি বাড়িয়ে দিয়ে দীর্ঘদিনের বিধায়ক তথা বর্ষিয়ান নেতা কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়ের গলায় শোনা গেল আত্ম সমালোচনার কথা। স্বাভাবিক ভাবেই দলের একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ তথা বর্ষিয়ান নেতা যেভাবে দলের দোষ ত্রুটি নিয়ে সংবাদমাধ্যমে সামনে মুখ খুলতে শুরু করেছেন, তাতে সিপিএমের অস্বস্তি যে আরও বাড়ল, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

সূত্রের খবর, এদিন এই প্রসঙ্গে কান্তি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “আমরা ধর্মীয় ফ্যাসিবাদকে আটকাতে পারব, এই বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করতে পারিনি। এবারের নির্বাচনে মানুষ যে রায় দিয়েছে, কুর্নিশ জানাই। মানুষ ধরে নিয়েছে, ধর্মীয় ফ্যাসিবাদকে আটকাতে পারবে তৃণমূল কংগ্রেস। বামপন্থীরা পারবে না। আমাদের আত্মসমালোচনা করতে হবে।” অর্থাৎ দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার পর বিরোধী আসনে বসা সিপিএম এবারের নির্বাচনে একটিও আসন না পাওয়ায় এবার দলের একের পর এক নেতা মুখ খুলতে শুরু করেছেন।

যার ফলে দলের এই শোচনীয় ভরাডুবির পরে প্রবীণ নেতাদের গলায় আত্ম সমালোচনার কথা সিপিএমকে কার্যত দেওয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে দিচ্ছে বলেই মনে করছেন একাংশ। অবিলম্বে দলের এই সমস্ত নেতাদের বিদ্রোহীমূলক মন্তব্য যদি সিপিএমের পক্ষ থেকে আটকানো সম্ভব না হয়, তাহলে তা বেগতিক আকার ধারণ করতে পারে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

বস্তুত, গত লোকসভা নির্বাচন থেকেই সিপিএমের এই করুণ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সিপিএমের সিংহভাগ ভোট বিজেপির দিকে যাওয়ার ফলে লোকসভাতে কোনো প্রতিনিধি পাঠাতে পারেনি বামফ্রন্ট। তবে বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে যখন কাদা ছোড়াছুড়ি শুরু হচ্ছে, তখন বাম, কংগ্রেস এবং আইএসের জোটের পক্ষ থেকে কিছু বিধায়ক বিধানসভায় প্রতিনিধিত্ব করবেন বলেই মনে করা হয়েছিল।

কিন্তু আইএসএফের টিকিটে শুধুমাত্র একজন জয়লাভ করেছে। কংগ্রেস বা বামফ্রন্টের পক্ষ থেকে কোনো প্রার্থী জয়লাভ করতে পারেনি। স্বাভাবিক ভাবেই বাম এবং কংগ্রেস তাহলে কি রাজ্যে অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে! এখন এই প্রশ্ন সামনে আসতে শুরু করেছে। আর এই পরিস্থিতিতে প্রবীণ সিপিএম নেতা তন্ময় ভট্টাচার্যের পর এবার দলের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আত্মসমালোচনা করতে হবে বলে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়।

তবে তন্ময় ভট্টাচার্যকে যেভাবে সিপিএমের পক্ষ থেকে সতর্ক করা হয়েছে, এবার কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়ের ক্ষেত্রেও সেই একই রাস্তায় হাঁটবে মার্ক্সবাদী কমিউনিস্ট পার্টি, নাকি দলের এই অভিজ্ঞ নেতাদের মতামতকে সঙ্গী করে ভুলত্রুটি শুধরে নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যায় দল, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!