প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –  অতীতে আমপান নামক ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ের পরে সরকারের পক্ষ থেকে ত্রাণের ব্যবস্থা করা হলেও, তা নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষরা সাহায্য পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ তুলতে শুরু করেছিলেন বিরোধীরা। এমনকি যারা প্রকৃত উপভোক্তা, তাদের বদলে শাসকদলের অনেক নেতারা নিজেদের আত্মীয় পরিজনদের নামে এই ত্রানের টাকা পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন বলেও উঠতে শুরু করেছিল অভিযোগ। আর এই পরিস্থিতিতে যথেষ্ট চাপের মুখে পড়ে যায় রাজ্য সরকার এবং রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস।

তবে একবছর পরেই আবার ইয়াশ নামক ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে যখন বিস্তীর্ণ এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত, তখন প্রথম থেকেই যাতে সেই ত্রানের কাজে কোনো দুর্নীতি না হয়, তার জন্য সদা সচেষ্ট ছিল রাজ্য সরকার। আর সেই দুর্নীতিকে সম্পূর্ণরূপে বিলীন করতে এবার রাজ্যের পক্ষ থেকে নেওয়া হল নয়া উদ্যোগ। যেখানে ইয়ার্স নামক ঝড়ের তান্ডবের পর ত্রাণের কাজে যদি কোথাও কোনো টাকা কম করে পৌঁছয়, তাহলে তা সাথে সাথে জানানোর নির্দেশ দিল রাজ্য সরকার।

সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই নবান্নের পক্ষ থেকে একটি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যেখানে জানানো হয়েছে, রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে যে দুয়ারে ত্রাণ প্রকল্প করা হয়েছে, তার অঙ্গ হিসেবে ঘরে ঘরে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে যদি কোথাও অর্থের সংকট দেখা দেয়, তাহলে সাথে সাথে তা রাজ্য সরকারকে জানাতে হবে। অর্থাৎ টাকার জন্য যাতে কোনোভাবেই মানুষকে সাহায্য দেওয়ার প্রক্রিয়া আটকে না যায়, সেই বিষয়টি নিশ্চিত করতে চাইছে রাজ্য প্রশাসন। কেননা অতীতে এই ত্রাণ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে রাজ্য সরকারকে। তাই ভবিষ্যতে যাতে সেরকম কোনো বিষয় সামনে না আসে, তার জন্যই সরকারের পক্ষ থেকে এই উদ্যোগ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

পর্যবেক্ষকদের মতে, দ্বিতীয় তৃণমূল সরকারের শেষের দিকে ‘আমপান’ নামক বিপর্যয়ের জন্য ব্যাপক চাপের মুখে পড়ে যেতে হয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার প্রশাসনকে। বিরোধীদের পক্ষ থেকে তো বটেই, শাসক দলের পক্ষ থেকেও এই ব্যাপারে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তোলা হয়েছিল। এক্ষেত্রে ত্রাণ দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যাপক দুর্নীতি হচ্ছে বলেও অভিযোগ করতে শুরু করেছিলেন বিরোধী দলের হেভিওয়েট নেতারা।

এমনকি গত বছরের শেষের দিকে তৃণমূল কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে বিজেপিতে নাম লেখার পর ত্রাণ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে নিজের প্রাক্তন দল তৃণমূল কংগ্রেসকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করতে শুরু করেছিলেন রাজ্যের বর্তমান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তবে এক বছরের মাথায় আবার ইয়াস নামক বিপর্যয় যখন তাণ্ডব চালিয়েছে, তখন আর কোনরকম রিস্ক নিতে চাইছে না রাজ্য সরকার। আর সেই কারণেই কোথাও ত্রাণের জন্য অর্থের অভাব পড়লে যাতে সাথে সাথে সেই সমস্যার সমাধান করা যায়, তার জন্যই রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে এই উদ্যোগ নেওয়া হল। যাকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন প্রশাসনিক আধিকারিকরা।