এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > এই পঞ্চপান্ডবই একুশের কঠিন নির্বাচনী লড়াই পার করিয়ে দেবেন! আশায় বুক বাঁধছেন তৃণমূল কর্মীরা

এই পঞ্চপান্ডবই একুশের কঠিন নির্বাচনী লড়াই পার করিয়ে দেবেন! আশায় বুক বাঁধছেন তৃণমূল কর্মীরা


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া এক্সক্লুসিভ – রাজ্যের শাসকদল হিসাবে ৯ বছর পার করে ফেলল তৃণমূল কংগ্রেস। আর এক বছরের মধ্যে তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় ফেরার অগ্নিপরীক্ষায় বসতে হচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলকে। আগের দুটি বিধানসভা নির্বাচনের থেকে অনেক কঠিন হতে চলেছে একুশের নির্বাচনী লড়াই তা নিয়ে কার্যত নিঃসন্দেহ রাজনৈতিক মহল। কেননা এই দুটি পর্যায়ের ক্ষমতা ভোগের পর, খুব স্বাভাবিকভাবেই ঘাসফুল শিবিরের বিপক্ষে যাবে প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা। তার সঙ্গেই যোগ হতে চলেছে, বাংলার বুকে তীব্র গতিতে বিজেপির উত্থান।

আর তাই তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের কাছে এখন লাখ টাকার প্রশ্ন – এই কঠিন নির্বাচনী লড়াইয়ে বৈতরণী পার করবেন কারা? কেননা এতদিন, তৃণমূলের ভোট ম্যানেজার হিসাবে কাজ করা মুকুল রায় নাম লিখিয়েছেন বিপক্ষ শিবিরে। ফলে, বিজেপির রাজনৈতিক ফায়দা বেড়ে গেছে বহুগুন। একদিকে, বিজেপির হয়ে রাজনৈতিক অঙ্ক কষবেন মুকুল রায়, তারই সঙ্গে যোগ হবে, তৃণমূলকে হাতের তালুর মত চেনার ফায়দা। ঘাসফুল শিবিরের ফাঁকফোকর তাঁর থেকে ভালো কেউ জানেন না। ফলে লড়াই আরও কঠিন হতে চলেছে।

স্বাভাবিকভাবেই এই লড়াইয়ে, তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের প্রথম পছন্দের নাম দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেননা বিগত দিনে যে সমস্ত নির্বাচন হয়েছে প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে মানুষ তৃণমূলকে ভোট দিয়েছে শুধুমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ দেখে। অগ্নিকন্যা বা জননেত্রী হিসাবে মমতা বান্দ্যোপাধ্যায়ের এখনও বাংলার মানুষের কাছে যা গ্রহণযোগ্যতা, তার ধারেকাছেও পৌঁছানো সম্ভব নয় বঙ্গ রাজনীতির কারোর। শুধু তৃণমূল কেন অন্য দল খুঁজেও তাঁর মাপের রাজনীতিবিদ এই মুহূর্তে বঙ্গ রাজনীতিতে নেই।

তাঁর গুরুত্ব এতটাই যে, কেন্দ্রের শাসকদলের প্রথমশ্রেণীর নেতাদের সরাসরি তাঁকে আক্রমন করতে হয়। যা একটি আঞ্চলিক দলের প্রধানের কাছে কম গরিমার নয়! আর তাই তাঁকেই প্রধান সেনাপতি করে এগোলে – সব থেকে বেশি ডিভিডেন্ট পাবে তৃণমূল কংগ্রেস বলে মত দলের বেশিরভাগ কর্মীর। কিন্তু, অন্য একটি হিসাব বলছে – বয়স বাড়ছে দলনেত্রীর। একদিকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, অন্যদিকে তৃণমূলের সর্বাধিনায়িকা – চাপের পাহাড়টা নিতান্ত ছোট নয়।

তার উপরে, গত ১০ বছর রাজ্যপাট সামলানোর পরে খুব স্বাভাবিক নিয়মেই তাঁর বিরুদ্ধে একটা প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার হাওয়া কাজ করবে। বিজেপি তাঁকেই আক্রমণের চূড়ান্ত নিশানা বানাবেন, তা কাটিয়ে উঠে তাঁকেই প্রচারের প্রধান মুখ হয়ে উঠতে হবে। যা কিন্তু খুব একটা সহজ কাজ হবে না – লোকসভা নির্বাচনেই তার আভাস পাওয়া গিয়েছিল। আর তাই তিনি থাকুন সবার উপরে – কিন্তু তাঁকে যোগ্যসঙ্গতকারী হিসাবে এগিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কলাকুশলীরা।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

আর সেই তালিকায়, যে নামটি সবার আগে আসবে তিনি মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপো তথা তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এতদিন তৃণমূলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শেষ কথা বললেও, এবার সেকেন্ড-ইন-কমান্ড-এর অঘোষিত দায়িত্বে রয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ই। জেলা নেতাদের গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেওয়া থেকে শুরু করে, দলের স্ট্র্যাটেজি নির্ধারণ করা সবেতেই এখন দলের ভরসা হয়ে উঠছেন তৃণমূলের যুবরাজ। এমনকি, লোকসভা বিপর্যয়ের পর দলকে টেনে তুলতে রণনীতিকার হিসাবে প্রশান্ত কিশোরকে নিয়োগ করা তাঁরই মস্তিষ্কপ্রসূত।

এই তালিকায় পরের নামটি খুব স্বাভাবিকভাবেই শুভেন্দু অধিকারী। দক্ষ সংগঠক হওয়ার সুবাদে এবং বিগত দিনে যেভাবে তৃণমূল কংগ্রেসকে সাফল্য পাইয়ে দিয়েছেন এবং যেভাবে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা তাকে ভালোবেসে ফেলেছেন, তাতে এই জায়গাটিতে তিনি ‘অটোমেটিক চয়েস’ বলেই মনে করছে নাভিজ্ঞ মহল। বর্তমানে তৃণমূল কংগ্রেসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরেই যাঁর সংগঠন সামলানোর অভিজ্ঞতা সবথেকে বেশি তিনি হলেন শুভেন্দু অধিকারী। সুতরাং একুশের কঠিন লড়াইয়ে তিনিই হতে চলেছেন অন্যতম কান্ডারী।

এর পাশাপাশিই ঘাসফুল সমর্থকদের নতুন ভরসার মুখ হিসাবে কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ তথা সুবক্তা হিসেবে পরিচিত মহুয়া মৈত্র খুব দ্রুত নিজের জায়গা পোক্ত করে নিয়েছেন দলে। লোকসভা নির্বাচনে যে কটি আসনে বিজেপি কার্যত হাসতে হাসতে জিতবে ধরা হয়েছিল – কৃষ্ণনগর ছিল তার মধ্যে অন্যতম। কিন্তু, নিজের স্টাইলে সেই আসনেও ঘাসফুল ফুটিয়েছেন মহুয়াদেবী। শুধু তাই নয়, এরপরে উপনির্বাচনেও দেখা গেছে তাঁর ক্যারিশমা। সংসদে তাঁর বক্তৃতা রীতিমত ঝড় তুলছে। বিশেষ করে মহুয়া মৈত্রের অনুগামীরা তাঁর মধ্যে অতীত দিনের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরই ছায়া দেখতে পাচ্ছেন। সেই একই আগুনে ব্যক্তিত্ব, সেই একইরকম অগ্নিকন্যার তেজ।

এই তালিকায় পঞ্চম যে নামটি আসবে তা হল প্রশান্ত কিশোর বা তৃণমূলীদের আদরের পিকেস্যার। বর্তমানে তৃণমূলের রণনীতিকারের দায়িত্বে রয়েছেন তিনি। তাঁর পরিকল্পনামাফিক পথ চলে লোকসভা নির্বাচনের পর তৃণমূল বিভিন্ন জায়গায় সাফল্য পেতে শুরু করেছে। দিদিকে বলো বা বাংলার গর্ব মমতা – এইরকম কর্মসূচি সামনে এনে তিনি তৃণমূলের হারিয়ে যাওয়া জনসংযোগ ফিরিয়ে দিচ্ছেন। এমনকি করোনা আবহে বিরোধী আক্রমন সামলাতেও তাঁকে উড়িয়ে আনতে হচ্ছে তৃণমূলকে। ফলে একুশের কঠিন লড়াইয়ে তিনিও যে তৃণমূলের অন্যতম স্থপতি হতে চলেছেন সে ব্যাপারে নিঃসন্দেহ অনেকেই।

যদিও বিধানসভা নির্বাচনের এখনও এক বছর বাকি – কিন্তু লোকসভা নির্বাচনের পর থেকেই যেভাবে বিজেপি তাল ঠোকা শুরু করেছিল, তাতে ইঙ্গিত স্পষ্ট ছিল তৃতীয়বারের জন্য নবান্নের কুর্সিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রত্যাবর্তন এত সহজে হতে দেবে না গেরুয়া শিবির। কিন্তু, ৩৪ বছরের বাম শাসনের অবসান ঘটিয়ে – রাজ্যে পরিবর্তন ঘটানো ঘাসফুল শিবিরও যে প্রস্তুত – প্রতিপদেই বুঝিয়ে দিচ্ছে। শেষ ফলাফল কি হবে – তা ঠিক করবেন জনতা জনার্দন। কিন্তু ঘাসফুল শিবিরের সৈনিকরা এই পঞ্চপান্ডবে ভরসা রেখেই আরেকবারের জন্য নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার স্বপ্নে আপাতত বুঁদ।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!