এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > নদীয়া-২৪ পরগনা > পাকা দোতলা বাড়ির মালিক তৃণমূল আত্মীয়ের অ্যাকাউন্টে ঢুকছে আমপান ক্ষতিপূরণের টাকা! শোরগোল রাজ্যে

পাকা দোতলা বাড়ির মালিক তৃণমূল আত্মীয়ের অ্যাকাউন্টে ঢুকছে আমপান ক্ষতিপূরণের টাকা! শোরগোল রাজ্যে


ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ে বিধ্বস্ত এলাকার মানুষদের সাহায্যার্থে ইতিমধ্যেই এগিয়ে এসেছে রাজ্য সরকার। যে সমস্ত মানুষদের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ে ঘর পড়ে গিয়েছে, তাদের জন্য রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে আর্থিক সাহায্য করা হচ্ছে। কিন্তু এবার এক্ষেত্রে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠল ঝড়ে বিধ্বস্ত হয়ে যাওয়া বাড়ি তৈরীর জন্য সরকার অর্থ সাহায্য করলেও, সেই বাড়ির টাকা ঢুকে গেল ঝকঝকে সুন্দর করা পাকা বাড়িতে। যা নিয়ে এখন ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ঘূর্ণিঝড়ে ঘরহারাদের জন্য মাথাপিছু কুড়ি হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। যা সরাসরি ক্ষতিগ্রস্তদের অ্যাকাউন্টে চলে যাচ্ছে। কিন্তু এক্ষেত্রে যাদের ঘরের বিন্দুমাত্র ক্ষতি হয়নি এবং যাদের পাকা দোতলা বাড়ি, তারা অনেকেই টাকা পেয়ে গিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, কল্যাণীর মদনপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মাজদিয়া 28 জনের ঘর ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ে ভেঙে দিয়েছে। কিন্তু এই 28 জনের মধ্যে অন্তত 20 জনের পাকাপোক্ত ইটের বাড়ি।

যার ফলে তীব্র চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। জানা গেছে, স্থানীয় পঞ্চায়েত অফিসে বাপ্পা অধিকারীর দাদা সোমনাথ অধিকারী ক্ষতিপূরণের টাকা পেয়েছেন কিন্তু পেশায় ব্যবসায়ী সোমনাথবাবুর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়। তার আট কামরা দুতলা বাড়ি। ঘূর্ণিঝড়ে বাড়ির বিন্দুমাত্র ক্ষতি হয়নি। কিন্তু তা সত্ত্বেও তিনি এই টাকা পেয়ে গিয়েছেন। তিনি কেন এই টাকা পেলেন? এদিন এই প্রসঙ্গে সোমনাথবাবু বলেন, “সবকিছু তো মানুষের জন্যই। সরকারি টাকা আমি নিয়েছি সরকারের টাকা যে সুযোগ পাবে, সেই নেবে। এতে গরিব বড়লোকের কি আছে।”

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

অন্যদিকে মাজদিয়ার সাতরাপাড়া পঞ্চায়েতের সদস্য পবিত্র সাতরাও টাকা পেয়ে যাওয়ায় প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তিনি কেন ক্ষতিপূরণের টাকা পেলেন? এদিন এই প্রসঙ্গে প্রসঙ্গে পবিত্রবাবুর স্ত্রী মুকুল সাঁতরা বলেন, “রান্নাঘরের চারটি টালি ভেঙে গিয়েছে। ওই টাকা থেকে 200 টাকা খরচ করে টালি কিনব। বাকি টাকা ব্যাংকে জমিয়ে রাখব।” তবে প্রশ্নকর্তা সাংবাদিক শুনেই পঞ্চায়েত সদস্যের স্ত্রী কিছুটা থতমত খেয়ে বলেন, “এখন মনে হচ্ছে টাকাটা নেওয়া উচিত হয়নি। আসলে সেই সময় ভেবেছিলাম রাজনৈতিক ক্ষমতা যখন আছে, তখন নিয়ে নিই।”

একইভাবে এই গ্রামের আরও দুই সদস্য অমিত মৃধা এবং অতন্দ্র মৃধার বাড়িতে গিয়েও দেখা গেল, তাদের বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত না হয়েও তারা টাকা পেয়ে গিয়েছেন। কিন্তু কেন এমন হচ্ছে? যেখানে সরকারের পক্ষ থেকে খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের অর্থ দিয়ে সাহায্য করতে হবে, সেখানে কেন এতটা দুর্নীতি? প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়ির জন্য টাকা না ঢুকে যদি কোটিপতিরা টাকা পান, তাহলে সরকারের উদ্দেশ্য কি করে সাধিত হবে?

এদিন এই প্রসঙ্গে কল্যাণী ব্লক তৃণমূল সভাপতি পঙ্কজ কুমার সিংহ বলেন, “আমি ঘটনাটা শুনেছি। বিডিওকে বলেছি তদন্ত হওয়া উচিত। মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে।” যদিও বা গোটা ঘটনায় তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন কল্যাণীর বিডিও দীপ চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু যে যে কথাই বলুন না কেন, যেভাবে সরকারি তরফে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য টাকা দেওয়া হচ্ছে এবং সেই টাকা চলে যাচ্ছে পাকা বাড়ির মালিক তৃণমূল আত্মীয়দের জন্য, তাতে গোটা পরিস্থিতি সমাধানে এখন প্রশাসন কি পদক্ষেপ নেয়, তার দিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!