এখন পড়ছেন
হোম > জাতীয় > মোদির অনুরোধ, জনতা কার্ফু মানবে না তৃণমূল? কর্মী-সমর্থকদের পোস্ট! চাপ নেত্রীর! জনসাধারনের বাড়ছে ক্ষোভ!

মোদির অনুরোধ, জনতা কার্ফু মানবে না তৃণমূল? কর্মী-সমর্থকদের পোস্ট! চাপ নেত্রীর! জনসাধারনের বাড়ছে ক্ষোভ!


করোনা ভাইরাস ভয়াবহ মারণ রোগ। এই রোগকে আটকাতে যে যার মতো করে চেষ্টা করছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে শুরু করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সকলে একযোগে সকলের কাছে আবেদন করছেন, যাতে এই রোগকে আটকানোর জন্য সকলেই চেষ্টা করেন এবং এর মাঝে যাতে কেউ রাজনীতি না আনেন।

সরকার থেকে চিকিৎসক প্রত্যেকেই জনসাধারণের কাছে আবেদন জানাচ্ছেন যাতে বেশি পরিমাণে জমায়েত কোথাও না হয়। আবেদন জানানো হচ্ছে, যাতে সাধারণ মানুষ বাড়িতে থাকেন। ইতিমধ্যেই এই ভাইরাসকে আটকাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির তরফে জনতা কার্ফুর কথা ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী রবিবার সকাল ৭ টা থেকে রাত্রি ৯ টা পর্যন্ত কাউকে বাড়ির বাইরে না বেরোনোর আবেদন করেছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণা নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ এবং অত্যন্ত সাহসী ঘোষণা। প্রধানমন্ত্রী চাইছেন, ভাইরাসকে আটকাতে। আর তাই ছুটির দিনে যাতে সাধারণ মানুষকে কিছুটা গৃহবন্দী করে রাখা যায় এবং এই ভাইরাসকে আটকানো যায় তার জন্যই জনতা কার্ফু জারী করেছেন নরেন্দ্র মোদি বলে মত বিশেষজ্ঞদের।

তবে নরেন্দ্র মোদির এই সিদ্ধান্ত নিয়ে এবার রাজনীতি শুরু করে দিলেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা বলে অভিযোগ উঠছে বিভিন্ন মহল থেকে। নরেন্দ্র মোদী এই জনতা কারফিউ জারি করার সাথে সাথেই, তার চরম বিরোধিতা করতে শুরু করেছেন তৃণমূলের একাংশ। ইতিমধ্যেই সোশ্যাল সাইটে তৃণমূলের অনেকে দাবি করতে শুরু করেছেন, প্রধানমন্ত্রীর এই জনতা কারফিউ কেউ মানবেন না। এই নিয়ে বড় বড় পোস্ট পড়ছে ফেসবুক সমেত সোশ্যাল মিডিয়ায়। দাবি একটাই – ‘প্রধানমন্ত্রীর চাপানো জনতা কার্ফু মানছি না মানব না’।

কেউ লিখছেন – “ওই দিন বাড়ি থেকে বেরোতেই হবে, এর বিরোধিতা করতেই হবে।” কেউ বলছেন একদিন না বেরোলেই কি সব ভালো হয়ে যাবে? আমি বেরোবোই – আপনি? এমন অসংখ্য পোস্টে ভরে উঠছে সোশ্যাল মিডিয়ার পেজ। কয়েকজন পাল্টা পোস্ট করছেন – ‘এসব ছাড়ুন, বেঁচে থাকলে অনেক বিরোধিতা করার সুযোগ পাবেন , এখন ঘরে থাকুন’। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে – তাঁদের গায়ে রীতিমতো সাঁটিয়ে দেওয়া হচ্ছে, তাঁরা নাকি বিজেপি কর্মী! আর এই নিয়েই ক্রমশ ক্ষোভ বাড়ছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। অনেকে বলছেন, শুধুমাত্র বিরোধিতা করার জন্যই তৃণমূলের কর্মীরা প্রধানমন্ত্রীর এই সময়োপযোগী আবেদনের বিরোধিতা করছেন, একবারের জন্য সাধারণ মানুষদের সুরক্ষার কথা ভাবছেন না!

ফেসবুকের পেজ রীতিমত ভরে উঠছে পোস্টে – আমরা সাধারণ মানুষ, আমরা রাজনীতি বুঝিনা! কে মোদী! কে দিদি! নিজে বাঁচলে বাবার নাম! আর এখানেই প্রশ্ন উঠছে – সাধারণ মানুষ সচেতন, অনেকেই বাড়ি থেকে বের হচ্ছেন না। কিন্তু তাঁরা আতঙ্কিত যে, তৃণমূল কর্মীরা যদি সত্যি সত্যিই, মোদী বিরোধিতা করার জন্য এইভাবে বাড়ি থেকে বের হন, তাহলে যাঁরা বাড়িতে থাকছেন, তাঁরাও আজ না হয় কাল সংক্রমনিত হতে পারেন।

https://www.youtube.com/watch?v=SNv34eNSLfs

অনেকেই ফেসবুকে আবেদন করছেন – বিষয়টা এমন নয় যে, তোমার হলো তুমি মরলে, আমার কি? মরলে সবাই মরবে, তাই তৃণমূল কর্মীদের এহেনো কাজকর্মে ক্ষোভ বাড়ছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। অনেকেই আবার পোস্ট করছেন – মোদী দিদি ভুলে যান, প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী যা যা বলছেন তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করুন।

কিন্তু তাঁদের সেই মানবিক দাবিকেও ফুৎকারে উড়িয়ে তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের দাবি – আমরা শুধু দিদিকে চিনি, দিদি মোদী বিরোধী। তাই মোদী যা বলবেন তা মানব না! করোনা আটকাতে কাজ করছেন শুধু দিদি, মোদী যা বলছেন – তার কোনো বাস্তবতা নেই! একদিন বাড়িতে বসে থাকলে বা থালা বাজালেই – করোনা আটকানো যাবে না! তাই জনতা কারফিউয়ের নামে জোর করে চাপিয়ে দেওয়া এই রাজনৈতিক পদক্ষেপ মানছি না, মানবো না!

আর রাজ্যের শাসক দলের নেতাকর্মীদের এই আচরণ এখন রীতিমত প্রশ্নের মুখে পড়তে শুরু করেছে। কেননা চিকিৎসক থেকে শুরু করে বিশেষজ্ঞ প্রত্যেকেই বলছেন, এই সময় বেশি পরিমাণে বাইরে বেরোনো কখনই উচিত নয়। ১৯৫ টি দেশের মধ্যে ইতিমধ্যেই করোনা আক্রান্ত দেশের সংখ্যা – ১৭৬, মৃত্যু হয়েছে এখনো পর্যন্ত – ৯,৮৪০ জনের। সারা পৃথিবীতে মোট ২,৩৪,০৭৩ জন আক্রান্ত এবং সংখ্যাটা রোজই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে – এমনটাই তথ্য দিচ্ছে WHO। একের পর এক দেশ নিজেদেরকে গৃহবন্দি করে ফেলেছে ইতিমধ্যেই।

আমাদের দেশেও হানা দিয়েছে মারণ ভাইরাস করোনা – তা আটকাতে বার বার প্রতিটা রাজ্যের, দেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রক থেকে শুরু করে ডাক্তার-নার্স ও শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের তরফ থেকেও বার বার অনুরোধ করা হচ্ছে, দরকার ছাড়া বের হবেন না বাড়ি থেকে। সেখানে তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের এহেন আচরণ বা এই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক বিরোধিতা আদৌ কি গ্রহণযোগ্য?

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

ইতিমধ্যেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা WHO-এর তরফ থেকে জানানো হয়েছে , মানবশরীর ছাড়া এই ভাইরাস খুব বেশি সময় বাচেঁনা। যদি আপনারা বাড়িতে থাকেন তাহলে এই ভাইরাস সংক্রমণ হবার ভয় অনেকাংশে কম। তাই প্রধানমন্ত্রী চেষ্টা করছেন, মানুষকে অর্ধেক দিনের জন্যও যদি গৃহবন্দি রাখা যায় – তাহলে এই ভাইরাসের চেন অনেকাংশেই ভেঙ্গে দেওয়া যাবে। কিন্তু সেই দিকটিকে রাজনীতির দিকে নিয়ে গিয়ে, তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা কর্মীরা যেভাবে এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করছেন, নিজেদের জেদ দেখানোর চেষ্টা করছেন – তাতে তাঁরা কি সাধারণ মানুষকে আরও বড় বিপদের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন না? এখন তা নিয়েই বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন।

একাংশের বক্তব্য, প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদি এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দুজনেই করোনা ভাইরাস আটকানোর জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছেন। দুজনেই বার্তা দিচ্ছেন, কেউ ঘর থেকে বেশি বেরোবেন না। কিন্তু সেই ব্যাপারটিকে যেভাবে তৃণমূলের নিচুতলার নেতাকর্মীরা সোশ্যাল সাইটে পোস্ট করে প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করছেন, তাতে পরোক্ষে জনতা জনার্দনের ক্ষুব্ধ হওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। যার প্রভাব সরাসরি আগামী দিনে ভোটবাক্সে পড়তে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

কেননা যদি এর ফলে বাড়ি থেকে বের হয়ে বিরোধিতা দেখান তৃণমূল কর্মী সমর্থকগণ – আর তার ফলে সংক্রমণ বাড়ে তাহলে সেই ক্ষোভকে মেটানো এতটা সহজ হবে না। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, সেক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের মনে এই প্রশ্নটা বার বার ঘুরপাক খাবে, শুধুমাত্র বিরোধিতা করার জন্য তাদেরকে মৃত্যুমুখে পড়তে হলো। মরতে কেউ চায়না, বাঁচার জন্যই কিন্তু এতকিছু! এখানে রাজনৈতিকমহলে দুটি প্রশ্ন উঠছে –

এক – কোথাও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেননি যে এর বিরোধিতা করতে হবে, অতএব সেদিন বেরোতেই হবে। তবে তৃণমূল কর্মী সমর্থকগন কিসের ভিত্তিতে এই বিরোধিতা করছেন?
দুই – মুখ্যমন্ত্রী নিজেই ঘোষণা করেছেন – এই নিয়ে কেউ গুজব ছড়ালে বা জেনে বুঝে এই সংক্ৰমন ছড়ালে – আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তাহলে একের পর এক এই পোস্ট যখন তাঁর দলীয় কর্মীরাই করে, পরিস্থিতি আরও জটিল করে তোলার চেষ্টা করছেন – সেখানে কেন এখনো চুপ করে আছেন নেত্রী? কেন জনসমক্ষে কর্মী সমর্থকদের উদ্দেশ্যে কোনো কড়া বার্তা দিচ্ছেন না?

আর এখানেই নেটিজেনদের মনে প্রশ্ন – করোনা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী যথেষ্টই সতর্ক। মানুষজনকে ঘরে থাকতে বলছেন, সাধারণ মানুষদের খাবার ব্যাবস্থা করছেন, সংক্রমণ রুখতে যথাযত ব্যাবস্থা নিচ্ছেন। তবে কোন অদৃশ্য অঙ্গুলিহেলনে তৃণমূল কর্মী সমর্থকগণ এহেন ভয়ঙ্কর ক্ষতির দিকে মানুষজনকে ঠেলে দিতে এগোচ্ছেন?

ফেসবুক খুললেই দলমত নির্বিশেষে বেশিরভাগ সাধারণ মানুষের একটাই আকুতি – মোদী, দিদি যে যাকেই সাপোর্ট করুন।দয়া করে বাড়িতে থাকুন, কেননা এখনো যে পর্যায়ে আছে এই মহামারী তাতে তাকে ঠেকানো সম্ভব হলেও হতে পারে , কিন্তু যদি কোনোভাবে ছড়িয়ে যাই সেদিন মোদী বাংলা দখল করলো নাকি মমতা ব্যানার্জী প্রধানমন্ত্রী হলো সেদিনটা দেখার জন্য বেঁচে থাকবেন না আপনি!

কয়েকজন তো আরও একধাপ এগিয়ে মানবিক আবেদন রাখছেন – সবচেয়ে বড় কথা, ধরুন আপনাদের এই অবহেলার কারণে আপনার কোনো প্রিয়জনের এই রোগ হলো, আপনার ইমিউনিটি পাওয়ার আছে আপনি বেঁচে গেলেন, কিন্তু আপনার যে শিশুটি আছে, বৃদ্ধ মা, বাবা আছেন তাদের যদি কিছু হয় সেই শোক সামলাতে পারবেন তো? সারাজীবন নিজের রাজনৈতিক ‘স্টান্স’ দেখানোর জন্য নিজের প্রিয়জনকে মৃত্যুমুখে ঠেলে দেওয়ার অপরাধবোধ আপনাকে কুঁড়ে কুঁড়ে খাবে না তো?

একদল নেটিজেন আবার পোস্ট করছেন – মোদী-দিদি দেশ বা রাজ্যের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ প্রশাসনিক স্তরে আছেন। তাঁদের কাছ পর্যন্ত এই ভাইরাস যদি পৌঁছায়, সেটা দেখার জন্য হয়ত আমি-আপনি বেঁচে থাকব না! কেননা ওনাদের সুরাক্ষাবলয় ভেদ করে যদি করোনা আক্রান্ত হন, তবে ততদিনে হয়ত অর্ধেকের বেশি দেশ উজাড় হয়ে যাবে! আর তাই সাবধান হন, শুধু এই রবিবার নয় – প্রত্যেকটা দিন দয়া করে বাড়িতে থাকার চেষ্টা করুন, যতদিন না সরকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক বলে ঘোষণা করে। আপনার প্রিয়জনের মুখের দিকে তাকিয়ে, আপাতত রাজনৈতিক বিরোধিতা ভুলে, কঠিন পরিস্থিতিতে সবাই একসাথে মিলে কাজ করুন। করোনা কেন কেউই কিছু করতে পারবে না। আর বেঁচে থাকলে বিরোধিতা তো চলবেই। যে যেমন ভাবে পারেন বিরোধিতা করবেন, কিন্তু আগে বাঁচুন!

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!