এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > তৃণমূলের সশস্ত্র মিছিল আটকাতে গিয়ে আক্রান্ত পুলিশ! দিনভর বোমাবাজি, উত্তপ্ত এলাকা

তৃণমূলের সশস্ত্র মিছিল আটকাতে গিয়ে আক্রান্ত পুলিশ! দিনভর বোমাবাজি, উত্তপ্ত এলাকা

রাজ্যে তৃনমূলের আমলে আইনের শাসন নেই বলে মাঝেমধ্যেই সরব হতে দেখা যাচ্ছে বিরোধী দল বিজেপিকে। এমনকি তৃণমূল পুলিশকে দলদাসে পরিণত করে অনেক ক্ষেত্রে পুলিশের উপর আঘাত হানছে বলে অভিযোগ করত বিরোধীরা।

আর এবার বিরোধীদের সেই অভিযোগকে কিছুটা সত্যি করেই মঙ্গলবার মাথাভাঙা-১ ব্লকের নয়ারহাট গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় তৃণমূল কংগ্রেসের সশস্ত্র মিছিল হয়। আর ওই মিছিলে বাধা দিতে গিয়েই আক্রান্ত হন পুলিশকর্মীরা। আর পুলিশ বনাম তৃণমূল কর্মীদের সংঘর্ষে উত্তপ্ত পরিস্থিতির আকার নেয় নয়ারহাট এলাকা। জানা যায়, বাজার চত্বরে প্রকাশ্যে বোমাবাজি করা, পুলিসের তিনটি ভ্যান ভাঙচুর, পুলিস কর্মীদের মারধর করা সহ এক পুলিস কর্মীর রাইফেল ছিনতাই করার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল কর্মীদের বিরুদ্ধে।

এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় আটজন পুলিশ কর্মী জখম হন। যাদের মধ্যে দু’জনের আঘাত গুরুতর হওয়ায় তাঁদের মাথাভাঙা মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যদিকে বিজেপির তরফে অভিযোগ করা হয়েছে যে, তাদের দু’জন কর্মীকে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা এদিন মারধর করেছে। তাঁদের মধ্যে গুরুতর জখম একজন কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

তবে তৃণমূলের তরফে অবশ্য এই সমস্ত অভিযোগকে অস্বীকার করা হয়েছে। তাদের দাবি, পুলিস বিনা প্ররোচনায় তাদের কর্মীদের উপর লাঠিচার্জ করেছে। এতে তাদের কয়েকজন আহত হন। পরিস্থিতি থমথমে থাকায় এলাকায় পুলিসের টহল চলছে। আর অভিযোগ পাল্টা অভিযোগেই এখন চরমে উঠেছে রাজনৈতিক তরজা। এদিন এই প্রসঙ্গে কোচবিহার জেলা বিজেপির সভানেত্রী মালতী রাভা রায় বলেন, “নয়ারহাটে এর আগেও পুলিসকে সঙ্গে নিয়ে তৃণমূলের লোকজন সন্ত্রাস করার চেষ্টা করেছিল। এদিন টোটো, অটো দেদার ভাঙচুর করা হয়েছে। ওরা দোকানেও ভাঙচুর করেছে। সেসময়ে বাজারে থাকা আমাদের দু’জন কর্মীকে মারধর করে। তাঁরা এখন হাসপাতালে ভর্তি আছেন। তৃণমূল কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে এদিন তার দৃষ্টান্ত রাখল। পুলিস ভ্যানে ভাঙচুর, কর্মীদের মারধর, রাইফেল ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়া এসবের তদন্ত হওয়া দরকার।”

অন্যদিকে এই ব্যাপারে স্থানীয় তৃণমূল নেতা বিধায়ক হিতেন বর্মন বলেন, “নয়ারহাটে এদিন পুলিসের অনুমতি নিয়েই আমাদের মিছিল ছিল। কিন্তু পুলিস মিছিল আটকে দেয়। এটা নিয়েই ঝামেলা হয়েছে শুনেছি। পুলিস আমাদের কর্মীদের উপর লাঠিচার্জ করেছে। এতে আমাদের কয়েকজন নেতাকর্মী জখম হন। তবে পুলিসের গাড়ি ভাঙচুর, তাদের উপর হামলার ঘটনার ব্যাপারে আমার কিছু জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখব। এলাকায় বিজেপি সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করে রেখেছে। তাতে সাধারণ মানুষ ক্ষিপ্ত হয়ে আছে।” একইভাবে এই ঘটনায় জেলা তৃনমূলের সভাপতি বিনয়কৃষ্ণ বর্মন বলেন, “নয়ারহাটের ঘটনা একেবারেই অবাঞ্ছিত। আমি বিস্তারিত খোঁজ নিয়ে দেখছি।”

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে মাথাভাঙার নয়ারহাট উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে। অতীতে নয়ারহাটে তৃণমূলের মিছিলের প্রস্তুতি ঘিরে ব্যাপক অশান্তি ছড়িয়েছিল। কিন্তু তখন বিজেপির বাধায় তৃণমূল মিছিল করতে পারেনি। তবে সেই সময় পুলিসের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছিল। আর এদিন ফের নয়ারহাটে তৃনমূল মিছিল করার সিদ্ধান্ত নিলে সেই মিছিলকে কেন্দ্র করে তৃণমূল-বিজেপির সংঘর্ষ যাতে না হয় তার জন্য সকাল থেকে মাথাভাঙার এসডিপিও এবং আইসি’র নেতৃত্বে বিশাল পুলিস বাহিনী বাজার চত্বরে উপস্থিত হয়। সকাল ১১টা থেকে তৃণমূলের লোকজন নয়ারহাট বাজারে জমায়েত হতে থাকে। বিজেপিও পাল্টা জমায়েত শুরু করতেই পুলিস তাদের সরিয়ে দেয়। ১২টায় তৃণমূল মিছিল নিয়ে বাজারে দিকে এগোয়। কিন্তু তৃণমূলের ওই মিছিলটি সশস্ত্র অবস্থায় ছিল। ফলে পুলিস কর্মীরা সেই মিছিল আটকাতে বাজার চৌপথিতে যায়।

আর তখনই মিছিলকারীরা পুলিসের উপর চড়াও হয়ে পুলিসকে লক্ষ্য করে চলে দেদার বোমা। রড, বাঁশ দিয়ে কয়েকজন পুলিস কর্মীকে রাস্তায় ফেলে পেটানো হয়। আর এবার তৃণমূলের সশস্ত্র মিছিল আটকানোয় পুলিশের ওপর তৃণমূলের এহেন হামলার পরিপ্রেক্ষিতে এবার রাজ্য প্রশাসন আদৌ কোনো ব্যবস্থা নেয় কিনা দোষীদের বিরুদ্ধে, সেদিকেই তাকিয়ে সকলে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!