এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূলের সঙ্গে জোট, আক্রান্ত কর্মীদের দেখতে আসবেন তো ? ন্যায়যাত্রা শুরু করতেই বিপাকে রাহুল !

তৃণমূলের সঙ্গে জোট, আক্রান্ত কর্মীদের দেখতে আসবেন তো ? ন্যায়যাত্রা শুরু করতেই বিপাকে রাহুল !


 

প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- এই রাজ্যের কংগ্রেস নেতারা তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ করেন। কিন্তু দিল্লিতে আবার হাইকমান্ডের নির্দেশের কারণে সেই তৃণমূল নেত্রীর এবং তার ভাইপোর সঙ্গে এক টেবিলে বিজেপিকে সরাতে আলোচনা করতে হয় কংগ্রেসকে। বামেদের অবস্থাও একই। আর এই পরিস্থিতিতে আজ থেকে আবার ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা শুরু করেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। জানা যাচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গেও তার এই যাত্রা এসে পৌঁছবে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গে তো তিনি আসবেন। কিন্তু লড়াই করবেন কার বিরুদ্ধে? বাংলায় তো তার দলের নেতারা প্রধান শত্রু ভাবে তৃণমূল কংগ্রেসকে। যে তৃণমূলের সঙ্গে তিনি আবার বিজেপিকে সরানোর জন্য জোট করেছেন।

স্বাভাবিকভাবেই পশ্চিমবাংলায় রাহুল গান্ধীর এই যাত্রা এসে পৌঁছানোর পর তৃণমূল সরকারের আমলে তৃণমূলের দুষ্কৃতীদের দ্বারা তার দলের যে সমস্ত কর্মীরা খুন হয়েছেন, যাদের ওপর হামলা হয়েছে, তাদের বাড়িতে যাবেন তো রাহুলবাবু? নাকি সুকৌশলে গোটা ঘটনাকে এড়িয়ে যাবেন তিনি! নয়া কর্মসূচি শুরু হতেই রাহুল গান্ধীকে যে প্রশ্নবাণে বিদ্ধ করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি, তাতে উত্তাল হয়ে উঠেছে রাজ্য রাজনীতি। আর এই প্রশ্নবানে যে চরম অস্বস্তি তৈরি হয়েছে বাংলার কংগ্রেস শিবিরে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

প্রসঙ্গত, এদিন এই ব্যাপারে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে প্রশ্ন করা হয়। আর সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে তিনি বলেন, “রাহুল গান্ধীর তো অবশ্যই বাংলায় আসা উচিত। বাংলায় এসে দেখা উচিত যে, দিল্লীতে উনি যাদের সঙ্গে ফিশফ্রাই খাচ্ছেন, সেই সরকারের আমলে বাংলায় তার দলের কতগুলো কর্মী খুন হয়েছেন, কত জনের উপর আক্রমণ নেমে এসেছে, এটা তো ওনার দেখা উচিত। আশা করছি, উনি তাদের বাড়িতে যাবেন।”অনেকে বলছেন, এতে হয়ত বাংলার যারা কংগ্রেস কর্মী, যারা তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াইকে বেছে নিয়েছেন, তারা হয়ত খুশি হচ্ছেন। কিন্তু রাহুল গান্ধী এর ফলে চরম চাপে পড়ে যাবেন। কারণ বাংলায় এসে তিনি আক্রান্ত কর্মীদের বাড়িতে গিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে যদি কথা না বলেন, তাহলে কর্মীদের মধ্যে তাদের দলের শীর্ষস্তরের নেতা সম্পর্কে ভুলবার্তা তৈরি হবে। আর যদি তিনি তৃণমূলের বিরুদ্ধে কথা বলেন, তাহলে সর্বভারতীয় স্তরে বিজেপি বিরোধীতার ক্ষেত্রে সেই জোটে দেখা দিতে পারে ভাঙ্গন। ফলে দুই দিক থেকেই রাহুল গান্ধী সুকান্ত মজুমদারের এই বক্তব্যের রীতিমতো বেকায়দায় পড়ে গেলেন বলেই মনে করছেন একাংশ।

ইতিমধ্যেই গোটা বিষয়ে কটাক্ষ করতে শুরু করেছে বিজেপি। তাদের দাবি, রাহুল গান্ধীর এই যাত্রা নিয়ে সাধারণ মানুষ ভাবিত নয়। কিন্তু তিনি যখন যাত্রা করছেন, তখন তো তার দলের কর্মীদের মনোবলকে প্রাধান্য দেওয়া উচিত। তাহলে বাংলায় এসে তার দেখা উচিত যে, কতজন কর্মী তৃণমূল সরকারের আমলে মারা গিয়েছেন, কত জনের উপর হামলা হচ্ছে, কতজন মিথ্যা কেসে জড়িয়ে পড়েছেন! ওপরতলায় তৃণমূলের নেতা নেত্রীর সঙ্গে তিনি সেটিং করবেন, আর নীচু তলায় কর্মীরা মার খাবেন, দুটো একসঙ্গে হতে পারে না। তাই রাহুল গান্ধী আগে নিজের দলের স্ট্যান্ড পয়েন্ট ঠিক করুন। তারপরেই এই সমস্ত যাত্রা করবেন বলেই দাবি গেরুয়া শিবিরের।

পর্যবেক্ষকদের মতে, দিল্লিতে পাশাপাশি বসে বিজেপির বিরুদ্ধে কথা, আর যাদের পাশে বসে ছিলেন, তাদের বিরুদ্ধেই বাংলায় বড় বড় কথা। ফলে কংগ্রেসের এই দ্বিচারিতার নীতি ক্রমশ মানুষের কাছে স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তাই এখন শীর্ষ নেতা হিসেবে রাহুল গান্ধীর কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। তাকে বাংলার ক্ষেত্রে অবস্থান স্পষ্ট করতেই হবে। আর তা না হলে এই সমস্ত যাত্রা করে লাভের লাভ কিছুই হবে না। কিন্তু কি হবে, তা ভবিষ্যৎ বলবে। তবে সামগ্রিক ভাবে বিজেপির রাজ্য সভাপতির বক্তব্য যে প্রবল গলার কাঁটার মত বিঁধছে রাহুল গান্ধী এবং কংগ্রেস নেতাদের কাছে, তা বলার অপেক্ষায় রাখে না। দিনের শেষে তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!