প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – সদ্য হয়ে গেছে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। মূলত এই ঘূর্ণিঝড় উড়িষ্যার বুকে আছড়ে পড়লেও তার লেজের ঝাপটা এড়াতে পারেনি বঙ্গের উপকূলবর্তী অঞ্চল। ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের দাপটে রীতিমতো লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছে দীঘা, শঙ্করপুরের মতন প্রসিদ্ধ এলাকাগুলি। পাশাপাশি হিঙ্গলগঞ্জ থেকে শুরু করে সুন্দরবন, সাগর এলাকা ঘূর্ণিঝড়ের ধ্বংসাবশেষ নিয়ে এখনো জেগে রয়েছে। তবে এই ঘূর্ণিঝড়ের দাপটে দেখা গিয়েছে সুন্দরবন এলাকার একের পর এক বাঁধ ভেঙে পড়েছে। আর তাই নিয়েই এবার তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে ব্যাপক ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন একসময়ের সেচমন্ত্রী সুভাষ নস্কর।

বাম জমানায় আরএসপির সুভাষ নস্কর দীর্ঘদিন সেচমন্ত্রী ছিলেন। সুন্দরবন অঞ্চলকে তিনি নিজের বলেই দাবি করেন। আর এবার জোয়ারের জলে সুন্দরবন এলাকার একের পর এক বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ার কারণে সরাসরি তিনি অভিযোগ এনেছেন তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে। সূত্রের খবর, প্রাক্তন সেচমন্ত্রী সুভাষ নস্কর ক্ষমতা না থাকলেও ঘূর্ণিঝড়ে যখন সুন্দরবন পরিত্রাহি লড়াই চালাচ্ছে, সে সময় তিনি ছুটে গিয়েছেন সুন্দরবনের বিভিন্ন জায়গায়। পাশাপাশি সুভাষ নস্কর দাবি করেছেন, যে বিপর্যয় তৈরি হয়েছে তা পুরোপুরি সরকারের তৈরি করা। সুভাষ নস্করের দাবি, আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস দেওয়া থেকে রাজ্য সরকার ঝড়ের জন্য সতর্কবার্তা দিয়ে এসেছে ঠিকঠাকই, জলস্ফীতি নিয়েও সতর্ক করেছে রাজ্য সরকার।

আর এখানেই সুভাষ নস্করের অভিমত, সরকার সতর্কবার্তা দিলেও বিপদ আসলে তা থেকে বাঁচার জন্য কি কি করতে হবে তার কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। এ প্রসঙ্গে প্রাক্তন সেচমন্ত্রী জানিয়েছেন, রাজ্য সরকারের উচিত ছিল সিমেন্টের ব্যাগ পাঠানো। সে ক্ষেত্রে মানুষ তৈরি থাকলেও সরকারি উদ্যোগের অভাবে বিপর্যয় এড়ানো যায়নি। কেন এত বাঁধ ভেঙে পড়েছে সুন্দরবনে, তা নিয়ে ইতিমধ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও প্রশাসনিক বৈঠকে প্রশ্ন তুলেছেন বলে জানা গিয়েছে। অন্যদিকে প্রাক্তন মন্ত্রী সুভাষ নস্কর পাল্টা প্রশ্ন তুলেছেন, আয়লার সময় যে চার হাজার কোটি টাকা ফেরত গেছে কেন্দ্রের কাছে, তা দিয়ে কেন কোনো কাজ হয়নি?

প্রাক্তন সেচমন্ত্রী অভিযোগ করেছেন, আয়লার পর বাঁধ তৈরি করতে জমি অধিগ্রহণ করা হলেও সরকারের পক্ষ থেকে আর কোনো কাজ হয়নি।  শুধুমাত্র বোর্ড লাগিয়ে কোটি কোটি টাকার নয়ছয় করেছে তৃণমূল সরকার। একটি বাঁধও সঠিক ভাবে রক্ষা করতে সমর্থ হয়নি রাজ্য সরকার। ফলস্বরূপ ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে একের পর এক বাঁধ ভেঙে পড়েছে। আপাতত বাঁধ ভেঙে পড়া নিয়ে ইতিমধ্যেই অভিযোগের আঙুল উঠেছে রাজ্যের বিরোধী দলনেতার দিকে। কারণ তিনি ছিলেন বিগত দিনে রাজ্যের সেচমন্ত্রী। সব মিলিয়ে বাঁধভাঙ্গা নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজ্যে শুরু হয়েছে অভিযোগ পাল্টা অভিযোগের পর্ব।