প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –  করোনা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বা কেন্দ্রের পক্ষ থেকে বৈঠক হলেও, সেখানে আমন্ত্রণ জানানো সত্ত্বেও একাধিকবার উপস্থিত না থেকে দূরত্ব বাড়িয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যার ফলে কেন্দ্র সহযোগিতা করছে না বলে রাজ্যের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হলেও, কেন কেন্দ্রের ডাকা বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী উপস্থিত থাকছেন না, তা নিয়ে নানা মহলে তোলা হয়েছে প্রশ্ন।

আর এই পরিস্থিতিতে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় বাংলায় আছড়ে পড়তে পারে বলে যখন পূর্বাভাস মিলেছে, ঠিক তখনই কেন্দ্রের পক্ষ থেকে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক ডাকা হয়েছে। সূত্রের খবর, আজ সোমবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের পক্ষ থেকে এই বৈঠকের ডাক দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে সেই বৈঠকে অংশগ্রহণ করছেন না পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

তার বদলে এই বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন রাজ্যের মুখ্যসচিব বলে খবর। স্বাভাবিক ভাবেই এত গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হওয়া সত্ত্বেও কেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেখানে উপস্থিত থাকছেন না, তা নিয়ে নানা মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। অনেকে বলছেন, এক্ষেত্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে রাজনীতি আগে প্রাধান্য পাচ্ছে। সাধারণ মানুষের জীবন নয়। তাই তিনি ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় নিয়ে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে বৈঠক হলেও, সেখানে উপস্থিত না থেকে রাজনীতিকেই বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে বলে কটাক্ষ করছে বিরোধীরা।

বলা বাহুল্য, দেশের বিভিন্ন রাজ্যে এই ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়তে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। সেদিক থেকে যে সমস্ত রাজ্যে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে, সেই সমস্ত রাজ্য প্রশাসন ইতিমধ্যেই প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। পরিস্থিতি যাতে সংকটজনক না হয় এবং বাড়তি প্রস্তুতি নিয়ে রাখা যায়, তার জন্য রবিবার গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

আর এই পরিস্থিতিতে আজ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের পক্ষ থেকে একটি বৈঠকের ডাক দেওয়া হয়েছে। মূলত, ঝড়ের আগে উপকূলবর্তী এলাকার মানুষকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া থেকে শুরু করে আশ্রয় দেওয়া, এই সমস্ত ব্যাপার সহ নানা বিষয়ে আলোচনা করতেই যে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বৈঠক ডেকেছেন, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

কিন্তু সেই বৈঠকে উপস্থিত না থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি বার্তা দিতে চাইছেন, এখন তা নিয়েই নানা মহলে তৈরি হয়েছে প্রশ্ন। তবে নবান্নের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, আগে থেকেই অন্য কর্মসূচি রয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সেই কারণে তিনি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ডাকা বৈঠকে উপস্থিত হতে পারছেন না। তার বদলে সেই বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়।

তবে বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, এই সময় যতই গুরুত্বপূর্ণ কাজ থাকুক না কেন, তাকে সামলে নিয়ে এই বৈঠকে যোগ দেওয়া উচিত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। কেননা মানুষের জীবন সবার আগে। একদিকে করোনা পরিস্থিতি, আর তার মধ্যে ভয়াবহ ঝড় আছড়ে পড়ার কারণে মানুষ বিপদগ্রস্ত হতে পারেন। সেদিক থেকে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে কি বার্তা দেওয়া হচ্ছে, তা জানার জন্য সরাসরি এই বৈঠকে উপস্থিত থাকা উচিত ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।

তবে বিরোধীদের অনেকে আবার বলছেন, এখন কেন্দ্রের পক্ষ থেকে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করা হলেও সেখানে উপস্থিত থাকছেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরবর্তীতে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বিমাতৃসুলভ আচরণের অভিযোগ তুলবেন তিনি। কিন্তু আদতে তিনি এই বৈঠকে উপস্থিত না থেকে মানুষের জীবনকে প্রশ্নের মুখে ফেলে দিচ্ছেন। তাই তার ভূমিকা রাজ্যবাসীর দেখা উচিত। সব মিলিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ডাকা বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপস্থিতি নিয়ে যেমন প্রশ্ন তৈরি হয়েছে, ঠিক তেমনই ঝড়কে সামাল দেওয়ার আগে আজ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই বৈঠক থেকে কি বার্তা উঠে আসে, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।