এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > ভাতার দাবিতে এবার কলকাতার রাজপথে বৃহত্তর আন্দোলন এসএসকে-এমএসকে শিক্ষকদের

ভাতার দাবিতে এবার কলকাতার রাজপথে বৃহত্তর আন্দোলন এসএসকে-এমএসকে শিক্ষকদের


এসে গেছে বাঙালির সব থেকে বড় উৎসব – দুর্গাপূজা। যদিও ঘূর্ণিঝড় ‘তিতলি’ নিয়ে কিছুটা চিন্তিত বঙ্গবাসী, কিন্তু তাও বাতাসে শিউলির গন্ধের মধ্যে দিয়ে পুরোপুরি পুজো ‘মুড’ চালু। কিন্তু সেই উৎসবের মরশুমেও মোটেও মন ভালো নেই রাজ্যের হাজার হাজার এসএসকে-এমএসকে শিক্ষকদের। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অন্যান্য চুক্তিভিত্তিক বা অস্থায়ী শিক্ষকদের বেতন বৃদ্ধির ব্যবস্থা করলেও, বিভিন্ন জটিলতায় এসএসকে-এমএসকে শিক্ষকরা তা থেকে বঞ্চিতই রয়ে গিয়েছেন।

আর তাই, এবার কলকাতার রাজপথে বৃহত্তর আন্দোলন চালু করলেন এসএসকে-এমএসকে শিক্ষকরা। রাজ্য সরকার বা মুখ্যমন্ত্রী যখন উৎসবের মরশুমে তাঁদের ভুলে গেছেন তখন আর ঘরে বসে না থেকে সম্মানজনক ভাতার দাবিতে গতকাল করুণাময়ী থেকে বিকাশভবন অভিযানে যোগ দিলেন কয়েক হাজার এসএসকে-এমএসকে শিক্ষক। এমনকি, এই অভিযান চলার সময় ময়ূখ ভবনের সামনে পুলিশ তাঁদের পথরোধ করলে তাঁরা সেখানেই অবস্থানে বসে পড়েন।

প্রসঙ্গত, রাজ্যের এসএসকে-এমএসকে শিক্ষকদের বেতন বৃদ্ধি নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে খোদ শাসকদলের অন্দরেই। এমনকি, এই ব্যাপারে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের চেষ্টা চালাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল কংগ্রেস শিক্ষা সেল। মুখ্যমন্ত্রীর ইউরোপ সফরের প্রাক্কালে পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির অনুমোদিত এসএসকে-এমএসকে ইউনিটের সভাপতি ইসমাইল গায়েন এবং অন্যান্য নেতারা স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর কালীঘাটের বাসভবনে গিয়ে দেখা করেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে তাঁরা যে কতটা অসহায় অবস্থার মধ্যে আছেন এবং তাঁদের ভাতা বৃদ্ধির ব্যাপারে রাজ্য সরকার কোনো সুরাহা না করলে আরো কত করুন হয়ে উঠবে শিশু ও মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্রের শিক্ষকদের অবস্থা তা তাঁরা বিশদে ব্যাখ্যা করেন।

ফেসবুকের কিছু টেকনিকাল প্রবলেমের জন্য সব খবর আপনাদের কাছে পৌঁছেছে না – তাই আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে

এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে

মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সেই বৈঠক যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ ছিল, কেননা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রীতিমত মনোযোগ দিয়ে এসএসকে-এমএসকে শিক্ষকদের বেতন বৃদ্ধির ব্যাপারটি শোনেন। তিনি তাঁদের একটু ধৈর্য্য ধরতে অনুরোধ করেন, কেননা তাঁর দাবি, কেন্দ্র টাকা দিচ্ছে না, তাই অনেক কষ্টে এসএসকে-এমএসকে শিক্ষকদের ভাতা দিতে হচ্ছে। কিন্তু সমগ্র ব্যাপারটি তাঁর মাথায় আছে – তিনি তাই ‘ইতিবাচক’ কিছুর জন্য একটু ধৈর্য্য ধরতে অপেক্ষা করেন।

কিন্তু, মুখ্যমন্ত্রীর এহেন আশ্বাসবাণীর পরেও কিছুই হয় নি রাজ্যের ৬৮ হাজার এসএসকে-এমএসকে শিক্ষকের। এমনকি, বিগত আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসের বেতনও তাঁরা পান নি। আর এসবের পরিপ্রেক্ষিতে এসএসকে-এমএসকে শিক্ষকদের চারটি সংগঠন জোট বাঁধার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এসএসকে-এমএসকে যৌথ শিক্ষক সমিতি, পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির এসএসকে-এমএসকে ইউনিট, পশ্চিমবঙ্গ এসএসকে-এমএসকে কল্যাণ সমিতি এবং নিখিলবঙ্গ সম্প্রসারক এবং সহায়িকা সমিতি – এই চার সংগঠন মিলে ‘পশ্চিমবঙ্গ এসএসকে-এমএসকে শিক্ষক এবং এ এস ঐক্যমঞ্চ’ তৈরী করেছে।

এই নতুন মঞ্চের সভাপতি হিসাবে মুকলেস রহমান বিশ্বাস এবং কার্যকরী সভাপতি হিসাবে ইসমাইল গায়েনকে দায়িত্ত্ব দেওয়া হয়েছে। গতকালের জমায়েত ও মিছিলের পরে নতুন মঞ্চের তরফে স্কুল শিক্ষাদপ্তর, মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এবং সর্বশিক্ষা দপ্তরে স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়। প্রসঙ্গত এর আগে গত সেপ্টেম্বর মাসেই পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল কংগ্রেস শিক্ষা সেল সরাসরি নবান্নে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরে ৫ দফা দাবিতে স্মারকলিপি জমা দেয়। সেখানে স্পষ্ট দাবি জানানো হয় যে –

১. এসএসকে শিক্ষকদের বর্তমানে প্রাপ্ত ভাতা ৫,৯৫৪ টাকা বাড়িয়ে ন্যূনতম ১২ হাজার টাকা করা হোক
২. সুপারভাইজারদের বর্তমানে প্রাপ্ত ভাতা ৭,৪৪২ টাকা বাড়িয়ে ন্যূনতম ১৪ হাজার টাকা করা হোক
৩. এমএসকে গ্র্যাজুয়েট শিক্ষকদের বর্তমানে প্রাপ্ত ভাতা ৮,৯৩০ টাকা বাড়িয়ে ন্যূনতম ১৫ হাজার টাকা করা হোক
৪. এমএসকে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট শিক্ষকদের বর্তমানে প্রাপ্ত ভাতা ৯,৬৭৫ টাকা বাড়িয়ে ন্যূনতম ১৬ হাজার টাকা করা হোক
৫. প্রধান শিক্ষকদের বর্তমানে প্রাপ্ত ভাতা ১০,৪১৯ টাকা বাড়িয়ে ন্যূনতম ১৮ হাজার টাকা করা হোক

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!