এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের দলবদলের ‘জল্পনা’ ঘিরে সরগরম রাজ্য-রাজনীতি!

বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের দলবদলের ‘জল্পনা’ ঘিরে সরগরম রাজ্য-রাজনীতি!

রাজ্য-রাজনীতিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষিত বিরোধী হিসাবে যে কজনের নাম সবার উপরে থাকে বর্তমান বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের নাম সেখানে শীর্ষস্থানে ছিল। অন্তত ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচন পর্যন্ত। কিন্তু, তারপর থেকেই দ্রুত বদলাতে থেকেছে ছবি বলে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা। যে আব্দুল মান্নানকে একসময় মার্শাল দিয়ে বিধানসভা থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল বা বিধানসভা থেকে সাসপেন্ড করার মত গুরুতর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল, সেই তাঁকেই নিজে গিয়ে শারীরিক অবস্থার খোঁজ খবর নিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী!

অন্যদিকে, কংগ্রেসের ঘর ভাঙিয়ে তৃণমূল একের পর এক বিধায়ক নিজেদের পক্ষে নিলে একসময় খড়্গহস্ত হয়ে উঠেছিলেন আব্দুল মান্নান। কিন্তু পরবর্তীকালে, এই নিয়ে আব্দুল মান্নান কার্যত চুপ করে যান! নিন্দুকেরা বলে থাকেন, রাজ্যের প্রধান বিরোধীদল হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় বিধায়ক সংখ্যা বর্তমানে কংগ্রেসের হাতে নেই! আর তাই, এই নিয়ে বেশি হইচই করলে, কংগ্রেস যেমন প্রধান বিরোধী দলের তকমা হারাবে, পাশাপাশিই বিরোধী দলনেতার পদও হারাতে হবে আব্দুল মান্নানকে। আর তাই নাকি, তিনি সব দেখেও চুপ!

আর এইসবের পরিপ্রেক্ষিতে, এবার আব্দুল মান্নানের সর্বশেষ পদক্ষেপ নিয়ে চূড়ান্ত জল্পনা রাজ্য-রাজনীতিতে। কানা ঘুষো সমালোচনা শুরু হয়ে গেছে তাঁর দলের অন্দরেই। এমনকি তৃণমূলের অন্দরে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে সেখানেও জোর গুঞ্জন চলছে তবে কি এবার মান্নান সাহেব আসছেন তাদের দলে ? এবার আসুন জেনে নিই এত জল্পনার আসল কারণ।

কারণ হল রাজ্য সরকারের দুর্গাপূজার কার্নিভ্যালে মঞ্চ আলো করে থাকতে দেখা গেল এই কংগ্রেস নেতাকে! আর এরফলেই উঠে গেছে একরাশ প্রশ্ন। কেননা, কংগ্রেস বরাবরই এই কার্নিভ্যালের বিরোধিতা করে এসেছে। কংগ্রেসের ঘোষিত সিদ্ধান্তই হল, রাজ্যে কর্মসংস্থান নেই, সরকারি কর্মী বা শিক্ষকদের রয়েছে বিপুল বেতন বৈষম্য! সেখানে রাজ্য সরকারের অঢেল খরচের এই কার্নিভ্যালকে কোনোমতেই নাকি সমর্থ করা যায় না!

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

আর সেই কার্নিভ্যালেই নাকি মঞ্চ আলো করে রইলেন রাজ্য কংগ্রেসের অন্যতম মুখ! আব্দুল মান্নানের বিরোধী গোষ্ঠী থেকে এই নিয়েই শুরু হয়েছে ফিসফাস! তাদের বক্তব্য, বর্তমান সমীকরণে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের টিকিটে পুনরায় চাঁপদানি থেকে জিতে আসতে পারার সম্ভাবনা আব্দুল মান্নানের অত্যন্ত ক্ষীণ! অন্যদিকে, এই আসনে বেশ পিছিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসও। কিন্তু, আব্দুল মান্নান যদি তৃণমূলের টিকিটে চাঁপদানি থেকে দাঁড়ান – তাহলে কিন্তু এই আসনে জয় সহজ হতে পারে।

আর তাই নাকি, সেই সমীকরণে তৃণমূল ও আব্দুল মান্নান – লাভবান হচ্ছে দুই পক্ষই। ফলে, আব্দুল মান্নানের তৃণমূল ঘনিষ্ঠতা বাড়ছে! অন্যদিকে, আব্দুল মান্নান গোষ্ঠী এইসব জল্পনাকে ছুঁড়ে গঙ্গার জলে ফেলে দিয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক পদ কার্নিভ্যালে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল বিরোধী দলের প্রশাসনিক পদকে। সেক্ষেত্রে প্রশাসনিক আমন্ত্রণ সম্মান জানাতেই আব্দুল মান্নান সেখানে গেছেন। এর মধ্যে রাজনীতি খুঁজতে যাওয়া অর্থহীন! বিরোধিতা, সবসময় গঠনমূলক হওয়া উচিত – আর সেটাই করছেন মান্নান সাহেব।

তাঁদের আরও বক্তব্য, আব্দুল মান্নান যেমন তৃণমূল বিরোধী অবস্থানে ছিলেন – তা একচুলও বদলায় নি। উদাহরণ স্বরূপ, কিছুদিন আগেই তিনি সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে দেখা করেন, তৃণমূল ও বিজেপি – উভয় শক্তিকে রাজ্যে আটকানোর জন্য সরকারি স্তরে বামফ্রন্টের সঙ্গে জোট করার জন্য আলোচনা সেরে এসেছেন। যদি তৃণমূলেই যাওয়ার হয়, তাহলে এত কাঠখড় পড়াতে যাবেন কেন তিনি? তাছাড়া, তিনি তো ঘোষিতভাবেই বলেছেন, এই বয়সে এসে যদি কংগ্রেস ছাড়তে হয়, তার থেকে ভালো তিনি রাজনীতি থেকেই সন্ন্যাস নিয়ে নেবেন – তাহলে এত বিতর্ক কেন? তাদের আরো দাবি মান্নান সাহেব কি বলেছেন যে তিনি কংগ্রেস ছাড়ছেন ? শুধু মুধু গল্পের গরুকে গাছে তুলছে লোকজন।

এদিকে এত কিছু কথার পরেও কিন্তু জল্পনা ছাড়ছে না বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতার পদক্ষেপ নিয়ে। কেননা রাজনৈতিকমহলের দাবি দলবদল যে দিন করছেন নেতারা সেদিন স্বীকার করছেন না যে তারা দলবদল করছেন। অন্য দলের পতাকা নিয়ে বলছেন যে দলবদল করলাম। আর সেই কারণেই সবমিলিয়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতাকে নিয়ে শুরু হয়েছে চূড়ান্ত জল্পনা। যদিও যাঁকে নিয়ে এত বিতর্ক সেই মান্নান সাহেব এখনো পর্যন্ত এই নিয়ে মুখ খোলেন নি। এখন দেখার তিনি এই নিয়ে কি বলেন।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!